দিন দিন বৈরী হয়ে উঠছে আবহাওয়া। কখনো তীব্র খরা আবার অতিবৃষ্টিতে বীজতলা নষ্ট হয়ে ব্যহত হয় চারা উৎপাদন। এতে মৌসুমী সবজি ও ফল আবাদে পিছিয়ে পড়ে চাষিরা। এসকল ঝামেলা এড়াতে পাবনার দাপুনিয়া ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকায় বিজ্ঞানভিত্তিক পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদন করে সফলতা পেয়েছেন কৃষক আনিসুর। প্রাকৃতিক বিপর্যয় এড়িয়ে রোগ বালাই মুক্ত এসব চারাতে ভালো ফলন পাওয়ায় সফল উদ্যোক্তা হয়ে উঠেছেন তিনি। নিজ জমিতে চাষের পাশাপাশি চারা বিক্রি করেও বেশ লাভবান হচ্ছেন এই উদ্যোক্তা।
গ্রিনহাউসের আদলে তৈরি এ দেশীয় কৃষি ব্যবস্থাপনায় আবহাওয়া নিয়ন্ত্রণ, রোগ-বালাই প্রতিরোধ, বীজতলার মান নিয়ন্ত্রণ ও অমৌসুমে উচ্চমূল্যের ফসল চাষে যুগান্তকরী আবিষ্কার এই ‘পলিনেট হাউজ’ পদ্ধতি। এর ব্যবহারে ভারী বৃষ্টি, তীব্র তাপদাহ, কীটপতঙ্গ, ভাইরাসজনিত রোগের মতো প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও নিরাপদ থাকে চারা উৎপাদন। পলিনেট হাউজে নিয়ন্ত্রিত তাপমাত্রায় মাটি ও নারিকেল খোসায় তৈরী কোকো পিট টবে উৎপাদিত চারার গুণগত মান ভালো হওয়ায় ফলন বৃদ্ধিতে লাভবান হচ্ছে কৃষক। ফলে এসব চারার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের।
পলিনেট হাউজে চারা উৎপাদনকারী সফল উদ্যোক্তা আনিসুর রহমান জানান, রোগ বালাই মুক্ত এসব চারাতে ভালো ফলন হওয়ায় নিজ জমিতে চাষের পাশাপাশি বিক্রি করেও বেশ লাভবান হচ্ছেন তিনি। তিনি আরও জানান, পলিনেট হাউজে উন্নত মানের পলি ওয়ালপেপার ব্যবহার করায় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি ভেতরে প্রবেশ করতে পারে না। এ কারণে ফসল নষ্টও হয় না। এছাড়াও ক্ষতিকর কোন পোকা-মাকড় আক্রমণ করতে না পারায় পলিনেট হাউজে কোন কিটনাশক ব্যবহার করতে হয় না তার। যার ফলে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন করা যায় বলে জানান তিনি।
পাবনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. জামাল উদ্দীন বলেন, পলিনেট হাউজে ফসলের উৎপাদন সনাতন পদ্ধতির চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি, পোকামাকড়ের আক্রমণ হয় ৭০ শতাংশেরও কম। প্রাথমিক খরচ কিছুটা বেশি হলেও এতে উৎপাদন খরচ খুবই কম হওয়ায় দীর্ঘমেয়াদে লাভবান হন কৃষকেরা।