মারা গেছেন প্রেম ও বিপ্লবের কবি হেলাল হাফিজ (ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্নইলাহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৬ বছর।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সুপার হোম নামে শাহবাগের একটি হোস্টেলে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। হেলাল হাফিজ দীর্ঘদিন ধরে গ্লুকোমায় আক্রান্ত ছিলেন। পাশাপাশি কিডনি জটিলতা, ডায়াবেটিস ও স্নায়ু জটিলতায় ভুগছিলেন।
চলচ্চিত্র নির্মাতা শবনম ফেরদৌসী বার্তা২৪.কম’কে হেলাল হাফিজের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শবনম ফেরদৌসী বলেন, কবি হেলাল হাফিজ শাহবাগের যে হোস্টেলে থাকেন সেখানে তাকে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়।। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় আনা হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
১৯৪৮ সালের ৭ অক্টোবর নেত্রকোণায় হেলাল হাফিজের জন্ম।
১৯৬৭ সালে নেত্রকোনা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। উত্তাল ষাটের দশক হয়ে ওঠে তার কবিতার উপকরণ।
১৯৬৯ সালে গণঅভ্যুত্থানের সময় রচিত ‘নিষিদ্ধ সম্পাদকীয়’ কবিতাটি তাকে কবিখ্যাতি এনে দেয়। তার কবিতা হয়ে উঠেছিল মিছিলের স্লোগান।
‘এখন যৌবন যার, মিছিলে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়/ এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ কালজয়ী কবিতার এ লাইন দুটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। পরবর্তীতে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলেন সময়ও কবিতাটি মানুষের মাঝে তুমুল সাড়া জাগায়।
১৯৮৬ সালে প্রকাশিত প্রথম কবিতাগ্রন্থ ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ কবিকে নিয়ে যায় জনপ্রিয়তার শীর্ষে। এরপর বইটির ৩৩টির বেশি সংস্করণ বেরিয়েছে। দীর্ঘসময় নিজেকে অনেকটা আড়ালে সরিয়ে নিয়েছিলেন হেলাল হাফিজ।
আড়াই দশক পর ২০১২ সালে তিনি পাঠকদের জন্য আনেন দ্বিতীয় বই ‘কবিতা ৭১’। তৃতীয় এবং সর্বশেষ বই ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদোনা’ প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালে।
দেশে খ্যাতি পাওয়া কবিদের মধ্যে অন্যতম হেলাল হাফিজ সাহিত্যে ২০১৩ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান। তার আগে খালেকদাদ চৌধুরী পুরস্কারসহ নানা সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
নিঃসঙ্গ হেলাল হাফিজের জীবন গত এক দশক ধরেই কাটছিল হোটেলে হোটেলে।