ফ্রি টিকেটের কৌশলে যাত্রী ধরছে ইথিওপিয়ান এয়ার

, অর্থনীতি

ইশতিয়াক হুসাইন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-28 19:48:01

আফ্রিকার ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্স ঢাকা থেকে আকাশপথের যাত্রী ধরতে অভিনব মার্কেটিং কৌশল হাতে নিয়েছে। এই কৌশলের অংশ হিসেবে ফ্রি টিকেট, অফারে টিকেট বিক্রি করছে।

এয়ারলাইন্সটি বলছে, ঢাকা থেকে তাদের যেসব গন্তব্য রয়েছে, সেসব গন্তব্যের জন্য একটি টিকেট কিনলে একটি ফ্রি টিকেট দেওয়া হবে। এই অফারটি ৩ নভেম্বর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।

ঢাকায় তাদের রুট সম্প্রসারণ দক্ষিণ এশিয়ায় উপস্থিতি শক্তিশালী করার বৃহত্তর কৌশলের অংশ। দক্ষিণ এশিয়ার এরই মধ্যে বেঙ্গালুরু, চেন্নাই, দিল্লী, মুম্বাই ও করাচিতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে তারা।

ঢাকা থেকে প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে ৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করবে। পরবর্তীতে চাহিদা বাড়ার সাথে সাথে ফ্লাইট বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

ইথিওপিয়ান এয়ারলাইন্সের বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়াহান্নেস বেকেলে বলছেন, ঢাকা থেকে ইথিওপিয়ার আদ্দিস আবার এই রুটটি বাংলাদেশি প্রবাসীদের জন্য সুবিধাজনক সংযোগ প্রদান করবে। আদ্দিস আবাবার মাধ্যমে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার প্রধান শহরগুলোতে সাশ্রয়ী ভাড়ায় পৌছানোর সুযোগ তৈরি করেছে তারা। তারা বোয়িং ৭৮৭ ড্রিমলাইনার দিয়ে সেবা পরিচালনা করবে সেটাও প্রচার করছে।

বিমানের এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কমকে বলেন, ইথিওপিয়ান আফ্রিকার ও বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ এয়ারলাইন্স। তাদের বহরে ১৪৭টি উড়োজাহাজ রয়েছে। আফ্রিকার ৬৩টি রুট ছাড়াও বিশ্বের ১৫০টি রুটে তারা ফ্লাইট পরিচালনা করে থাকে। এ ধরনের একটি বৃহৎ এয়ারলাইন্স যার সক্ষমতার কাছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বা দেশের বেসরকারি কোনো এয়ারলাইন্সের সাথে প্রতিযোগিতা করার কথা চিন্তাও করা যায় না। সুতরাং এ ধরনের একটি এয়ারলাইন্সকে বাংলাদেশের মার্কেটে প্রবেশ করতে দেওয়ার অর্থই হচ্ছে বিমানকে একটি অসম প্রতিযোগিতায় ঠেলে দেওয়া।

‘এভাবে বছরের পর বছর বিশ্বের বৃহৎ সব এয়ারলাইন্সের সাথে বিমানকে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। ৮০ দশকেও ঢাকা থেকে বিভিন্ন বিদেশি গন্তব্যে যে যাত্রী পরিবহন হতো তার ৭৫ শতাংশের বেশি যাত্রী বিমান পরিবহন করতো। আর এখন বিমান, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স মিলিয়ে ২৫ শতাংশ। যেভাবে একের পর এক বিদেশি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক থাকা এয়ারলাইন্সসমূহকে ঢাকা থেকে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে, তাতে খুব শিগগির বিমান ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের যে ২৫ শতাংশ মার্কেট রয়েছে তাও ধরে রাখা সম্ভব হবে না।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল বিশেষজ্ঞ এটিএম নজরুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, যখন দুটি দেশের মধ্যে এয়ার সার্ভিসেস এগ্রিমেন্ট স্বাক্ষর হয়, তখনই কোন দেশ কতগুলো ফ্রিকোয়েন্সি পাবে তা চুড়ান্ত হয়। এ ধরনের চুক্তি স্বাক্ষরের সময়ই এই চুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ কিভাবে লাভবান হতে পারে সেই বিষয়টি তখনই চুক্তির ধারায় উল্লেখ থাকতে হয়।

‘যে এগ্রিমেন্টই হোক না কেন, দেশের স্বার্থ বিশেষ করে দেশীয় এয়ারলাইন্সগুলোর স্বার্থকে অবশ্যই প্রাধান্য দিতে হবে। নতুবা আপনি এই চুক্তির মাধ্যমে কিছুই পাবেন না। তাই যারা এই চুক্তি স্বাক্ষরের সাথে জড়িত তাদেরকে বিমান চলাচল বিষয়ে যথেষ্ঠ জ্ঞান থাকা চাই। তা না হলে এই ধরনের নেগোসিয়েশনে আপনি হেরে যাবেন। আপনি হেরে যাওয়া মানে বাংলাদেশই হেরে যাওয়া,’ যোগ করেন তিনি।

Related News