জ্বালানি সংকটের কারণে গাজার সব হাসপাতালের সেবা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সতর্ক করে জানায়, ইসরায়েলের অবরোধ ও বোমাবর্ষণের কারনে গাজার সব অঞ্চলের হাসপাতালগুলোর সেবা আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বন্ধ করে দেয়া হবে। ইসরায়েল যদি তাদের কার্যক্রম না থামায় তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছাবে।
গাজার ফিল্ড হাসপাতালের পরিচালক মারওয়ান আল-হামস এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, "সকলের উদ্দেশে আমরা একটি জরুরী সতর্ক বার্তা দিচ্ছি। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে গাজা উপত্যকার সব হাসপাতালের পরিষেবা বন্ধ করে দেয়া হবে। এর কারণ হচ্ছে ইসরায়েল এ অঞ্চলে জ্বালানি প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। তাদেরকে এসব থামাতে হবে।"
জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে এক প্রতিবেদনে, গাজার উত্তরাঞ্চলের মানুষ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে বলে সতর্ক করেছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য নিযুক্ত জাতিসংঘের ত্রাণ কার্যক্রম সংস্থার (ইউএনআরডব্লিউএ'র) প্রধান ফিলিপ লাজারিনি।
তিনি জানান, অঞ্চলটিতে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে না। এই অঞ্চলে গড়ে প্রতিদিন ৩০ ট্রাক খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। যা বাসিন্দাদের বেঁচে থাকার জন্য যথেষ্ট নয়। এই পরিমাণ ত্রাণ দৈনিক চাহিদার মাত্র ৬ শতাংশের বেশি। ইসরায়েল তাদেরকে খাদ্যসহ মৌলিক অধিকারগুলো থেকে বঞ্চিত করছে। ত্রাণ কার্যক্রমে তারা বাধা দিচ্ছে।
এর আগে জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাটি জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতদের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে। এতে গাজার মানুষের "ভয়াবহ বাস্তবতা" উন্মোচিত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৭০ শতাংশই নারী ও শিশু।
জাতিসংঘ বলছে, প্রতিনিয়ত ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নারী ও শিশু নিহত হচ্ছে। পুরুষও বাদ যাচ্ছে না। শুধু তাই নয় তারা ত্রাণ কার্যক্রম চালাতেও সেখানে বাধা দিচ্ছে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সামগ্রী সরবরাহেও বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে অঞ্চটির মানুষ চরম হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে চলমান ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৪ হাজার ৫৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৪ হাজার ২৮৬ জন।