মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর অনন্য নিদর্শন সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার প্রবাজপুর শাহী মসজিদ। ১৬৯৩ খ্রিস্টাব্দের ২ মে (১১০৪ হিজরির ১৯ রমজান) নির্মাণের পর থেকে এখনও প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদে জামাতের সঙ্গে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।
জনশ্রুতি আছে, জিনেরা জঙ্গল কেটে রাতারাতি মসজিদটি নির্মাণ করেছিল। আবার অনেকেই বলেন, মাটির নিচ থেকে উঠেছিল মসজিদটি।
উইকিপিডিয়ার মতে, মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব মুসলমান সৈন্যদের পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার জন্য সুবেদার পরবাজ খাঁকে একটি মসজিদ নির্মাণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। যা তার নাম অনুসারে প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদ নামে পরিচিত।
এক ফার্সি পরোয়ানা থেকে জানা যায়, মসজিদটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সম্রাট আওরঙ্গজেবের সময় তার ফৌজদার নবাব নুরুল্লাহ খাঁ ৫০ একর জমি দান করেছিলেন। কিন্তু বর্তমানে মসজিদের দখলে মাত্র তিন একর জমি রয়েছে।
এদিকে সংস্কারের অভাবে প্রায় সাড়ে তিনশ’ বছর আগে নির্মিত প্রবাজপুর শাহী মসজিদ দিন দিন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে। খসে পড়ছে দেয়ালের ইট।
দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটির বহির্বিভাগের দৈর্ঘ্য ৫২ ফুট ৫ ইঞ্চি এবং প্রস্থ ৩৯ ফুট ৮ ইঞ্চি। মসজিদটির অভ্যন্তরে ২১ ফুট ৬ ইঞ্চির বর্গাকৃতির একটি নামাজের জায়গা রয়েছে। মসজিদের দেয়ালগুলো ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি থেকে ৭ ফুট পুরু। আর মসজিদের প্রধান দরজাটি ৪ ফুট ৭ ইঞ্চি প্রশস্ত। মসজিদটিতে ৬ ফুট ৯ ইঞ্চি প্রশস্ত একটি বারান্দা ছিল যা এখন আর নেই।
প্রবাজপুর শাহী জামে মসজিদের সভাপতি মাখলুকাত হোসেন জানান, মসজিদটির অধিকাংশ জমি বেদখল হয়ে গেছে। এমনকি মসজিদের মূল ভবনের জমিও জালজালিয়াতি করে রেকর্ড করে নেওয়া হয়েছে। এটি নিয়ে মামলা চলছে হাইকোর্টে।
তিনি বলেন, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মসজিদটি পুরাকীর্তি হিসেবে সংরক্ষিত ঘোষণা দেওয়ার পর একবার সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তখন কুমিল্লা ও দিনাজপুর থেকে লোক এনে ইট কেটে মসজিদের দেয়ালের নকশার মতো নকশা তৈরি করে বসানো হয়েছিল। তারপর থেকে আর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।