আরবি হজ শব্দের অর্থ কোনো মহৎ কাজের ইচ্ছা করা। হজের নিয়তসহ ইহরাম ধারণ করে নির্দিষ্ট দিনে আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করা এবং কাবা শরিফ তাওয়াফ করাকে হজ বলে। -ফাতাওয়ায়ে শামি : ২/৪৫৪
আর আরবি উমরা শব্দের অর্থ পরিদর্শন করা। উমরার নিয়তে ইহরাম ধারণ করে পবিত্র কাবা তাওয়াফ ও সাফা-মারওয়া সায়ি করে মাথা কামিয়ে ইহরামমুক্ত হওয়াকে উমরা বলে। -ফাতহুল বারি : ৩/৫৯৭
হজের ফজিলত
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য হজ করে এবং অশ্লীল ও গুনাহর কাজ থেকে বেঁচে থাকে, সে নবজাতক শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে যায়। আর মকবুল হজের পুরস্কার জান্নাত ছাড়া অন্য কিছুই নয়।’ -সহিহ বোখারি : ১/২০৬
হজ না করার পরিণতি
হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘হজ ফরজ হওয়ার পর তা আদায় না করে মৃত্যুবরণ করা ইহুদি বা খ্রিস্টান হয়ে মৃত্যুবরণ করার নামান্তর।’ -জামে তিরমিজি : ১/১৬৭
হজের সময় ও নির্ধারিত স্থান
হজের নির্দিষ্ট সময় শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের প্রথম ১০ দিন। বিশেষত ৮ থেকে ১২ জিলহজ পর্যন্ত পাঁচ দিন। এই পাঁচ দিনই মূলত হজ পালন করা হয়। হজের নির্ধারিত স্থান কাবা শরিফ, সাফা-মারওয়া, মিনা, আরাফাতের ময়দান ও মুজদালিফা।
হজের প্রকারভেদ
ইফরাদ: শুধু হজের নিয়তে ইহরাম ধারণ করে ওই ইহরামেই হজের কাজসমূহ সম্পন্ন করা।
তামাত্তু: শুধু উমরার নিয়তে ইহরাম ধারণ করে উমরার কাজ সমাপ্ত করে মাথা মুণ্ডন করে ইহরাম থেকে মুক্ত হওয়া। অতঃপর ওই সফরেই হজের নিয়তে ইহরাম বেঁধে হজকার্য সম্পাদন করা।
কিরান: একসঙ্গে উমরা ও হজের নিয়তে ইহরাম ধারণ করে ওই একই ইহরামে উমরা ও হজ পালন করা। এই তিন প্রকারের মধ্যে উত্তম হলো- কিরান। কিন্তু ইহরাম দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞাবলি সঠিকভাবে মেনে চলতে না পারার আশঙ্কা থাকলে হজে তামাত্তুই উত্তম। -ফাতাওয়া শামি : ২/৫২৯
হজে আকবর কী
জুমার দিনের হজকে হজে আকবর বলা হয়। এটা সাধারণ মানুষের পরিভাষা। কোরআনে কারিমে হজে আকবর শব্দটি উমরার বিপরীতে ব্যবহৃত হয়েছে। ফিকাহর গ্রন্থ রদ্দুল মুহতারে জুমার দিন হজ হলে (আরাফাতের ময়দানে অবস্থান) ৭০ গুণ বেশি সওয়াব হওয়ার কথা বলা হয়েছে। তাবরানিতে বর্ণিত এ সংক্রান্ত হাদিসের বিশুদ্ধতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। -ফতোয়ায়ে দারুল উলুম : ৬/৫৪৩
বায়তুল্লাহ দেখলেই কি হজ ফরজ হয়
যে ব্যক্তি নিজে হজ করেনি, তার জন্য বদলি হজ করা মাকরুহ তথা অনুত্তম। আর এমন ব্যক্তি যখন কাবা শরিফে পৌঁছে, কাবাঘর দেখে তার জন্য হজ ফরজ হয় না। কারণ বদলি হজ পালনকারী অন্যের ইহরাম বাঁধা অবস্থায় থাকে। -ইমদাদুল আহকাম : ২/১৯৯