ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা: রাজবাড়ীতে বেকার হচ্ছেন ৫৫১৩ জেলে

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2024-10-12 21:59:23

১৩ অক্টোবর মধ্যরাত থেকে ২২ দিনের জন্য বন্ধ হতে যাচ্ছে ইলিশ ধরা। ইলিশ মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে ২ নভেম্বর পর্যন্ত। ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ রক্ষায় ১৩ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর এই ২২ দিন পদ্মা নদীতে মাছ ধরতে পারবে না জেলারা। মা ইলিশ রক্ষায় কঠোর অভিযান চালানো হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন মৎস্য বিভাগ।

এ সময় মাছ ধরা, পরিবহন, বিপণন ও সংরক্ষণ সম্পন্ন নিষিদ্ধ থাকবে। ফলে রাজবাড়ীর চারটি উপজেলায় বেকার হয়ে পড়বে ৫ হাজার ৫১৩ জন জেলে। তবে মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সংকট দূরীকরণে নিবন্ধিত জেলেদের দেওয়া হবে ২৫ কেজি করে চাউল।


জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে আরো জানা গেছে, জেলার চারটি উপজেলার ইলিশ আহরণে সম্পৃক্ত মোট জেলের সংখ্যা ৫ হাজার ৫১৩ জন। এর মধ্যে সদরে ২ হাজার ৫৯০, গোয়ালন্দে ২ হাজার ১৫১, কালুখালীতে ৩২৪ ও পাংশায় ৪৪৮ জন জেলে ইলিশ মাছ ধরার সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে।

জেলায় ইলিশ আহরণের সাথে সম্পৃক্ত বরাদ্দপ্রাপ্ত জেলে পরিবারের সংখ্যা ৪ হাজার ৬৯০ জন। মৎস্য বিভাগের তালিকাভুক্ত জেলেদের জন্য জেলায় বিতরণ করা হবে ১১৭.২৫ মেট্রিক টন চাউল। তালিকাভুক্ত প্রত্যেক জেলেকে দেওয়া হবে ২৫ কেজি করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ইলিশ মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা জারি করায় চরম বিপাকে পড়বে গোয়ালন্দের পদ্মা পারের জেলেরা। একে তো নদী ভাঙন, অন্যদিকে মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা। সবকিছু মিলে এ সকল জেলেদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়বে। এদের অনেকেই আবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নেওয়া আছে। মাছ ধরতে না পারায় তারা কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে হিমসিম খেতে হবে।


দৌলতদিয়া ঘাটের একাধিক জেলে বলেন, ইলিশ ধরা ২২ দিন নিষেধ। এসময় এনজিওর কিস্তির টাকা আদায় যদি বন্ধ থাকতো, তাহলে কিছুটা হলেও ভালো হতো। সরকারের দেওয়া ২৫ কেজি চাউলে আমাদের কিছুই হয় না। দ্রব্যমূল্যের যে দাম আমরা এই ২২ দিন কিভাবে পরিবার-পরিজন নিয়ে বেঁচে থাকব সেটাই ভাবছি।

দৌলতদিয়া নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক(এসআই) মোঃ ছগির মিয়া বলেন, ইলিশ মাছ ধরা নিষিদ্ধের সময় আমরা নিয়মিত নদীতে অভিযান চালাব। নিষিদ্ধ সময়ে ইলিশসহ কোনো মাছ যাতে কেউ ধরতে না পারে ও নদীতে নামতে না পারে সেজন্য আমাদের টিম সার্বক্ষণিক টহলে থাকবে। আমরা ঘাটে ঘাটে জেলেদের মাছ ধরা থেকে বিরত রাখতে সচেতনতামূলক সভা এবং লিফলেট বিতরণ করেছি।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, ইলিশ অভিযান সফল হলে নদীতে ইলিশের উৎপাদন বেড়ে যাবে। সাময়িক অসুবিধা হলেও এতে সবাই পরবর্তীতে ব্যাপক সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাই অভিযান সফল করতে আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।

Related News