ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’: বাগেরহাটে প্রস্তুত ৩৫৯ আশ্রয়কেন্দ্র

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট | 2024-10-24 14:10:41

ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোকাবিলায় উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। দুর্যোগ মোকাবিলায় প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র, স্বেচ্ছাসেবক ও শুকনো খাবার।

ঝড়ের প্রভাব বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত থেকে জেলায় থেমে থেমে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। সকাল থেকে আকাশ মেঘলা, হাওয়ার গতি কিছুটা বেড়েছে। মাঝে মাঝে তা দমকা হাওয়ার সঙ্গে মাঝারি বৃষ্টিতে রূপ নিচ্ছে।

জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান বলেন, “ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সাধারণ মানুষকে আশ্রয় দিতে জেলার ৩৫৯টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে দুই লাখ ৬ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবেন।

এছাড়া উপকূলীয় এলাকার মানুষদের নিরাপদে সরিয়ে নিতে আড়াই হাজারের বেশি রেডক্রিসেন্ট ও সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত করেছে জেলা প্রশাসন। প্রস্তুত রাখা হচ্ছে শুকনা খাবার। নগদ টাকা ও চাল মজুদ রাখা হয়েছে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অধিদফতর। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ হারবার মাস্টার কমান্ডার সাইফুর রহমান ভূইয়া বলেন, বন্দরে অবস্থানরত ২টি জাহাজে চীন থেকে আমদানি হওয়া সার খালাস বন্ধ রয়েছে।

এছাড়া আরও ৫টি জাহাজে বৃষ্টির কারণে পণ্য খালাস ব্যাহত হচ্ছে। পণ্য খালাস বন্ধ থাকা জাহাজ ২টি হচ্ছে , চীনা পতাকাবাহী 'গ্রেড বিউটি' এবং হংকং পতাকাবাহী 'হুয়া ইয়ং মেই গুই'। বুধবার থেকে আবহাওয়া অফিসের সঙ্গে মিল রেখে তাদের নিজ্বস্ব অ্যার্লাট-১ জারি করেছে। আবহাওয়া অফিস যখন তাদের সিগন্যাল বাড়াবে তখন মোংলা বন্দর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে বন্দরের নিজস্ব টুইন জাহাজ, পানির বোর্ড, ও পাইলট বোর্ডগুলো জেটিতে নিরাপদে রাখা হয়েছে। এছাড়া বন্দর কর্তৃপক্ষে একটি কন্ট্রোল রুম (নিয়ন্ত্রণ কক্ষ) খোলা হয়েছে।

জেলা মৎস্যজীবী সমিতির নেতা শেখ ইদ্রিস আলী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা কূলে ফিরতে শুরু করেছে। জেলেরা আগের থেকে এখন অনেক সচেতন। তবে এই জেলেরা যখন গভীর সমুদ্রে থাকে তখন হঠাৎ কোনো দুর্যোগ আসলে তারা কোনো খবর পায় না। তাই সাগরে মাছ ধরা জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগের আধুনিক ব্যবস্থা করতে সরকারের কাছে দাবি জানান এই মৎস্যজীবী নেতা।

বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, জেলায় ৩৩৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা ৩৫/১ পোল্ডারের ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের কাজ হয়েছে। এই ৬৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের দুই কিলোমিটার ঝুঁকিতে রয়েছে।“এছাড়া অন্য পোল্ডারগুলোর বেশ কিছু পয়েন্ট ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা সেগুলোর জন্য পর্যাপ্ত জনবল ও জিওব্যাগ প্রস্তুত রেখেছি।”

এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাফর রানা জানান, মোংলা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মেডিকেল টিম গঠন, ফায়ার সার্ভিস প্রস্তুত, কোস্ট গার্ডকে প্রস্তুত, শুকনা খাবার প্রস্তুত ও ১০৩ টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রেখে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। একই সকল সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। 

Related News