সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ ও ক্ষেত্র বিশেষ উন্মুক্তের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন ৩৫ প্রত্যাশি শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই অবস্থান কর্মসূচী পালন করেন শিক্ষার্থীরা। গত ৩০ অক্টোবর চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির শান্তিপূর্ন কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশের লাঠিচার্জ, জলকামান ব্যবহার এবং ১৭ জন আহত করার প্রতিবাদে 'মার্চ ফর প্রোটেস্ট' ব্যনারে 'নূন্যতম ৩৫ ও উন্মুক্ত বয়সসীমা প্রত্যাশী শিক্ষার্থীবৃন্দ' এই অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা এই সরকারকে বলতে চাই আমাদের সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৩৫ এবং ক্ষেত্র বিশেষ উন্মুক্ত করতে হবে। আমরা এই সরকারকে বলতে চায় যদি আপনারা চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা নিয়ে আবারও ছিনিমিনি খেলেন তাহলে আপনারা কিন্তু দেখেছেন বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের কি হয়েছিল। আমরা কিন্তু জীবন বাজী রেখে আপনাদের এখানে বসিয়েছি। আমরা কিন্তু আওয়ামী লীগের চামচামি করিনি কখনও। আমরা সবসময় ন্যয়ের পক্ষে ছিলাম। আমরা যদি স্বৈরাচারকে হটিয়ে আপনাকে বসাতে পারি, তাহলে আপনারাও মনে রাখবেন আমরা অন্যকেও বসাতে পারি।
এই সরকার হলো আমাদের রক্তের এবং ঘামের সরকার। আমরা দিনের পর দিন রাতের পর রাত এই রাজপথে দাড়িয়েছি। আমরা সবাই কিন্তু বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের যোগ দিয়েছি। আমরা আহত হয়েছি আমরা জীবন বাজী রেখে এই রাজপথে লড়েছি স্বৈরাচাররকে পতনের জন্য। যে বৈষম্য করেছিলো আওয়ামী লীগ সরকার তারা নির্বাচনী ইশতেহারে ৩৫ এর কথা বলে তারাা তাদের কথা রাখেনি। তখনই আমরা বলেছিলাম এই স্বৈরাচার সরকারের পতন করা দরকার।
টানা ১২ বছর আন্দোলন করেছেন জানিয়ে তারা বলেন, আমাদের এই আন্দোলন ২০১২ সালে ২৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়েছিলো। টানা ১২ বছর আমাদের এই আন্দোলন এখনও সফল হইনি। সারা বিশ্বের ইতিহাসে ১২ বছর কোন আন্দোলন হয়েছে বলে আমাদের মনে হয় না। সেই আন্দোলন এখনও বাস্তবায়ন হচ্ছে না কেনো? আমরা সরকারকে বলতে চাই আপনারা কি নাটক করার জন্য কমিশন গঠন করেছিলেন? আপনারা একবার বললেন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ এবং নারীদের ৩৭। আপনারা কি স্বৈরাচার এরশাদ সরকার যেমন দিনে এক কথা, বিকালে আরেক কথা বলতো আপনারাও কি এরশাদ সরকার বা জাতীয় পার্টির মতন হয়ে গেলেন কিনা যে দিনে এক কথা রাতে আরেক কথা বলেন।
আন্দোলনকারীরা আরও বলেন, আপনারা দেখেছেন ৩০ অক্টোবর আমরা শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাবেশ বাস্তবায়ন করছিলাম। আমাদের এই সমাবেশটি রাজু ভাস্কার্য থেকে শিক্ষা ভবন পর্যন্ত যেতেই সেই সৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের মতন তারা আমাদের হামলা করেছে। আমাদের ১৭ জন ভাইকে আহত করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। আমরা বলতে চাই অনতি বিলম্বে চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা সর্বনিম্ন ৩৫ এবং শর্তসাপেক্ষে উন্মুক্ত করতে হবে।
৩৫ প্রত্যাশী অন্য এক আন্দোলনকারী বলেন, এই রাষ্ট্রকে সুন্দর ভাবে গড়তে হলে এই যুব সমাজকে সাথে নিয়ে গড়তে হবে। যুব সমাজকে সাথে না নিয়ে রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব না।
যুব সমাজ ছাড়া কিন্তু কোন সরকার টিকে থাকতে পারেনি জনিয়ে আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছি কারন আমরা মনে করেছি এই স্বৈরাচার সরকারের পতন হলে আমাদের ৩৫ প্রত্যাশিদের দাবি পূরন হবে। কিন্তু আজও আমাদের দাবি পূরণ হচ্ছে না। বর্তমান সরকারকে মনে রাখতে হবে আজ তরুন সমাজের দাবি পূরণ হলে এই যুব সমাজ দেশ সংস্কারে হাত লাগাবে। আমরা বলতে চাই আপনারা যে সংস্কার প্রক্রিয়ায় সমাজ গড়ছেন সেই সমাজ গড়ার প্রক্রিয়া যুব সমাজ ছাড়া সম্ভব না। এই যুব সমাজ ছাড়া কিন্তু কোন সরকার টিকে থাকতে পারেনি।