বগুড়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সক্রিয় সদস্য আলী হোসেন সৌরভকে (১৯) পিটিয়ে হত্যার সাথে জড়িত আসামিরা অধরা। পুলিশ বলছে আসামিদের পাওয়া যাচ্ছে না, আর সৌরভের বাবা বলেছেন আসামিদেরকে এলাকাতেই ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।
গত ২ নভেম্বর রাতে চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করায় স্থানীয় সন্ত্রাসীরা সৌরভকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে যায়। হাসপাতালে ভর্তির আগেই তার মৃত্যু হয়। সৌরভ টিএমএসএস টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংএর ছাত্র ছিল। তিনি বগুড়া সদরের ঠেঙ্গামারা গ্রামের ট্রাক চালক আব্দুল মমিন সাকিদারের ছেলে।
সৌরভের সহপাঠিরা জানান, জুলাই মাসে ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে সৌরভের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছিল। ৫ আগস্ট পট পরিবর্তন হলে এলাকায় নতুন কিছু চাঁদাবাজের আবির্ভাব হয়। তারা বিভিন্ন ছাত্রাবাসে চাঁদা আদায় শুরু করে। সৌরভ চাঁদাবাজীর প্রতিবাদ করতে শুরু করে। একারনে তার উপর ক্ষুদ্ধ হয় স্থানীয় চাঁদাবাজরা। গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ১০টার দিকে সৌরভকে ডেকে নিয়ে যায় ওই চাঁদাবাজেরা। আধাঘণ্টা পর তারাই মোবাইল ফোনে খবর দেয় সৌরভ গুরুতর অসুস্থ। ওই চাঁদাবাজেরাই মটরসাইকেল যোগে সৌরভকে টিএমএসএস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
সৌরভের বাবা মমিন সাকিদার বলেন, হাসপাতালের সামনে ট্রেচারে আমার ছেলেকে মৃত অবস্থায় পাই। সৌরভের মাথাসহ শরিরের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ফোলা জখম ছিল । পরে পুলিশকে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। পরদিন ছয় জনের নামে বগুড়া সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি। এরপর বারবার থানায় ঘুরলেও পুলিশ বলছে আসামি পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ আসামিদেরকে রাতের বেলা এলাকায় মটর সাইকেলে ঘুরতে দেখা যায়।
সৌরভের সাথে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেয়া রিফাত এবং মেহরাজ বলেন, সৌরভ ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্রাবাসে চাঁদাবাজির প্রতিবাদ করে আসছিল। যার কারণে তাকে কৌশলে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলেন আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে আমরা এলাকায় মানববন্ধন করেছি, আসামিদের ছবি দিয়ে পোস্টারিং করেছি। কিন্তু পুলিশ আসামি গ্রেফতারে তৎপর হচ্ছে না।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মঈনুদ্দিন বলেন, আসামি গ্রেফতারে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। তারা এলাকায় নেই। পুলিশ বিভিন্ন কৌশলে চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। শীঘ্রই আসামি গ্রেফতার হবে।