ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আমাদের দেশ নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের দেশ নিয়ে ভারতের পার্লামেন্টে আলোচনা হবে কেন? আমরা কি স্বাধীন দেশের নাগরিক নয়? হিন্দুরা এদেশের নাগরিক তাদের ভালোমন্দ আমরা দেখবো। এটা নিয়ে অন্যদেশে আলোচনা হবে কেন?
শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে ঐতিহাসিক চরমোনাই মাহফিল ময়দানে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত ছাত্র গণজমায়েতে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এ কথা বলেন চরমোনাই পীর।
তিনি বলেন, দেশের এই পরিস্থিতিতে সকল দল জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করতে হবে। খুনী ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসলাম দেশ ও মানবতার পক্ষে আওয়াজ তুললে বাতিল পালাতে বাধ্য হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই আরো বলেন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সাহাবাদের অনুসরণ। রুহানিয়াত ও জেহাদের সমন্বিত প্রয়াস ছাড়া বিজয় সম্ভব নয়। বিজয় অর্জন করতে হলে অবশ্যই সাহাবাদের অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তাঁর রাসূল কে যেই নীতি ও আদর্শ নিয়ে পাঠিয়েছেন এই নীতি ও আদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আপনি যদি এই নীতি আদর্শকে বিশ্বাস করেন তবে আপনার সন্তানকে ইসলামী ছাত্র আন্দোলনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
গণজমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, যারা দখলবাজি করছে এরা আধা পাগল। এদের চিকিৎসার জন্য একটি মেন্টাল হসপিটাল তৈরি করা জরুরী। তবে এসব রাজনীতিবিদরা সুস্থ হয়ে দেশ কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে।
গণজমায়েতে প্রদত্ত বক্তব্যে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, একটি সরকার পরিবর্তন করা সহজ হলেও আদর্শ ভিত্তিক কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা তত সহজ নয়। এজন্য আদর্শবান সচ্চরিত্রবান প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে। মেধাবীদেরকে ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে আনতে আমরা বদ্ধপরিকর।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ এর কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল বশর আজিজীর সভাপতিত্বে গণজমায়েতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দীন, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি নেছার উদ্দীন, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট বরকত উল্লাহ লতিফ, অ্যাডভোকেট হাছিবুল ইসলাম, জিএম রুহুল আমীন, শেখ ফজলুল করীম মারুফ, শরিফুল ইসলাম রিয়াদসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
আজ দেশের সর্ববৃহৎ জুমার জামাত চরমোনাই ময়দানে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে ইমামতি ও খুৎবা প্রদান করেন নায়েবে আমীরুল মুজাহিদীন আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাই হাফিজাহুল্লাহ।
জুমার জামাতে অংশ নেন বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, উলামায়ে কিরাম ও জাতীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
আগামী ৩০ নভেম্বর'২৪ শনিবার সকাল ৮.৩০টায় হযরত পীর সাহেব চরমোনাই'র আখেরি বয়ানের মধ্য দিয়ে তিন দিনব্যাপী বিশাল এ মাহফিলের কার্যক্রম সমাপ্ত হবে।
মাহফিলে আসা মুসল্লীদের মধ্যে গতকাল দুইজন বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন। উভয়ের জানাযা শেষে মাহফিল হাসপাতালের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।