ছোট জাতের চায়না কমলা চাষ করে সফল হয়েছেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা ইউনিয়ের লংগাই গ্রামের যুবক মাহফুজ। শুধু কমলা নয়, তার ৪০ শতাংশের বাগানে রয়েছে, মাল্টা, ইয়োলো কিংসহ বিভিন্ন ফলের গাছ। ইউটিউব দেখে পড়াশোনার পাশাপাশি এই ফলের চাষের প্রতি আগ্রহ বাড়ে মাহফুজের। যেই ভাবনা সেই কাজ। শুরু করেন চায়না জাতের কমলার বাগান।
মাহফুজ জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে ৭০ হাজার টাকা খরচ করে ৪০ শতাংশ জমিতে শুরু করেন কমলা চাষ। রাজশাহী থেকে চারা কিনে এনে রোপণ করেন বাগানে। তার বাগানে বর্তমানে ৯৭ টি চায়না ছোট জাতের কমলা রয়েছে, আটটি মাল্টা ও আটটি ইয়োল কিং জাতের মাল্টা গাছ রয়েছে। চার বছর পরিচর্যার পর গত বছর ফলন আসে ৪ মন। তার থেকে ভালো দামে বিক্রি করেন ২ মন কমলা। এ বছর বাগানে প্রায় ৭০ মনের মতো ফল এসেছে। বাজারে ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করলে কিছুটা লাভবান হওয়া যাবে বলে আশা করছি। ফলটি মিষ্টি হওয়ায় কারণে শুধু ঈশ্বরগঞ্জে নয়, সারা বাংলাদেশে আমার কমলা পাওয়া যাবে।
শুধু মাহফুজ নয়। এই কমলার বাগনকে কেন্দ্র করে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে অনেকের। তারা নিয়মিত পরিচর্যা করে যাচ্ছেন কমলা গাছ গুলোর। মাহফুজের বাগানে কাজ করা ফাঞ্জু মিয়া বলেন, এই বাগানে আমরা কাজ করি। এখানে কাজ করে যে টাকা পাই, তা দিয়ে আমার সংসার চলে।
জহিরুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমরা বাগানে কোনো ধরনের রাসায়নিক সার ব্যবহার করি না। কৃষি অফিসের পরামর্শে আমরা জৈবিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছি। তাই এই কমলাগুলো সম্পূর্ণ ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত। যা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।
মাহফুজের এমন সফলতা দেখে আগ্রহ বেড়েছে এলাকার বেকার যুবকদের। তারাও কমলার বাগান করার প্রতি আগ্রহ জানিয়েছেন।
স্থানীয় যুবক জুনায়েদ হাসান জানান, আমি পড়াশোনার পাশাপাশি একটি জব করছি। আমার বাড়ির পাশেই মাহফুজের কমলার বাগান। বাগানটি দেখে আমারও খুব ভালো লেগেছে। আমি এমন বাগান করার বিষয়ে কৃষি অফিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের পরামর্শ নিয়ে আমি বাগান গড়ে তুলব।
আরেক যুবক আরশাফুল ইসলাম সজীব জানান, অনেক বেকার যুবক চাকরির পেছনে ছুটে সময় নষ্ট করছে। তারাও যদি মাহফুজকে দেখে এমন বাগান গড়ে তোলে তাহলে আর্থিকভাবে লাভবান হবেন এবং দেশ থেকে বেকারত্ব সমস্যা দূর হবে।
উপজেলা কৃষি অফিসার রিপা রানী চৌহান জানান, কৃষি অফিস থেকে কৃষক মাহফুজকে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও লেবু জাতীয় ফসল উৎপাদনে কৃষকদেরকে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ব্যক্তিগতভাবে কেউ যদি কমলা, মালটা বা যে কোনো লেবু জাতীয় ফসল উৎপাদনে আগ্রহী হন তাহলে কৃষি অফিস থেকে তাদেরকে সব ধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদান করা হবে।
কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলায় ২৭ হেক্টর জমিতে লেবু জাতীয় ফসল চাষ করা হচ্ছে। যা থেকে ২১০ মেট্রিক টন ফল উৎপাদিত হচ্ছে।