টেকসই উন্নয়নের পথে না হেঁটে উল্টো বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়াই গত সরকারের মূল লক্ষ্য ছিল বলে মনে হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া ওইসব পদ্ধতি বন্ধ করে দিয়ে টেকসই বিদ্যুৎ নীতিমালা ও পদ্ধতি অর্জনের পথে অগ্রসর হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর) ঢাকার বিয়াম ফাউন্ডেশনে বাংলাদেশ জ্বালানি সমৃদ্ধি-২০৫০ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব বলেছেন। তিনদিনব্যাপী যে সম্মেলনের তিনি উদ্বোধন করেন, শুক্রবার পর্যন্ত চলবে।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের ট্যারিফ ঠিক করতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) পুনর্গঠন করেছি আমরা। একইসঙ্গে আমরা সমন্বিত বিদ্যুৎ-জ্বালানি মহাপরিকল্পনা সংশোধনে কাজ করছি এবং নবায়নযোগ্য শক্তি নীতিমালা পর্যালোচনা করে দেখছি। পাশাপাশি আমরা স্বতন্ত্র বিদ্যুৎ উৎপাদকদের (আইপিপি) কাছ থেকেও সরে আসছি এবং আরও টেকসই বিদ্যুৎ নীতিমালা কার্যকরের পথে হাঁটছি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, অসম অনেক বিদ্যুৎ চুক্তি ও চলমান সংকটের চাপে জ্বালানি সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ মারাত্মক প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি। গুণমান, ক্রয়ক্ষমতা ও স্বচ্ছতার মধ্যে ক্রমশ ব্যবধান বৃদ্ধির পাশাপাশি জ্বালানি ব্যবহারে সবার সম-অধিকারও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে।
২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দরকার স্পষ্ট নীতিমালা, বেসরকারি খাতের শক্তিশালী অংশগ্রহণ এবং জ্বালানি উৎপাদন থেকে সংরক্ষণ পর্যন্ত সবক্ষেত্রে রূপান্তর। শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ নিশ্চিত করা।
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাতে চুক্তি বাতিলের কথা বলাটা সহজ হলেও তা থেকে বের হয়ে আসাটা অনেক ব্যয়বহুল। চুক্তি বাতিল অতটা সহজ নয়। নাইকো চুক্তি বাতিল করতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেতে হয়েছে। তবুও অন্তর্বর্তী সরকার চ্যালেঞ্জটা নিয়েছে। এখন চুক্তিগুলো পর্যালোচনার মধ্যে আছে বলে জানান তিনি।
উদ্বোধনী অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তামিম, রহিম আফরোজ নবায়নযোগ্য শক্তি লিমিটেডের (আরআরইএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুনাওয়ার মিসবাহ মঈন, দীপাল চন্দ্র বড়ুয়া, ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সাইনান হাউটন, শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী, লিডি ন্যাকপিল, আবুল কালাম আজাদ সংহতি প্রকাশ করেন।