বিদেশ যাওয়ার খরচ কমিয়ে সকল দেশের অভিবাসন ব্যয় এক লাখ টাকার মধ্যে আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রবাসী নেটওয়ার্ক।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে সংগঠনটির আত্মপ্রকাশে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। এসময় দালালি ও মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করারও দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ প্রবাসী নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক বায়েজিদ আল হাসান। এ সময় তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের মর্যাদা ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় দক্ষকর্মী বিদেশ পাঠানো নিশ্চিত করতে হবে। এর পাশাপাশি সকল কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কারিকুলাম বিদেশে চাকরির জন্য দক্ষ শ্রমিক তৈরির উপযোগী করে নির্ধারণ করতে হবে। প্রবাসীরা দেশে ফেরার পর তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রবাসীদের জন্য পেনশন সুবিধা চালু করতে হবে এবং বিদ্যমান বিমা সুবিধার আওতায় অসুস্থতার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতাল ও অফিসে প্রবাসীদের জন্য আলাদা বুথ চালু করতে হবে। যাতে খুব সহজে ও অল্প সময়ে সেবা গ্রহণ করতে পারেন। বিদেশে প্রবাসী কর্মীদের আইনি সহায়তা প্রদান করতে হবে, বিশেষত চুক্তি লঙ্ঘন, বৈষম্য বা অন্য যেকোনো সমস্যা মোকাবেলায় প্রতিটি দূতাবাসে লিগ্যাল উইং শক্তিশালী করতে হবে। বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটে জনবল বৃদ্ধি করতে হবে। দূতাবাসে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে এবং দ্রুত সময়ে প্রবাসীদের সেবা নিশ্চিত করতে হবে। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের সেবার আওতা বৃদ্ধি করতে হবে। প্রতিবন্ধী ভাতা এক হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার করতে হবে। চিকিৎসা সহায়তা দেড় লাখ টাকা থেকে ৩ লাখ টাকা করতে হবে। এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন হলে একদিকে প্রবাসীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে একইসাথে দেশের প্রতি তাদের নিবেদন এবং অবদান আরো শক্তিশালী হবে।
সংবাদ সম্মেলন সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও প্রবাসী গবেষক মেজর (অব.) ড. নাসির উদ্দিন বলেন, ‘প্রবাসীরা দেশে সম্পদ ভোগ করেন না। এমনকি দেশের ১৬ কোটি মানুষের মধ্য থেকে অন্তত ৫-৬ কোটি মানুষের দায়িত্ব প্রবাসীদের কাঁধে। এভাবে প্রবাসীরা রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্ব কমিয়ে। দেয়। এর বিপরীতে পারিবারিক, সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে মর্যাদা পাওয়াটা একজন প্রবাসীর প্রাপ্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো- অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তারা সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, দুবাইতে কারাবন্দি ৫৭ বাংলাদেশিকে মুক্ত করতে দায়িত্ব পাওয়া সরকারি আইনজীবী ব্যারিস্টার ওলোরা আফরিন, বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাসী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে ‘টিআইপি হিরো’ অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্ত আল আমিন নয়ন ও সদ্য ওমান ফেরত লাকি আক্তার প্রমুখ।