চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দুই কিশোরকে ছুরিকাঘাতে হত্যার প্রতিবাদে ও হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) বিকেলে নাচোল উপজেলার মল্লিকপুর মানববন্ধন ও সমাবেশ করে নিহত কিশোর মাসুদ ও রাইহানের স্বজন ও এলাকাবাসী।
তারা প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী রহনপুর-চাঁপাইনবাবগঞ্জ সড়কে অবস্থান নেয়। এসময় যান চলাচল বন্ধ হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আসামি চিহ্নিত করা হয়েছে জানিয়ে দ্রুত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতারের আশ্বাস দিলে সড়ক থেকে সরে যান বিক্ষোভকারীরা। এর আগে খলসী বাজার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে মল্লিকপুর বাজারে গিয়ে শেষ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, গত মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে মল্লিকপুর বাজারে বিজয় দিবসের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চলাকালীন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রস্রাব করার একটি ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার বিরোধের জেরে ঘটনার সাথে জড়িত না থাকলেও শুধু খলসী গ্রামে বাড়ি হওয়ায় দুই ছাত্রকে কুপিয়ে হত্যা করে মল্লিকপুর গ্রামের কয়েকজন বখাটে। ঘটনার চারদিন পার হলেও পুলিশ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের আটক করতে পারেনি।
নিহত দুই কিশোরের পরিবারের সদস্যরা বলেন, হত্যাকারী ও তাদের সহযোগীরা এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কিন্তু তাদেরক আটক করেছে না পুলিশ। এমনকি হত্যাকারী ফয়সাল এখনও ফেসবুকে অ্যাকটিভ আছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আটক করে আইনের আওতায় না আনলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন এলাকাবাসী। এসময় নিহত দুই কিশোরের পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাজনৈতিক কারণে বা জয় বাংলা লেখার কারণে নয়, দুই গ্রামের দুটি কিশোর গ্রুপের বিরোধের জেরেই প্রাণ গেছে তাদের।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় আমরাও ব্যথিত। ঘটনার পর থেকে গত কয়েকদিনে আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আশা করছি, আমরা শিগগিরই আসামিদের আটক করতে সক্ষম হব।
ছুরিকাঘাতের ঘটনায় দুই কিশোর নিহত হওয়ার পাশাপাশি আরও ৪ জন আহত হয়েছে। নিহত মাসুদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অষ্টম সেমিস্টারে ও রাইহান পঞ্চম শ্রেণীতে পড়াশোনা করতেন। ঘটনার রাতেই দু'জনকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার রাতে এ নিয়ে ১৮ জনকে আসামি করে নাচোল থানায় মামলা দায়ের করেন নিহত মাসুদ রানার বাবা এজাবুল হক। তাদেরকে আদালত দু'দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।