ভারতে পালানোর সময় বেনাপোল রুট থেকে গত ৪ মাসে জুলাই–আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গণহত্যাসহ ক্ষমতার অপব্যবহারকারী বিভিন্ন মামলার ৯ আসামিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ ও বিজিবি।
নতুন করে গত সপ্তাহে আরও ৭৫ জনের পাসপোর্ট বাতিল করেছে সরকার। এছাড়া সাবেক ওসি শাহ আলমকে আটকাতে দেশব্যাপী রেড অ্যালার্ড জারি করা হয়েছে। এতে সীমান্তে বিজিবি, পুলিশ ও সরকারের গোয়েন্দা সংস্থ্যাগুলো নজরদারি আরও বাড়িয়েছে।
সীমান্ত সংশিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা আন্দোলনকে রুখে দিতে তৎকালীন আ.লীগ সরকারের নির্দেশে গণহত্যা চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ছাত্র, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বাস্থ্যবিষয়ক উপ-কমিটির তথ্য মতে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে প্রাণ হারান আবু সাঈদ, মুগ্ধসহ দেড় হাজারের বেশি। আহত ৩১ হাজারের বেশি। এক পর্যায়ে প্রকট আন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর গণহত্যা ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে কয়েক হাজার আ.লীগের মন্ত্রী, এমপি, নেতাকর্মী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাকে আসামি করে মামলা হয়। এতে গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দেয় আসামিরা। তবে বিভিন্ন জনকে ম্যানেজ করে কৌশলে দেশের বিভিন্ন সীমান্ত পথে ইতিমধ্যে অনেকে পালিয়েছে ভারতে। এদের মধ্যে ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ তালিকায় কয়েকজন মন্ত্রী, এমপিরা রয়েছেন।
এদিকে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ায় আসামিরা বেনাপোল রুটে পালানোর বেশি চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে এ সীমান্তের বর্ডার গার্ড বিজিবি ও পুলিশের সতর্কতায় গত ৪ মাসে গ্রেফতার হয়েছে ৯ জন অপরাধী।
যশোরের শার্শা উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোস্তাফিজ্জোহা সেলিম জানান, নিরাপত্তা জোরদারের পরেও দেশের বিভিন্ন রুটে অনেকেই ইতিমধ্যে ভারতে পালিয়েছে। সেখানে বসে তারা ষড়যন্ত্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছে। মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে দুই দেশের সৌহার্দ্য সম্পর্ক নষ্টের চেষ্টা করছে। এসব প্রতিহত করতে সবাইকে আরও সজাগ থাকার আহবান এ যুব নেতার।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন ওসি ইসতিয়াজ মোহাম্মদ আহ্বায়ক কাদের ভূইয়া জানান, কালো তালিকার কোনো আসামিরা যাতে পালাতে না পারে সেজন্য ইমিগ্রেশন পুলিশ সতর্ক থেকে কাজ করছে। এ রুটে পালানোর সুযোগ নেই।
ভারতে পালানোর চেষ্টাকালে বেনাপোল রুটে সাম্প্রতি গ্রেফতারকৃতরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কিশোর আদিল হত্যা মামলার আসামি রুস্তম খন্দকার, যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব, ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সুস্মিতা পান্ডে ও তার ভাই ছাত্রলীগ কর্মী সত্যজিত পান্ডে, শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার পাল, সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌর কাউন্সিলর ও ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি আলফাজ উদ্দিন,ভোলার বোরহানউদ্দিন পৌর কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি তাজউদ্দীন। এছাড়া তথ্য গোপন করে ভারতে যাওয়ার সময় আটক হয় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সৈনিক শাওন ঘোষকে আটকে বিজিবি কর্মকর্তাদের হাতে সোপর্দ করা হয়েছে।