আজকে যারা সংস্কারের কথা বলেছেন সেদিন কিন্তু সে সংগ্রামে তাদের অনেককে দেখি নাই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) এ বিএনপি’র প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির উদ্যোগে 'রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি' শীর্ষক কর্মশালার ঢাকা বিভাগ অংশের উদ্বোধনি বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কর্মশালাটি পর্যায়ক্রমে দেশের সবগুলো বিভাগে আয়োজন করা হবে বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, আজকে আমরা দেখছি, যারা বিখ্যাত লোক, বড় বড় টেলিভিশনে বক্তব্য দিচ্ছেন, বিগত বছরগুলোতে যখন বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশ, এসবি, ডিবির অত্যাচারে অতিষ্ট হয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে এক লক্ষ, ৬০ লাখ আসামি করা হয়েছে। রাতের অন্ধকারে ধান ক্ষেত দিয়ে পালিয়ে যেতে হতো তাদের কথা ভাবুন। আজকে যারা সংস্কারের কথা বলেছেন সেদিন কিন্তু তাদের সে সংগ্রামে তাদের অনেককে দেখি নাই। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের বিপ্লবের মূল সত্য, এই সত্যকে অস্বীকার করতে পারবে না।
ড. আব্দুল মঈন খান বলেন, জুলাই-আগস্টের বিপ্লবের কৃতিত্বদারি কোন একজন মানুষ নয়। এই গৌরবের অধিকারী দেশের প্রতিটি মানুষ যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে। এই গণতন্ত্রের জন্যই ১৯৭১ সালে লাখ লাখ মানুষ জীবন দিয়েছিল।
বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনচেতা উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, তাই পাকিস্তানকে তাড়িয়েছে, বাকশালকে তাড়িয়েছে। তাই ৩১ দফা কে উপলব্ধি করতে চাইলে এই প্রেক্ষাপটকে উপলব্ধি করতে হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, এই সরকারকে উপলব্ধি করতে হবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যে সংস্কারগুলো অত্যাবশকীয় দরকার সেই সংস্কারগুলো করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিতে হবে। এটা আমার কথা নয়, একজন রিকশাচালক, দিনমজুর, গৃহশ্রমিক, নারী শ্রমিককে জিজ্ঞেস করুন। এই তরুণ সমাজকে জিজ্ঞেস করুন যারা বিপ্লব এনেছে তারা কি ভোটার হয়ে একবারও ভোট দিতে পেরেছে? পারে নাই। তাই ভোটের অধিকার ১২ কোটি ভোটারের মাঝে ফিরিয়ে দিতে হবে।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সত্যিকার জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে একটি সংসদ গঠন করবে। সেই সংসদ একটি সরকার গঠন করবে। ইনশাআল্লাহ জনগণ যদি আমাদের ভোট দেয়, আমরা জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছি সে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী জনগণের কল্যাণে এই ৩১ দফা সংস্কার আমরা করব।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারই উল্লেখ করে বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, মানবসভ্যতার ইতিহাস যদি পর্যালোচনা করেন তাহলে একটি বিষয় দেখবেন সেটি হলো মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। সে জন্য সহস্র বছর ধরে মানুষ আন্দোলন করেছে, নিজের রক্ত ঢেলে দিয়েছে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার দ্বিতীয় সেশনে বিকালে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী ছাইয়্যেদুল আলম বাবুলের সভাপতিত্বে কর্মশালা সঞ্চালনা করছেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক উপকমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেন।