সংকটের চাদরে মুড়ানো ইবির সততা ফোয়ারা

  • ইবি করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সৌন্দর্য বর্ধনকারী সতত ফোয়ারা শিক্ষার্থী এবং দর্শনার্থীদের জন্য আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে পরিচিত। তবে দীর্ঘদিন ধরে সংকটাপন্ন অবস্থায় পড়ে আছে স্থাপনাটি। নষ্ট বাতি, জঙধরা পানি সঞ্চালন লাইন, ভেঙে যাওয়া মেঝের টাইলস, পিলার ভাঙ্গা বেষ্টনী, ফোয়ারার দেওয়াল জুড়ে শেওলা ও মধ্যস্তম্ভের প্লেটে জমে থাকা পুরনো পানি সব মিলিয়ে জরাজীর্ণ হয়ে পড়ে রয়েছে ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণীয় এই স্থানটি।

জানা যায়, ক্যাম্পাসের প্রবেশমুখের বামপাশে শহীদ মিনার ও স্মৃতিসৌধের মধ্যবর্তী স্থানে ২০১৮ সালের ৭ই জানুয়ারি এই দৃষ্টিনন্দন ফোয়ারাটির উদ্বোধন করা হয়। চতুর্থ সমাবর্তন উপলক্ষে তৎকালীন আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ‘সততা ফোয়ারা’র উদ্বোধন করেন। দৃষ্টিনন্দন এই ফোয়ারার নকশা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র ও এএনএইচ গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাদ্দেস হানিফ টলিন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের যৌথ অর্থায়নে এটি নির্মাণ করা হয়।

বিজ্ঞাপন

অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিষয়ক অন্যতম এই নিদর্শনটি তার লাল নীল রঙের আলোয় ফোয়ারার প্রবাহিত পানির নান্দনিক রূপে মুগ্ধ করতো শিক্ষার্থীসহ দর্শনার্থীদের। তবে সময়ের পরিক্রমায় ও নানা অব্যবস্থাপনার কারণে বর্ণিল এই স্থানটি আজ নিজেই বিবর্ণ। এই নিয়ে ক্ষোভের শেষ নেই এখানকার শিক্ষার্থীদের। ফোয়ারা দ্রুত সংস্কার ও চালুর দাবিতে গতবছরের এপ্রিল মাসে মানববন্ধনও করেন শিক্ষার্থীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রায় বছর তিনেক ধরে বন্ধ অবস্থায় পরে আছে ফোয়ারাটি। আগে যদিও বিশেষ দিবসগুলোতে টুকটাক সংস্কার করে চালানো হতো, শিক্ষার্থীরা বিশেষ দিবসে উপভোগ করতো ফোয়ারার সৌন্দর্য তবে তা এখন শুধুমাত্র অতীতের বর্ণিল ইতিহাস ও বর্তমানের মরিচাধরা বাস্তবতা। তবে মাঝে একবার ইইই বিভাগের অ্যালামনাই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে কিছু সময়ের জন্য চালানো হয় উপভোগ্য পানির ফোয়ারা।

বিজ্ঞাপন

সরজমিনে দেখা যায়, সততা ফোয়ারার ভেতরে ব্যবহৃত লাল নীল বাতিগুলো অধিকাংশই অকেজো অবস্থায়। এছাড়াও সেখানে থাকা পানি সঞ্চালন লাইন গুলো মরিচাপড়া, খানিকটা ভাঙা মেঝে ও বেষ্টনীর এক ভাঙ্গা পিলার যেন জানান দিচ্ছে বহুকাল সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি এই আঙ্গিনায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তানিয়া বলেন, সততা ফোয়ারা যখন চালু ছিলো তখন ক্যাম্পাসের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থাপনা ছিলো এটি। কিন্তু অযত্নে অবহেলায় এখন এটি তার নিজের বৈশিষ্ট্য হারিয়ে খুজছে। মাঝেমধ্যে এক দুইদিনের জন্য চালু হয় তাও আবার পরে হারিয়ে যায়। আমরা শিক্ষার্থীরা একটি সুন্দর ক্যাম্পাস প্রত্যাশা করি। সেখানে এই সততা ফোয়ারা শহীদ মিনার এবং স্মৃতি সৌধের মাঝে একটা অন্যরকম সুন্দরের প্রতীক হয়ে থাকতে পারতো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নজর না থাকায় এখন নবীন শিক্ষার্থীরা জানেই না এর কাজ কি। তাই আমার চাওয়া দ্রুত যেনো এর সংস্কার হয় এবং সবসময় এটি চালু থাকুক।

সততা ফোয়ারা এর আগে একটা অনুষ্ঠানের জন্য চালু করা হয়েছিলো উল্লেখ্য করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) এ.কে.এম শরিফ উদ্দীন জানান, ফোয়ারার কন্ট্রোল রুমের পরিবেশ ভালো না। সেখানে বৃষ্টিতে পানি ঢুকে যায় ফলে আমাদের মোটর গুলো সড়িয়ে নিতে হয়।

লোকবল সংকটের কথা টেনে তিনি আরও বলেন, এমন একটি স্থাপনা পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য লোক দরকার।