‘লা নিনা’র প্রভাবে সারাদেশে বৈরী আবহাওয়ার আভাস

  • ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

শুষ্ক আবহাওয়ায় কুয়াশা / ছবি: বার্তা২৪

শুষ্ক আবহাওয়ায় কুয়াশা / ছবি: বার্তা২৪

উত্তরে ঠান্ডা বাতাস আর শরীরে হিমধরানো আবহাওয়া মানেই শীতকাল। কুয়াশার চাদর মুড়ি দিয়ে বছর ঘুরে বাংলার প্রকৃতিতে এসেছে  কনকনে শীত। সেই সঙ্গে হিমেল পরশ। এবছর হেমন্ত আসতে না আসতেই শীতের আগমন ঘটেছে। কার্তিক মাসের মাঝামাঝি থেকেই দেশের উত্তরাঞ্চলে তাপমাত্রা কমতে শুরু করে, সেই সঙ্গে বেড়েছে কুয়াশাও।

শুধু উত্তরাঞ্চল নয়, এবছরে শীতকালের শুরুতেই সারাদেশে হাড় কাঁপানো শীতল বাতাস বইতে শুরু করেছে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এবছর বেশ কয়েকটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাবে বঙ্গদেশে। ইতোমধ্যেই উত্তরীয় হিমেল হাওয়া ও কনকনে ঠান্ডায় জনসাধারণের অবস্থা নাজেহাল হওয়ার মন্তব্য আসছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে হালকা কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট, লোকালয়। সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থা মানুষের। রাস্তায় কমেছে মানুষের চলাচল। উষ্ণতার আশায় কেউ কেউ আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করে নিচ্ছে। আবার কেউ ভিড় জমাচ্ছে চায়ের দোকানে।

বিজ্ঞাপন

তবে এই শীতের প্রকটতা আচমকা কোনো ঘটনা নয়। আগেই বিশ্ব আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছিলেন চলতি বছর লা নিনার প্রভাব দেখা যাবে। ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (ডব্লিউএমও) বাংলাদেশের শীতকালীন আবহাওয়ার আপডেট জানিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। নতুন এই প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের শেষের দিকে ‘লা নিনা’ উদ্ভবের সম্ভাবনা রয়েছে শতকরা ৬০ ভাগ। তারই পূর্বপ্রভাব স্বরূপ এইরকম শীত পড়েছে সারাদেশে।

এর আগে ‘ক্লাইমেট প্রেডিকশন সেন্টার’ এর আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে জানা গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রে লা নিনার প্রভাবের কথা। তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, এবারের ‘লা নিনা’ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরাংশ আরো বেশি আর্দ্রতার ভেতর দিয়ে যাবে। বিশেষ করে উত্তরপশ্চিম প্রশান্ত অঞ্চলে বেশি আর্দ্রতা বিরাজ করবে। সেইসঙ্গে মধ্যপশ্চিম এবং উত্তরপশ্চিমের প্রান্তেও একই অবস্থা বিরাজ করবে। মধ্যপশ্চিম জুড়ে শুষ্ক ও খরার প্রবণতা বজায় থাকবে। তবে শীতকালে ‘লা নিনা’ চলাকালে ক্যারোলিনার উত্তরাংশে বেশি আর্দ্রতা বজায় থাকবে।

বিজ্ঞাপন

২০২৪ সালে এর আগে গরমের মৌসুমেও ভেঙেছে তাপমাত্রার রেকর্ড। জাতিসংঘ জানায় এলনিনোর কারণে এই বছর গত ৫ বছরের গরমের রেকর্ড ভেঙেছে। গরম প্রধান দেশগুলোতে এলনিনোর কারণে অনেক প্রাণী মারা গিয়েছিল। এল নিনো হল প্রশান্ত মহাসাগরের কিছু অংশের উষ্ণ হয়ে ওঠার প্রাকৃতিক ঘটনা। এতে সারা বিশ্বের আবহাওয়া প্রভাবিত হয়। শুধু গরম নয়, এবছর শীতও পড়েছে মনে রাখার মতো।

লা নিনা এবং এল নিনো একে অপরের বিপরীত তবে একই রকম রূপ। নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরে নিম্ন সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা দৃষ্টান্তমূলক পরিবর্তনের ফল এল নিনো এবং লা নিনা। তীব্র শীত হোক বা কড়া রোদ, জলবায়ুর প্রতি প্রশান্ত মহাসাগরের ব্যাপক প্রভাব রয়েছে।