লন্ডনে ফিলিস্তিনি জনজীবন তুলে ধরার আয়োজন

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দেশে ফেরার অধিকারের প্রতীক হিসেবে বিশালাকার চাবি তুলে ধরেছেন উসামা কাশু, ছবি: সংগৃহীত

দেশে ফেরার অধিকারের প্রতীক হিসেবে বিশালাকার চাবি তুলে ধরেছেন উসামা কাশু, ছবি: সংগৃহীত

প্যালেস্টাইন হাউস। যে সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ফিলিস্তিনি জনজীবনকে তুলে ধরা হয়েছে নানা আয়োজনে। সমবেত মানুষের কোলাহল দেখলে মনে হবে এক টুকরো মধ্যপ্রাচ্য। পাঁচতলাবিশিষ্ট এই সাংস্কৃতিক কেন্দ্রটি গড়ে তুলছেন উসামা কাশু।

আরবীয় রীতিতে তৈরি ভবনটি ব্রিটিশ মিউজিয়ামের কাছেই অবস্থিত। চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে প্যালেস্টাইন হাউস তার কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু করবে। তখন প্রতিদিন সাংস্কৃতিক আয়োজন থাকবে, যেখানে মানুষ নিজে অনুপ্রাণিত হবে এবং অনুপ্রাণিত করবে। চারদিকে শুধু সৃজনশীলতার বুদবুদ চোখে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

উসামা কাশু আন্তর্জাতিক সংহতি আন্দোলন (আইএসএম) প্রতিষ্ঠার পর ২০০৩ সালে ফিলিস্তিন ছাড়তে বাধ্য হন। আইএসএম ইসরায়েলি দখলদারির বিরুদ্ধে অহিংস বিক্ষোভ এবং মানবতাবিরোধী দেয়াল নির্মাণের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের আয়োজন করে থাকে। ফিলিস্তিন থেকে পালিয়ে উসামা যুক্তরাজ্যে শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নেন। তিনি ২০০৭ সালে গড়ে ওঠা ফ্রি গাজা মুভমেন্টের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং ২০১০ সালের ফ্রিডম ফ্লোটিলার অন্যতম আয়োজক।

এটা ছিল সামুদ্রিক পথে সাহায্য পরিবহনের একটি মিশন। মাভি মারমারা নামে একটি জাহাজে সাহায্য পাঠানো হলে তাতে ইসরায়েলি বাহিনী হামলা করে এবং ১০ ত্রাণকর্মী শহীদ হন। ঘটনার পর প্রায় সাত শ জনের সঙ্গে তার ওপর অত্যাচার করা হয়। এরপর উসামা আবারও যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন এবং সৃজনশীল কাজে আত্মনিয়োগ করেন। ২০১২ সালে লন্ডনে হিবা নামে লেবানিজ ও প্যালেস্টাইনিজ রেস্টুরেন্ট চেইন খোলেন।

বিজ্ঞাপন

প্যালেস্টাইন হাউস, ছবি: সংগৃহীত

করোনা মহামারির পর তিনি প্যালেস্টাইন হাউসের কাজ শুরু করেন। তার পরিকল্পনা ফিলিস্তিনি শিল্পীদের শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হবে। এখানে সাউন্ট রেকর্ডিং স্টুডিও, এডিটিং সুইট, মিটিং রুম এবং মিডিয়া প্রডাকশন রুম থাকবে। যেখানে মানুষ সত্যিই তার সৃজনশীলতা দেখাতে পারে। কোনো ধরনের লক্ষ্য ও বিধি-নিষেধ ছাড়াই এখানে একটি স্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করবে। এখানকার অফিস ও কক্ষগুলোর নাম দেওয়া হবে ফিলিস্তিনের বিভিন্ন স্থানের নামে। যেমন- জেরিকো, নাবলুস, আল-কুদস, গাজা ইত্যাদি।

সম্প্রতি প্যালেস্টাইন হাউস হস্তশিল্পের ওপর ছয়টি কর্মশালার আয়োজন করেছে। যাতে চার শ জন অংশগ্রহণ করে। মেরি ইভার্স তাদের অন্যতম। তিনি ‘স্টিচ দেয়ার নেম টুগেদার’ (একসঙ্গে তাদের নাম সেলাই করি) শীর্ষক একটি উন্মুক্ত হস্তশিল্প প্রকল্প শুরু করেছেন।

চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় যারা নিহত হয়েছেন তাদের সম্মানে প্রকল্পের আয়োজন করা হয়েছে। মেরি ইভার্স বলেন, ‘৬০ ও ’৭০-এর দশকে যারা ফিলিস্তিনে বসবাস করেছিলেন, এখানে আসার পর তাদের ঘরে ফেরার অনুভূতি হয়েছে। লন্ডনে এমন একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রয়োজন, যেখানে সব ধরনের মানুষ সব বিশ্বাসের মানুষকে স্বাগত জানাতে পারবে। বিশেষত যেখানে এসে মানুষ বুঝতে পারবে গণমাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের যেভাবে তুলে ধরা হয় তারা তেমন নয়।