নেত্রকোনায় উচ্চ ফলনশীল টমেটো আবাদে সফল চাষিরা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

অসময়ে টমেটোর চাষাবাদ লাভজনক হওয়ায় সফলতা পেয়েছেন নেত্রকোনার কুনিয়া গ্রামের চাষিরা। প্রতিবছরের তুলনায় এবার সর্বেচ্চ মূল্যে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। এতে অধিক লাভের আশা করছেন কৃষকরা। ফলে টমেটো চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। 

জেলা সদরের মৌগাতি ইউনিয়নের কুনিয়া গ্রামের কৃষক জজ মিয়া ২০০৯ সাল থেকে শুরু করেন গ্রীষ্মকালীন গ্রাফটিং পদ্ধতির টমেটো চাষ। পরবর্তীতে গত প্রায় ১৪ বছর ধরে একই গ্রামের বেশ কিছু কৃষক আগাম টমেটো চাষ করে যাচ্ছেন। এই টমেটো প্রায় আটমাস ফলন দেয়। সেইসাথে চার থেকে পাঁচ মাস ভালো ফলন হয়। যা এক থেকে দেড়শ এমনকি ২০০ টাকা দরেও বিক্রি হয়। এরপর শীতকালীন সবজির সাথেও বিক্রি হয়। তখন দাম কমে গেলেও কৃষকরা লাভবান।

বিজ্ঞাপন

কৃষক মাহবুবুর রহমান প্রতি বছররের ন্যায় এবছর ৫০ শতক জায়গায় করেছেন বারি-৪ জাতের উচ্চ ফলনশীল টমেটোর আবাদ। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় এবার ১২ লাখ টাকার টমেটো বিক্রির আশা করছেন। আবাদ খরচ উঠিয়ে লাভের পাশাপাশি পরিবারের খাদ্য চাহিদাসহ স্থানীয় চাহিদাও পুরণ হচ্ছে। কমবেশি কর্মসংস্থানের পাশাপাশি যুবকরাও আগ্রহী হচ্ছে।

গ্রামের একাধিক টমেটো চাষি জানান, বাঁশের খুটিতে মোটা পলিথিন ব্যবহার করে তৈরি করা হয় মাচা। পরে সেখানে বেড আকারে টমেটোর চারা রোপন শেষে দিন রাত চলে পরিচর্যা। মাত্র আড়াই থেকে তিন মাস পর থেকেই শুরু হয় ফলন। যা চলে টানা প্রায় ৬ মাস। একবার সেট তৈরি করলে পরবর্তীতে ৪/৫ বছর একই স্থানে চাষাবাদ সম্ভব হওয়ায় অধিক লাভবান হচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

এদিকে বিক্রেতা সুমন আহমেদ জানান, বর্তমানে নেত্রকোনার বিভিন্ন বাজরে স্থানীয় এই টমেটো প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায়। এই টমেটোর চাহিদা আমদানিকৃত টমেটোর থেকে অনেক বেশি।

ক্রেতারা বলছে আমদানিকৃত টমেটোর চেয়ে এটার স্বাদ যেমন ভাল তেমন দামও কম। আবার সারা বছর বাজারে পাওয়া যাচ্ছে স্থানীয় এই টমেটো।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, উচ্চ ফলনশীল এই টমেটো আবাদ বৃদ্ধিতে নানা পরামর্শ দেয়ার কথা বলা হচ্ছে বার বার। নেত্রকোনায় নানা রবিশস্য চাষ হলেও আগাম টমেটো চাষে বেশ জনপ্রিয়। ইত্যিমধ্যে কয়েকজনকে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। অসময়ে ফলনটি হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। জেলার বাজার গুলোতে সবজির চাহিদাও পূরণ হচ্ছে। এ বছর জেলার বিভিন্ন স্থানে নানা জাতের সবজি আবাদ হয়েছিলো ৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমিতে। তার মধ্যে আগাম জাতের উচ্চ ফলনশীল টমেটোর আবাদ হয়েছে মাত্র ৫ হেক্টর জমিতে। তবে সম্প্রতি বন্যায় নষ্ট হয়েছে ১৭৭ হেক্টর জমির সবজি।