রোজায় নয়, গ্রীষ্মে লোডশেডিং হতে পারে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা

  • স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রোজায় লোডশেডিং মুক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, তবে গ্রীষ্ম মৌসুমে ৭০০ থেকে ১৪০০ মেগাওয়াট লোডশেডিং করতে হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড ফাওজুল কবির খান।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিদ্যুৎ ভবনে আসন্ন রমজান ও সেচ মৌসুমে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সরবরাহ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, রোজাকে লোডশেডিং মুক্ত রাখার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে লোডশেডিং নানা কারণে হয়। টেকনিক্যাল কারণ ছাড়া লোডশেডিং যাতে না হয় সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রোজায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতে চাহিদা থাকবে। আমরা পুরোপুরি সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়েছি।

উপদেষ্টা বলেন, প্রাথমিক জ্বালানির সমস্যার কারণে লোডশেডিং করতে হয়। প্রথম মিটিং করেছি অর্থের সংস্থানের জন্য, রোজা এবং গ্রীষ্ম মৌসুমে কী পরিমাণ অর্থের প্রয়োজন তার প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে। রোজার মাসে যে পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন হবে, তার জন্য যে পরিমাণ টাকা ও ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন ৯০০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। রোজার মাসের জন্য ১২০০ মিলিয়ন সরবরাহ এবং এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ১১০০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

রমজানে গ্যাসের সরবরাহ বৃদ্ধি প্রসঙ্গে বলেন, আমরা অন্যদিকের সরবরাহ কমাচ্ছি না। বাড়তি ৪ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হবে। যা বিদ্যমান কাঠামোর মধ্যেদিয়েই সম্ভব।

তিনি বলেন, গ্রীষ্ম ও সেচ মৌসুমে বিদ্যুতে চাহিদা প্রাক্কলন করা হয়েছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। এরমধ্যে কুলিং (এসি) লোড রয়েছে ৬ হাজার মেগাওয়াট। বিভিন্ন কারণে ৭০০-১৪০০ লোডশেডিং করতে হতে পারে। আমরা যদি এসির তাপমাত্রা ২৫ অথবা ২৬ ডিগ্রিতে রাখতে পারি তাহলে ২ থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে। তাহলে লোডশেডিংয়ে প্রয়োজন হবে না।

এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কোন উদ্যোগ নিচ্ছি না, অনেক চাপ থাকার পরও আমরা দাম বাড়াইনি। গ্যাসের দাম নতুন শিল্পে বাড়বে, বিদ্যমান শিল্পে আগের দর থাকবে। আমদানি করতে খরচ পড়ছে ৭৫ টাকা, সেই টাকা দিয়ে এনে ৩০ টাকায় দেওয়া সম্ভব না।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কাছে বিভিন্ন দেশীয় ও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের পাওনা রয়েছে। অনেকেই তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে। কবে নাগাদ বকেয় পুরোপুরি পরিশোধ করা সম্ভব হবে! এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, কতদিনের মধ্যে বকেয়া পুরোপুরি পরিশোধ হবে এ কথা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন। তবে আমরা কমিয়ে আনার চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে বিপিসির সব বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে।

বিদ্যুৎ কেন্দ্র বেকার বসে থাকা প্রসঙ্গে বলেন, আমরা নতুন করে কোন পাওয়ার প্লান্টের চুক্তি নবায়ন করছি না।

পিক আওয়ারে সেচ পাম্প বন্ধ রাখা, রাত ১১ টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সেচ পাম্প চালাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা, ইফতার, সাহরী ও তারাবীর নামাজে লোডশেডিং না করা, মসজিদ সমুহের এসি ২৫ ডিগ্রির নিচে না নামানো, ওভারলোডেড ট্রান্সফরমার প্রতিস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে সভায়।

সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ রেজাউল করিম, পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মোঃ রেজানুর রহমান, বিপিসির চেয়ারম্যান আমিন উল আহসানসহ বিভিন্ন সংস্থা ও কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা অংশ নেন।