‘আগামী জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেবেন’
আগামী জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেছেন, ‘আপনারা যাতে বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষকে সম্মান দিয়ে যার যার কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করবেন। একটা মানুষও যাতে আপনাদের ওপরে ধৈর্যহারা হয়ে বিরক্ত না হয়। সেজন্য আপনারা যেরকমভাবে দ্রুত একটা নির্বাচন কমিশন দিয়েছেন, তেমনিভাবে আগামী জুলাই থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে একটি অবাধ এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন দেবেন।’
শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় অবস্থিত কচি-কাঁচা মিলনায়তনে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমির উদ্যোগে আয়োজিত বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমির ২৩ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং ৭ ই নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেছেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রেজাবুদৌলা চৌধুরী।
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন,‘দুদিন আগে ব্রিগেডিয়ার সাখাওয়াত বলেছেন, সম্ভবত ২০২৬ সালের মাঝামাঝি অর্থাৎ আরও আড়াই বছর পর নির্বাচন দেওয়া হবে। আবার গতকালকে দেখলাম আসিফ নজরুল বলেছেন, অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারগুলো করার পরে দ্রুত নির্বাচন দিবেন। আমরা সরকারের ভেতরে এরকম সমন্বয়হীনতা দেখতে চাই না। আমরা যখন একেক উপদেষ্টার কাছ থেকে একেকরকম কথা শুনি তখন বাংলাদেশের মানুষ হতাশ হয়। এটা আমাদের সরকার, অভ্যুত্থানের সরকার। ফ্যাসিবাদের বাইরে মুক্ত মানুষের সরকার। সরকারের কাছে সমন্বয়হীনতা আমরা আশা করি না। আমরা আশা করি, এ সরকার অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার করে নির্বাচন দিবেন।’
আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র চেয়াপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘সাত নভেম্বর আধিপত্য শক্তিকে প্রতিহত করে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিকশিত হওয়ার জন্য সাত নভেম্বর আগমন ঘটেছে। সাত নভেম্বর খুব গুরুত্বপূর্ণ দিন। কিন্তু দুঃখের বিষয় সাত নভেম্বরকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখনও কোনো দিবস হিসেবে ঘোষণা দেয়নি। এটা জাতির জন্য হতাশাজনক। বাংলাদেশে দুইটি শক্তি বিরাজমান। আধিপত্য শক্তি ও জাতীয়তাবাদী শক্তি। আধিপত্য শক্তিকে আমরা হারিয়েছি। এখন যদি জাতীয়তাবাদী শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করতে না পারি তাহলে তো সমস্যা হবে। সেজন্যই ফারুকীর মতো লোক উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে বলে এসরকার নাকি নিরপেক্ষ সরকার। কিন্তু এসরকারতো নিরপেক্ষ সরকার হতে পারে না। এসরকারকে হতে হবে জাতীয়তাবাদী সরকার। এসরকারকে আমরা বসিয়েছি। এসরকার আমাদের। সেজন্য আমরা এসরকারের সমালোচনা করি। এ সরকার ভুল করুক আমরা সেটি চাই না। এসরকারকে নিরপেক্ষ হওয়ার সুযোগ নেই। নিরপেক্ষ মানে হলো আ.লীগকে পুনর্বাসন করা, ভারতীয় আধিপত্যকে গ্রহণ করা।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যারা ভুল করার চেষ্টা করছেন তাদেরকে সঠিক পথে আসা দরকার। বিএনপি ধ্বংস করার জন্য অনেক চেষ্টা করছে। তারেক রহমানকে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছে। তার মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারেক রহমান আজকে মেরুদণ্ড সোজা করে দাঁড়িয়েছে। এখন থেকে আগামীর বাংলাদেশ হলো তারেক রহমানের বাংলাদেশ। তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। তার নেতৃত্বে আমরা গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করব। বিএনপি ছাড়া বাংলাদেশে কোনো বিকল্প নেই। বিএনপি ক্ষমতায় আসবেই। সেজন্য ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। পরাজিত শক্তিকে আর আসতে দেয়া হবে না।’
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে বিএনপি চেয়াপারসনের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া বলেন, ‘শহীদ জিয়ার বিকল্প কেউ নেই। ওনার ইতিহাসের শেষ নেই। তিনি দেশের মানুষকে জাতীয়তাবাদী শক্তি দিয়েছেন। তিনি সকলকে গ্রহণ করেছেন। তিনি আমাদের অনুপ্রেরণা।’
বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক একাডেমির উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মো. উমর ফারুকের সভাপতিত্বে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা বাবুল আহমেদ, সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।