চলমান ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক্যের টানাপোড়েনের মধ্যেই বেনাপোল বন্দরের সাথে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি বাণিজ্য সহজীকরণে কার্গোভেহিকেল টার্মিনাল উদ্বোধনের ১৩ দিন পর এবার খুলে দেওয়া হয়েছে ভারত গেট। এতে একসাথে চার লেনে পণ্য পরিবহনের সুযোগ মিলেছে। আগে দুই লেনে পণ্য পরিবহনে যানজটে দির্ঘ সময় লাগতো। এ ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন বাণিজ্য সম্প্রসারণে আগামীতে বড় ভূমিকা রাখবে বলছেন সংশিষ্টরা।
বাণিজ্যক সংশিষ্টরা জানান, দেশে সরকার অনুমোদিত ২৪টি স্থল বন্দরের মধ্যে সচল আছে ১৩টি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্যের চাহিদা বেনাপোল ও ভারতের পেট্রাপোল বন্দর পথ। তবে দুর্বল অবকাঠামো থাকায় চাহিদা মত পণ্য আমদানি করতে পারতেন না ব্যবসায়ীরা। এক্ষেত্রে তাদের দাবি ছিল বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরে উন্নয়নের।
অবশেষে দুই দেশের সরকার বাণিজ্যিক গুরুত্ব বিবেচনা করে হাত দেয় অবকাঠামো উন্নয়নে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আমদানি-রফতানির পরিমাণ কমলেও বাণিজ্য সম্প্রসারণে দুই দেশের সীমান্তে একের পর এক অবকাঠামোমূলক উন্নয়নে কাজ চলছে। ৩২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪১ একর জড়িতে নির্মিত কার্গোভেহিকেল টার্মিনালটি ইতিমধ্যে গত ১৪ নভেম্বর উদ্বোধন করেন অন্তর্বর্তীকালিন সরকার। আর গতকাল এই টার্মিনালের সাথে শূন্য রেখায় নির্মাণ করা ফোর লেনের ভারতীয় গেট খুলে দেয় পেট্রাপোল বন্দর কর্তৃপক্ষ। এতে ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাক মাত্র দ্রুত সময়ে পার হয়ে আসছে বেনাপোল বন্দরে এবং একই সময়ে রফতানি পণ্য যাচ্ছে ওপার পেট্রাপোল বন্দরে।
ভারতীয় পণ্যবাহী ট্রাকচালক অনিক দাস বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) সকালে পণ্যবাহী ট্রাক নিয়ে এপারে পৌঁছে অনুভুতি জানান, শূন্য রেখায় ফোর লেনের গেট চালু করে দেওয়ায় সহজে বন্দরে ঢুকতে পারছি। আশাকরি আগামীতে আমদানি ও রফতানির পরিমাণ বাড়বে। তবে বৃহৎ দুই টার্মিনালে হিন্দু-মুসলিমের জন্য ধর্মীয় উপাসনালয় থাকলে ভাল হতো।
বেনাপোল আমদানি-রফতানি সমিতির সেক্রেটারি জিয়াউর রহমান জানান, আগে দুই লেন সড়কে পণ্যবাহী ট্রাক বন্দরে প্রবেশে যানজটে দীর্ঘ সময় লাগতো। এখন বাণিজ্যিক সুবিধা বাড়ায় বর্তমানে প্রতিদিন এ পথে আমদানির পরিমাণ ৪০০ থেকে ৫০০ ট্রাকের মত। ভারতে রফতানি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ ট্রাকের কাছাকাছি।
বেনাপোল স্থলবন্দরের সহকারী পরিচালক কাজী রতন জানান, বুধবার সকালে কাস্টমস, বিজিবি ও বিএসেফের উপস্থিতিতে ভারতীয় গেট চালু করা হয়েছে। এই গেল চালু বাণিজ্য সম্প্রসারণে বড় ভূমিকা রাখবে। বর্তমানে বছরে এ রুটে আমদানি পণ্য থেকে সরকারের রাজস্ব আসে ৭ হাজার কোটি টাকা। সামনের বছর এর পরিমাণ দ্বিগুণ বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বৈধ পণ্যের সাথে কোনো নিষিদ্ধ পণ্য যাতে প্রবেশ না করে শূন্য রেখার ওপারে যায় সেজন্য বিজিবি, বিএসএফ ও বন্দরের নিরাপত্তা কর্মীরা কাজ করছেন।