এ বছর ভারতের অন্যতম আলোচিত ঘটনা দেশটির প্রাক্তন প্রতিমন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ বাবা সিদ্দিকীর খুন। গত ১২ অক্টোবর বান্দ্রা ইস্টে ছেলে জিশান সিদ্দিকীর অফিসের কাছে গুলি করে খুন করা হয় তাকে। এই রাজনীতিবিদের হত্যার পেছনে হাত রয়েছে আলোচিত বিষ্ণোই গ্যাংয়ের, এমনটাই ধারণা করে পুলিশ। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরাও খুনের দায় স্বীকার করেছিলেন।
এবার পুলিশের প্রতিবেদনও জানান দিচ্ছে সেই তথ্য। মুম্বাই পুলিশের তদন্ত অনুসারে, সালমানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণেই খুন হতে হয়েছে বাবা সিদ্দিকীকে। সিদ্দিকীর খুনের ঘটনার আড়াই মাস পর এমন কথাই জানাচ্ছে মুম্বই পুলিশ। বান্দ্রা পূর্বে বস্তি পুনর্বাসন কর্তৃপক্ষে (এসআরএ)-এর প্রকল্প নিয়ে বিরোধ কোনওভাবেই এই খুনের আসল কারণ নয়।
বাবা সিদ্দিকী খুনের ঘটনায় এমনটাই জানাচ্ছে সিটি ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এই মামলায় আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া ২৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিতে চলেছে পুলিশ। বাবা সিদ্দিকীর খুনের ঘটনা প্রসঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে, বাবা সিদ্দিকির ছেলে জিশানের অভিযোগ অনুযায়ী আমরা খুনের ঘটনার তদন্ত করেছি। তবে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে ঝামেলার কারণে এই খুন হয়নি।
এ ধরনের বিরোধের কারণে খুন হওয়ার কোনো প্রমাণ আমরা পাইনি। যদিও আমরা কয়েকজন ডেভেলপারের বক্তব্য রেকর্ড করেছি, কিন্তু তেমন কিছুই বের হয়ে আসেনি। যদিও আমরা যেকোনও একটির উপর নির্ভর করছি না। সন্দেহভাজন, শুভম লোনকার ওরফে শুভ, গুলি চালানোর দুদিন পর দায় স্বীকার করে সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্টে আপলোড করেছেন।’
সিদ্দিকীর ছেলে জিশানের এক্স হ্যান্ডেলে একটি পোস্টের পরে প্রাথমিকভাবে এই খুনে বস্তি পুনর্বাসন প্রকল্প নিয়ে ঝামেলার বিষয়টিও খুনের কারণ হতে পারে বলে সন্দেহ করা হয়েছিল।
জিশান সরকারি কর্মকর্তাদের কাছেও এই ‘এসআরএ’ প্রকল্প সম্পর্কিত ইস্যুটি উত্থাপন করেছিলেন। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টেও তিনি এমনই দাবি করেছিলেন যে তার বাবা দরিদ্রদের জীবন এবং ঘররক্ষা করতে গিয়েই মারা গিয়েছেন। তবে এখন পুলিশ এই তত্ত্বের কথা সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছে।
এর আগে, গত ১৪ এপ্রিল সালমান খানের বাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল বিষ্ণোই গ্যাংয়ের দুবৃত্তরা। এরপর বাবা সিদ্দিকিকে হত্যা করা হয়। বিষ্ণোই গ্যাংয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সালমান খানের সঙ্গে ঘনিষ্ট সবারই এই পরিণতি হবে।
এখন পর্যন্ত নিয়ে সিদ্দিকী খুনের মামলায় ২৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। সন্দেহভাজনদের একজন শুভম লোনকার এর আগে দাবি করেছিলেন যে এই খুনের পিছনে বিষ্ণোই গ্যাং-এর হাত ছিল। লরেন্স বিষ্ণোইয়ের ভাই আনমোল বিষ্ণোই এ খুনের দায়ে অভিযুক্ত। তিনি এখন কানাডায় লুকিয়ে আছেন। যদিও পুলিশ তাকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।