সুষম খাদ্যের ৬ টি উপাদানের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে খাদ্যউপাদান নিয়ে ভীতি কাজ করে সেটি হলো স্নেহ বা চর্বি। এর পেছনে রয়েছে বেশ প্রচলিত একটি ভ্রান্ত ধারণা। তা হলো- চর্বি শরীরের জন্য ক্ষতিকর। তবে এই ধারণা সঠিক নয়। শরীরের সকল কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে চর্বিও প্রয়োজন। শুধু পুষ্টি্ই যথেষ্ট নয়। অনেক ভিটামিন ও উপকারী উপাদান চর্বিতে দ্রবণীয়। সেসব উপাদানের কার্যকারিতার জন্য চর্বিও প্রয়োজন।
বিজ্ঞান ঘাটলে জানা যায়, বিভিন্ন ধরনের চর্বি আসলে শরীরের বিভিন্ন ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রয়োজন। উপকারী সে্নহজাতীয় খাবার সঠিক পরিমাণে খাওয়া হলে তা হৃদপিন্ড, মস্তিষ্ক এবং কোষের মেমব্রেনের কাজকে তরান্বিত করে। স্নেহ বা চর্বি আমাদের শরীরকে চালানোর মতো শক্তি ও তাপ উৎপন্ন করে। এছাড়া ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই এবং ভিটামিন কে- শোষণ করতে এবং ধরে রাখতে সাহায্য করে। তাই সঠিক পরিমাণে সঠিক চর্বি গ্রহণ করা না হলে শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রমের ভারসাম্যে ব্যাঘাত ঘটে।
তবে সঠিক চর্বি কোনগুলো তা কিভাবে বুঝবেন? চর্বি মূলত ভালো চর্বি আর খারাপ চর্বি হিসেবে বিবেচিত হয়। এই ভাল এবং খারাপ চর্বির মধ্যে পার্থক্য বোঝা জরুরি। ভাল চর্বি বা অসম্পৃক্ত চর্বিতে মনোস্যাচুরেটেড এবং পলিআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে। এই ফ্যাটগুলো খারাপ কোলেস্টেরল (এলডিএল) কমাতে পারে। এছাড়া হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সহায়তা করতে পারে। ভালো চর্বি অলিভ অয়েল, বাদাম এবং চর্বিযুক্ত মাছে পাওয়া যায়।
অন্যদিকে খারাপ চর্বি হল ট্রান্স ফ্যাট এবং উচ্চ মাত্রার স্যাচুরেটেড ফ্যাট। আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে অনেক প্রক্রিয়াজাত খাবারে ট্রান্স ফ্যাট পাওয়া যায়। উচ্চতর এলডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা এবং হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। মাখন, লাল মাংস, পনিরজাতীয় খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে বিধায় এসব খাবার পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
যদিও সব স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমানভাবে ক্ষতিকারক নয়। ইউএসডিএ-র পরামর্শ অনুসারে, প্রতিদিনের খাবারে গৃহীত ক্যালোরির শতকরা ১০ ভাগের কম স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকলে তা ঝুঁকিমুক্ত।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া