খাগড়াছড়িতে পানি কমায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট তীব্র হচ্ছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) বিকেল পর্যন্ত খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা সদর, মহালছড়ি ও পানছড়ি সদরে বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির খবর পাওয়া গেছে। তবে পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় রামগড়ের নিম্নাঞ্চল ও দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের বেশ কিছু গ্রাম এখনও পানিবন্দী। এদিকে, স্থানীয় প্রশাসনসহ বিভিন্ন সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ত্রাণ কার্যক্রম চললেও প্রত্যন্তাঞ্চলে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট রয়েছে বলে তথ্য মিলছে।
খাগড়াছড়ি সদরের চেঙ্গী নদীতে গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদিন প্রবল স্রোত থাকায় নদী অতিক্রম করে অনেক এলাকায় ত্রাণ পৌঁছানো যায়নি। এসব অঞ্চলে আজ সকাল থেকে নানা রকম শুকনো-রান্না করা খাবার, ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও বিশুদ্ধ পানি নেয়া হচ্ছে। এর পাশাপাশি, স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহিনী, বিজিবি, বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী, পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এ সংকটকালে মানবিক সহায়তায় কাজ করছেন বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।
এদিকে, বৃহস্পতিবারের বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বসতবাড়ি, কৃষি-মৎস্য খামার ও গ্রামীণ যোাগাযোগ কাঠামোর। সরেজমিনে জেলা সদরের দক্ষিণ গঞ্জপাড়া ঘুরে দেখা যায় ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপক চিত্র। কোথাও বসত ভিটার উপর পড়ে আছে মাথা ঘোষার ছোট নীড়, কোথাও ভেসে গেছে পুরো বাড়ি। হঠাৎ বন্যার পানি ঢোকায় অনেক জীবন নিয়ে বের হলেও পানি নামার পর ফিরে এসে কিছু পাননি। আউশ আমন খেতের ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি সবজির খেত তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। কোথাও সড়কে তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত।
খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় খাগড়াছড়ি জেলার অধিকাংশ উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য নিরুপণে কাজ করছে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলো।
এদিকে শুক্রবার বিকেলে খাগড়াছড়ি সদরে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। পরিদর্শন শেষে তিনি বলেন, বন্যাদূর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।