ডাকবাক্সে তালা, চিঠি এখন শুধুই স্মৃতি

, জাতীয়

বর্ণালী জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর | 2024-10-16 14:09:36

একটা সময় খাকি পোশাক পরা ডাকপিয়নের সাইকেলের ক্রিং ক্রিং শব্দে সন্তানের চিঠির অপেক্ষায় অশ্রুসিক্ত চোখে পথ চেয়ে থাকতেন বাবা-মা। স্বামীর চিঠি পেতে প্রহর গুনতেন গ্রামীণ সরলা স্ত্রী। ভাঙা-ভাঙা লেখায় প্রেয়সীর চিঠি পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে অতি যত্নে আগলে রাখতেন প্রেমিক। বর্তমানে নেই চিঠির প্রচলন। ডাকবাক্সে ঝুলছে তালা, চিঠি এখন শুধুই স্মৃতি!

অতীতে দূর-দূরান্তে থাকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম ছিল চিঠি। আর চিঠি পৌঁছানোর মাধ্যম ছিল ডাকঘর। প্রযুক্তির উন্নয়নে এখন বিলুপ্তির পথে বাংলার ঐতিহ্য চিঠির প্রচলন।

কালের পরিক্রমায় নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার মধ্য দিয়ে কমতে থাকলেও আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন পড়ে থাকে শূন্য ডাকবাক্স। বর্তমানে সরকারি দপ্তর ছাড়া আর কারও চিঠি আসছে না ডাকঘরে। হাটবাজার আর অলিগলিতে জরাজীর্ণ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায় কিছু ডাকবাক্স। প্রযুক্তির অবদানে যুক্ত হয়েছে ইন্টারনেট। এতে করে মুহূর্তেই সম্ভব হচ্ছে তথ্য-আদান প্রদান।

সময়ের সাথে সাথে বদলে গেছে সেই লাল ডাকবাক্সে হলুদ খামে চিঠি ফেলানোর ধুম। এমনকি খাকি পোশাকের ডাকপিয়নের সাইকেলের বেলের শব্দও আর কানে আসে না।

ডাক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, রংপুর জেলাজুড়ে ৬৮টি ও মহানগরীর এলাকায় ১৮টি ডাকঘর রয়েছে। এই সেবার মাধ্যমে কম খরচে টাকা পাঠানোর জন্য ইলেকট্রনিক মানি ট্রান্সফার, কম সময়ে পার্সেল পাঠাতে পিডপোস্ট সেবা পাচ্ছেন গ্রাহকরা। তবে বর্তমানে প্রযুক্তির আশীর্বাদে ব্যক্তিগত চিঠি পাঠানোর প্রচলন হারিয় গেছে। লাল রঙের ডাকবাক্সটি ব্যবহৃত হচ্ছে সরকারি কাগজপত্র পরিবহনের। অতীতের ন্যায় এখন আর দাপ্তরিক কাজের নথি জমা দেওয়া ছাড়া ডাকঘরে আসে না মানুষজন।

কালের পরিক্রমায় বিলুপ্তি হয়ে হারিয়ে গেছে ব্যক্তিগত চিঠি আদান প্রদানে ডাকবাক্সের ব্যবহার। হলুদ খামে হাতের লেখা সেই চিঠির অনাবিল আনন্দের ভিন্ন অনুভূতি শুধুই সোনালী অতীত!

Related News