জুলাই বিপ্লবে পতিত স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের বিরুদ্ধে বান্দরবানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের দায়ের করা মামলায় একাধিক আসামিদের জামিন দিয়েছে বান্দরবান চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত।
বুধবার (১৭ অক্টোবর) আসামিরা আদালতে হাজির হলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শামসুদ্দিন তাদের জামিন প্রদান করেন। এঘটনায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে ছাত্র সমাজের মাঝে।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জামিনের প্রতিবাদ জানান বান্দরবানের ছাত্র সমাজ। এসময় তারা বলেন, ছাত্রদের রক্তের দাগ এখনও শুকায়নি আর এসময় আসামিদের জামিন দেয়ার বিষয়টি ছাত্র-জনতার রক্তের উপর দাঁড়িয়ে স্বৈরাচারের পতাকা উত্তোলনের শামিল।
তারা বলেন, সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ইতোমধ্যে আদালতে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ছাত্র সমাজের মামলায় গ্রেফতার একাধিক আসামিকে জামিন দিয়েছেন। এছাড়া মামলার অন্যান্য আসামিদের অতিদ্রুত জামিন করবেন বলে আদালতে বক্তব্য প্রদান করেন যা খুবই দুঃখ জনক। কারণ এসব আসামিরা জামিনে ছাড়া পেয়ে বাইরে এসে আবারও অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করবে। আসামিরা বর্তমান সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার চেষ্টা করবে বলেও দাবি করেন ছাত্ররা। এসময় তারা বিচারকের বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেয়ারও ঘোষণা দেন।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দরা আরও বলেন, বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ পুর্ণগঠন না হওয়ায় জেলা পরিষদের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে আর এতে সাধারণ জনগণ স্বাভাবিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের আওতায় ২৮টি ন্যাস্ত বিভাগ রয়েছে। তবে বান্দরবান জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা বর্তমানে পলাতক থাকায় এই বিভাগগুলোর কর্মকাণ্ড ব্যাহত হচ্ছে।
বক্তারা বলেন, প্রশাসনে তৎকালীন স্বৈরশাসকের নিয়োগকৃত বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদের দলীয় দোসররা এখনও বহাল তবিলতে থাকায় তারা বর্তমান সরকারকে বির্তকিত করতে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র করছে।
নেতৃবৃন্দরা সাংবাদিকসহ সাধারণ জনগণের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং একটি সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের পাশে ঐক্যবদ্ধভাবে থাকার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের বান্দরবান জেলা প্রতিনিধি আসিফ ইকবাল, মুহাম্মদ মুসা, হাবিব আল মাহমুদ, আশরাফুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সভাপতি আমিনুল ইসলাম বাচ্চু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিনারুল ইসলামসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জুলাই বিপ্লবের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা হামলার ঘটনায় দুটি মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় গ্রেফতার আসামি আবু তৈয়ব চৌধুরী ও মোশারফ হোসেনকে জামিন দিয়েছে আদালত। অপর একটি মামলার আসামি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আব্দুর রহিম চৌধুরীকেও জামিন দেন আদালত।