বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে প্রেমিকার অবস্থান

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কিশোরগঞ্জ | 2024-10-21 14:02:52

বিয়ের দাবিতে গত তিনদিন ধরে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন প্রেমিকা। দ্রুত সময়ে বিয়ে না করলে আত্মহত্যা করবেন বলেও হুমকি দিয়েছেন এই প্রেমিকা। প্রেমিকার এমন অনড় অবস্থানের কারণে বাড়ি থেকে লাপাত্তা প্রেমিক নাদিম মিয়া।

ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডিবের উত্তর কান্দাপাড়া এলাকার শাহজাহান মিয়ার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

প্রেমিক শাহজাহান মিয়ার ছেলে নাদিম মিয়া (২৬)। প্রেমিকা আফরিন বেগম (১৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শহরের মাইচপাড়া এলাকার আলমগীর মিয়ার মেয়ে।

রোববার (২০ অক্টোবর) রাতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়িতে উৎসুক জনতার ভীড় জমেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মেয়ে আফরিন বেগম ভৈরবে তার প্রেমিকের বাড়িতে চাচার ঘরে অবস্থান নেই। টানা ৩ দিন ধরে তিনি ওই বাড়িতেই অবস্থান করছেন।

প্রেমিকা আফরিন বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার যখন ১১ বছর তখন থেকে নাদিমের সঙ্গে সম্পর্ক। মোবাইল ফোনে তার সঙ্গে আমার যোগাযোগ ছিলো। এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ হয়। সে কখনো কখনো ব্রাহ্মণবাড়িয়া গিয়ে আমার সঙ্গে দেখা করতো। আবার আমিও অনেক সময় ভৈরবে এসে ঘুরে যেতাম। আমি ভৈরবে ঘুরতে আসলে সে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চাওয়ায় আমি বাধা দেই। কিন্তু সে জোরালোভাবে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। এভাবে আমাদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। আজকে ১৫ দিন যাবত নাদিমের সঙ্গে আমার কোন যোগাযোগ নেই। নাদিমকে আমি বিয়ের কথা বললে সে বলে বিয়ে করবে, কিন্তু গোপন রাখতে হবে। আবার বলে তোকে বিয়ে করবো না। ২০২২ সালে ৪ নভেম্বর আমার এক জায়গায় বিয়ে হয়। আমি ৩ দিন পর ফেরা যাত্রায় বাড়িতে এলে নাদিম আমাকে শ্বশুর বাড়ি যেতে নিষেধ করে। তখন আমি তার নিষেধ ও অভিমান বুঝে ওই সংসার ত্যাগ করি। এখন আমাকে সে বিয়ে করতে রাজি না। ১৫ দিন যাবত তার সাথে যোগাযোগ না থাকায় আমি তার বাড়িতে এসে উপস্থিত হয়েছি। ৩ দিন যাবত আমি এ বাড়িতে অবস্থান করছি। এখনো আমার বিষয়ে তারা কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আমার বাবা মা নাদিমের বাড়িতে রেখে গেছে। তারা আমাকে আর ফিরিয়ে নেবে না। এখন নাদিম বিয়ে না করলে আত্মহত্যা ছাড়া আমার কোন উপায় নেই।

এ বিষয়ে নাদিমের সঙ্গে ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করতে চাইলেও তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়।

এ ব্যাপারে নাদিমের বাবা শাহজাহান মিয়া বলেন, একমাস আগে ছেলেকে গালমন্দ করায় সে বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। আমি রাজমিস্ত্রির কাজ করে খাই। ছেলে বেকার বলে গালমন্দ করেছিলাম। এখন তার সঙ্গে আমার কোন যোগাযোগ নেই। তার মায়ের সাথে ২ দিন আগে শেষ কথা হয়। সে তার মাকে বলেছে তার বন্ধুরা ব্ল্যাক মেইল করে তাকে ফাঁসিয়ে দিয়েছে। আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি আত্মহত্যা করবো। এই বলে তার মোবাইল বন্ধ করে দেয়। ছেলেকে ফিরে পেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম। তাই মেয়েকেও কোন আশ্বাস দিতে পারছি না।

এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। আপনার মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Related News