সড়কে ১১ বছরে নিহত লক্ষাধিক, সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-10-21 15:16:24

আওয়ামী লীগ সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, চরম অব্যবস্থাপনা, চাঁদাবাজি ও নৈরাজ্যের কারণে গত ১১ বছরে সড়কে দুর্ঘটনায় এক লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন এক লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন।

২০১৪ সাল থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ১১ বছরে সড়কে ৬০ হাজার ৯৮০টি দুর্ঘটনায় এসব মানুষ হতাহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এমন অবস্থায় অন্যান্য জরুরি জনগুরুত্বপূর্ণ খাতের মতো পরিবহন খাত সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন বলে প্রস্তাব দেয় সংগঠনটি।

সোমবার (২১ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই তথ্য দেন। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৪ উপলক্ষে ‘সড়ক সেক্টরে সীমাহীন অব্যবস্থাপনা: দায়িত্ব নেবে কে?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বিগত সরকারের ১১ বছরের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তুলে ধরেন তিনি।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব জানান, ওবায়দুল কাদের পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, ভাড়া নৈরাজ্য, চাঁদাবাজি দুর্নীতি রোধে ব্যর্থ হওয়ায় সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হলেও সড়ক পরিবহন সেক্টরে ওবায়দুল কাদেরের প্রেতাত্মারা পদে বসে আছে।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও জানান, দেশের বিভিন্ন সড়কে ভয়াবহ যানজট বিশৃঙ্খলা থামাতে না পারলে বর্তমান সরকারকে ভয়াবহ খেসারত দিতে হবে। পরিবহন খাকে জঞ্জালমুক্ত করতে হলে সংস্কার প্রয়োজন। তাই জরুরি পরিবহন সংস্কার কমিশন গঠন করা প্রয়োজন।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে দেখা যায়, সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বিগত ২০১৪ সাল থেকে চলতি ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬০ হাজার ৯৮০ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১ লাখ ৫ হাজার ৩৩৮ জন নিহত এবং ১ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৭ জন আহত হয়েছেন। এই সময়ে গণপরিবহন সংকটে মোটরসাইকেলে যাতায়াতের কারণে ২০ হাজার ১২৪ টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩৭ হাজার ৫৫৩ জন নিহত ৪৬ হাজার ১৬৭ জন আহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ৩৯.৬৫ শতাংশ।

এছাড়া মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৩১.৭৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৭.৫৯ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২২.৫৪ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয় বলে জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি। আর সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫.৪৪ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.৮২ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.৮৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে। তবে সংগঠিত দুর্ঘটনার সিংহভাগই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় না। দুর্ঘটনা ও হতাহতের সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রুবায়েত ফেরদৌস জানান, শেখ হাসিনা যাওয়ার পরে দুই মাস হয়ে গেল, তাও কেন পণ্যের দাম কমল না? পরিবহন খাত কেন উন্নত হলো না এমন প্রশ্নও করেন তিনি।

তিনি আরও জানান, সড়কে রেলে যা হচ্ছে তা হত্যাকাণ্ড। এসবকে দুর্ঘটনা বলা যায় না। এগুলো কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড। সড়কে দুর্ঘটনা হওয়ার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। সড়ক ও দ্রব্যমূল্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শতভাগ ফেল করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

Related News