সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসক নিয়োগের জন্য ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস স্বাস্থ্য নিয়োগ পরীক্ষায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগ বঞ্চিত ১ হাজার ৯১৯ জনকে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী চিকিৎসকরা।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের অব্দুস সালাম হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকরা বলেন, ২০২১ সালে ৪২তম বিসিএসের ফলাফলে পর্যাপ্ত পদ না থাকায় ১৯১৯ জন চিকিৎসক দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ বঞ্চিত হয়ে আছেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও বৈষম্যের শিকার হয়ে আছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর নীতিগতভাবে দ্রুত ২ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা চাই ৪২তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ চিকিৎসকদের অগ্রাধিকার প্রদান করা হোক।
চিকিৎসকরা আরও বলেন, দেশে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে চরম চিকিৎসা সংকট রয়েছে। সাধারণ মানুষ বিশেষ করে গ্রামীন জনগোষ্ঠী তাদের মৌলিক অধিকার হিসেবে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার করছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসক না থাকায় রোগীরা যথাযত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।
সাধারন বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ উল্লেখ করে চিকিৎসকরা বলেন, বর্তমানে ৪৪তম, ৪৫তম এবং ৪৬তম বিসিএস প্রক্রিয়াধীন। ৪২তম বিসিএসের পরে আর কোন চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি। তাই দীর্ঘ প্রক্রিয়া এড়িয়ে দ্রুত নিয়োগ দিয়ে চিকিৎসা সংকট নিরসনের দাবি জানান তারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চিকিৎসকরা কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে চিকিৎসা চাহিদা বৃদ্ধি, মহিলা ও শিশুস্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য সেবায় বৈষম্য দূর করা এবং ৪২তম বিসিএসের উদ্দেশ্য সফল করার জন্য দ্রুত ন্যায্য নিয়োগের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে ডা. ফাতেমা আক্তার বলেন, আমরা লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় পাস করেছি অথচ আমাদের নিয়োগ বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। আমরা যৌক্তিক দাবি নিয়ে মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি। দেশের মানুষের চিকিৎসায় নিজেদের নিয়োজিত করতে আমরা প্রস্তুত আছি। তাই আমাদের দ্রুত নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে চিকিৎসকদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও এবি পার্টির আহ্বায়ক মেজর (অব:) অধ্যাপক ডা. আব্দুল ওহাব মিনার বলেন, নিয়োগ না পাওয়া এসব চিকিৎসকদের যোগ্যতার কোন অভাব নেই, তারা বিসিএস এ টিকেছে, তাহলে কেন তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না? এখানেতো কেউ নেই যে বিসিএস ফেইল করে বলছে তাদের নিয়োগ দিতে। যাদের চিকিৎসা কাজে ব্যস্ত থাকার কথা ছিলো, তারা বাধ্য হয়ে আজ সংবাদ সম্মেলনে এসেছে। বিসিএস পরীক্ষায় এসব চিকিৎসকরা পাশ করে আজ রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। তাদের দাবি যৌক্তিক। এটা রাষ্ট্রের, মন্ত্রণালয়ের ব্যর্থতা। স্বাস্থ্য উপদেষ্টাকে সুস্পষ্ট বার্তা দিতে চাই, আপনারা এসব ডাক্তারদের দ্রুত নিয়োগ দিন।