ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় জামাই ও শ্বশুরের পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষে নারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার হামিরদী ইউনিয়নের মুনসুরাবাদ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মুনসুরাবাদ গ্রামের ইলিয়াস মাতুব্বরের মেয়ে অন্তরা আক্তার (১৮) গ্রামের একটি কওমি মাদরাসায় পড়াশোনা করতো। এ সময় মাদরাসার পরিচালক ও শিক্ষক জাহিদ মোল্লার (৩৮) সাথে অন্তরার প্রেমের সম্পর্ক হয়। জাহিদের আগে আরও দুই স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান রয়েছে। বছর দেড়েক আগে জাহিদ মোল্লা তার মাদরাসার শিক্ষার্থী অন্তরাকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। অন্তরা হন জাহিদের তৃতীয় স্ত্রী। এ বিয়ে আজও মেনে নেয়নি অন্তরার বাবা ইলিয়াস মাতুব্বর। জাহিদ মোল্লার বড় ভাই আলমগীর মোল্লা হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নং ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য। জাহিদের তৃতীয় স্ত্রীর বাবা ইলিয়াস মাতুব্বরের চাচাতো ভাই বাবর আলী মাতুব্বর হামিরদী ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সাবেক সদস্য। এ কারণে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে অনেকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দুপুরে ইলিয়াস মাতুব্বরকে একা পেয়ে তার জামাতা জাহিদ মোল্লার চাচাতো ভাই রাসেল মোল্লা কটাক্ষ করে বলে, আমার ভাই জাহিদ তিন বিয়ে করেছে। আর একটা বিয়ে করিয়ে হালি (৪টি) পূরণ করবো।
এ বিষয়ে ইলিয়াস মাতুব্বর অপমান বোধ করে গ্রামে তার পক্ষের লোকজনকে জানায়। এ নিয়ে দুই পক্ষের তর্কবিতর্ক হয়। এরপর মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) বিকেলে মুনসুরাবাদ বাজারে ইলিয়াস মাতুব্বরকে মারধর করে জামাই জাহিদ মোল্লার লোকজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে। বুধবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে পুনরায় জামাই ও শ্বশুর পক্ষের লোকজন ঢাল, সড়কি, রামদা, ইটপাটকেল নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। দুই ঘণ্টাব্যাপী দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে গুরুতর দুইজনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, সংঘর্ষে গুরুতর আহত ইলিয়াস মাতুব্বরের চাচাতো ভাই কামরুল মাতুব্বরের স্ত্রী চম্পা বেগম (৩২) ও ইলিয়াস মাতুব্বরের ভাই রিয়াজ মাতুব্বরকে (৪৩) ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে ইলিয়াস মাতুব্বরের আরেক ভাই ইকলাস মাতুব্বর (৩৫)।
ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোকছেদুর রহমান বলেন, জাহিদকে তার ভাইয়েরা আরও একটি বিয়ে করাবে- এ কথা জাহিদের স্ত্রীর বাবা ইলিয়াস মাতুব্বরের সামনে বলা নিয়ে কথা কাটাকাটি, মারপিট ও সর্বশেষ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।