গত কয়েক বছর ধরে আলুর বাজার চড়া যাওয়ায় বগুড়ার কৃষকেরা আলু চাষে বেশি ঝুঁকে পড়ছে। এবার গত বছরের চেয়ে অধিক জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে, অন্যদিকে গত বছরের তুলনায় রোগ বালাই তেমন না থাকায় অধিক ফলনের আশা করছে কৃষক। ইতিমধ্যে আগাম চাষ করা আলু বাজারে বিক্রি শুরু হলেও দাম গত বছরের চেয়ে কম। তবে দাম কম হলেও কৃষকের লোকসান হচ্ছে না।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় ৬০ হাজার ৪৩৫ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়েছে। যেখানে গত বছর জেলায় আলু চাষ করা হয়েছিল ৫৫ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে এবং আলু উৎপাদিত হয়েছিল ১৩ লক্ষ মেট্রিক টন। জেলায় বীজ আলুসহ চাহিদা রয়েছে দুই থেকে আড়াই লক্ষ মেট্রিক টন আলুর।
মাঠ পর্যায়ের কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম চড়া যাচ্ছে। এ কারণে অধিক লাভের আশায় এ বছর অধিকাংশ কৃষক ফসল পরিবর্তন করে আলু চাষ করে। এ বছর আলু বীজের দাম বেশী হলেও ঘন কুয়াশা না থাকা এবং শীত কম থাকায় আলু ক্ষেতে রোগ বালাই কম।
বগুড়ার মহাস্থানগড় পাইকারি হাটে আগাম জাতের লাল পাকড়ি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা মণ। একই বাজারে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা মণ প্রতি বিক্রি হচ্ছে সাদা ডায়মন্ড জাতের আলু ।
শিবগঞ্জ উপজেলার রায়নগর গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, এ বছর এক বিঘা জমিতে আলু চাষে খরচ হয়েছে ২০ থেকে ২২ হাজার টাকা। আগাম জাতের লাল পাকড়ি উৎপাদন হচ্ছে বিঘা প্রতি ৩৫ থেকে ৪০ মণ। সাদা ডায়মন্ড আলু চাষে খরচ বিঘা প্রতি ২৫ হাজার টাকা। উৎপাদন হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ মণ। গত কয়েক বছর ধরে বাজারে আলুর দাম চড়া থাকায় কৃষক আমিনুল এ বছর চার বিঘা জমিতে আলু চাষ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাজারে দাম কম হলেও আলু চাষে কৃষকের লোকসান হবে না। কারণ, আলু গাছে রোগ বালাই না থাকায় এ বার গত বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশী হবে বলে আশা করি।
বগুড়া সদরের নুনগোলার গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ আলুর বাম্পার ফলনের আশাবাদী। তিনি বলেন, আগাম আলু চাষ করে অনেকেই লাভবান হচ্ছে। যারা
দেরিতে আলু চাষ করছেন তারা দাম কম পেলেও ফলন বেশী পাবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মতলুবুর রহমান বলেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর বগুড়ায় আলু চাষ বেড়েছে। আগামী এক মাস আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আলু ক্ষেতের কোন ক্ষতি হবে না। কৃষক ভাল ফলন পাবেন।