ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় এবছর ব্যাপক পরিমাণে শীতকালীন সবজির চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। বাজারে মৌসুমি সবজিগুলোর ব্যাপক চাহিদা থাকায় দামও চড়া। ফলে শীতকালীন এসব সবজি চাষে লাভের মুখ দেখছে কৃষকরা। এতে তাদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
কাঁঠালিয়া কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ হাজার ৫২১ হেক্টর জমি। আর উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ হাজার ৮১১ মেট্রিক টন।
উপজেলা কৃষি অফিস আরও জানায়, উপজেলার বাশঁবুনিয়া, দক্ষিণ কচুয়াসহ বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, লালশাক, শিম, লাউ, মুলাসহ প্রায় ২০ ধরনের সবজির আবাদ হয়েছে। কোন কোন জমিতে সবজি আবাদ ও পরিচর্যা ছাড়াও সবজি উত্তোলন শুরু করছেন কৃষকরা।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, আলু আবাদের পাশাপাশি সবজি চাষের দিকে বেশি ঝুঁকেছে কৃষকরা। এখন পর্যন্ত যারা শীতকালীন সবজি বিক্রি করেছে তাদের প্রত্যেকেই খরচ পুষিয়ে লাভবান হয়েছে। আর উৎপাদিত এসব সবজি কাঁঠালিয়া উপজেলা ছাড়াও আশপাশের উপজেলার বাজারগুলোতে বিক্রয় করা হচ্ছে। চাষিরা মনে করেন এবার সব ধরনের সবজি চাষে বেশি লাভ হয়েছে ।
দক্ষিণ কচুয়া গ্রামের সবজি চাষি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, এবার ১’শ শতাংশ জমিতে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ করেছি। এর মধ্যে আছে শিম, লাউ, ফুলকপি, জালি, মিষ্টি কুমড়া ও টমেটো।
বাঁশবুনিয়া এলাকার মো. স্বপন হাওলাদার বলেন, ৩৫ শতক জমিতে দেশি জাতের শিমের চাষ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। গত দেড় মাসে শিম বিক্রি করে ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছি। এভাবে আরও তিন মাস সবজি বিক্রি করতে পারব।
দক্ষিণ চেচঁরী গ্রামের আরেক চাষি মো. রুস্তম হাওলাদার বলেন, এবার ৫০ শতাংশ জমিতে সাড়ে ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে মরিচ, বেগুন, শিম, ফুলকপি, লাউ, লালশাক ও টমেটো বুনেছি। সকজি চাষে আমি লাভের আশা দেখছি।
কাঁঠালিয়া সদর ফাজিল মাদরাসার সিনিয়র শিক্ষক মো. নুর-ই-আলম ছিদ্দীকী জানান, এ উপজেলা সব ধরনের সবজি চাষের জন্য বিখ্যাত। প্রতিবছর উপজেলায় বিপুল পরিমাণ সবজির চাষ হয়। তাতে উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে এসব সবজি দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। এছাড়া উৎপাদিত সবজির দামও ভালো পাওয়া যায়। সে জন্যই এ বছর কৃষকরা শীতকালীন সবজি আবাদে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান বিন ইসলাম জানান, উপজেলায় আগাম শাক-সবজি উৎপাদনে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। কৃষিবিভাগ পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। উপজেলায় শাক-সবজি চাষ কীভাবে বাড়ানো যায়, সে লক্ষ্যে পরামর্শের পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি বিভাগ সব সময় কৃষকদের পাশে আছে। যদিও এবার বন্যা, ভারী বৃষ্টি এবং জলাবদ্ধতার জন্য দেরি হয়েছে। তবে সব মিলিয়ে ধকল কাটিয়ে কৃষকেরা এগিয়ে যাচ্ছে।