মাদারীপুরের কালকিনি ও শিবচরে পৃথক ঘটনায় দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের ৯ দিন পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শিবচরের রেললাইনের পাশ থেকে এক ভ্যান চালক ও নিখোঁজের ৪ দিন পর কালকিনির একটি ডোবা থেকে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, জেলার কালকিনিতে পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় হিরন নেছা (৬৫) নামে এক নিখোঁজ বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। হিরন নেছা পৌর এলাকার দক্ষিণ রাজদী গ্রামের কালাম মৃধার স্ত্রী। একই সময় শিবচরের মাদবরেরচর এলাকার রেললাইনের পাশে মুন্না মির্জা (১৭) নামে এক তরুণের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত মুন্না ফরিদপুরের নগরকান্দা এলাকার রাজ্জাক মির্জার ছেলে। কয়েক বছর ধরে তিনি শিবচরের কলেজ রোড এলাকার গুয়াতলা গ্রামে ভাড়া থাকতেন। পেশায় তিনি একজন ভ্যান চালক।
নিহত মুন্নার পরিবার জানায়, গত ১৯ জানুয়ারি (শনিবার) বিকেলে ভ্যান নিয়ে মুন্না বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের পর ২১ জানুয়ারি পরিবারের পক্ষ থেকে শিবচর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করা হয়। নিখোঁজের পর থেকে মুন্নার খোঁজে পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন স্থানে সন্ধান চালালেও তার কোন খবর পায়নি।
এরপর, মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার মাদবরেরচর ইউনিয়নের বাখরেরকান্দি এলাকার রেললাইনের পাশে কাশবনের মধ্যে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা। লাশের পরনে জিন্স প্যান্ট এবং গায়ে টিশার্ট রয়েছে। স্থানীয়রা খবর দিলে ঘটনাস্থলে শিবচর থানা পুলিশ ও ভাঙ্গা রেলওয়ে পুলিশের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে সন্ধ্যার পর লাশটি উদ্ধার কাজ শুরু করে। লোক মারফত লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন নিখোঁজ মুন্নার ভাই মো: সবুজ মৃধাসহ পরিবারের সদস্যরা। লাশটি দেখে মুন্নার লাশ বলে তারা শনাক্ত করেন। নিখোঁজ মুন্না ফরিদপুর জেলার নগরকান্দা উপজেলার শংকরপাশা এলাকার আ: রাজ্জাক মৃধার ছেলে। সে পরিবারের সদস্যদের সাথে শিবচরের কলেজ রোড এলাকায় ভাড়া থাকতো।
নিহত মুন্নার ভাই মো: সবুজ মৃধা বলেন, আমাদের ধারণা ভ্যান চুরির জন্যই আমার ভাইকে মেরে ফেলা হয়েছে। এর আগেও একবার মুন্নার একটি ভ্যান চুরি হয়েছিল। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
অপরদিক বৃদ্ধা হিরন নেছা বেগম গত শনিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোজাখুজি শেষে তার কোন সন্ধান না পেয়ে বৃদ্ধার বড় ছেলে লিটন মৃধা বাদি হয়ে কালকিনি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কালকিনি পৌর এলাকার নতুন পানের হাটের পূর্ব পাশে ডোবার মধ্যে হিরন নেছার ভাসান্ত লাশ দেখতে পায় স্থানীয়রা। পরে থানা পুলিশ খবর পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করেন।
নিহত হিরন নেছার ছেলে লিটন মৃধা জানান, আমার মা নিখোঁজের ঘটনায় আমি থানায় অভিযোগ করেছি। আমি দোষীদের বিচার চাই।
এ ব্যাপারে কালকিনি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নয়ন জানান, ডোবা থেকে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শিবচর থানার ওসি মো. রতন শেখ বলেন, উদ্ধারকৃত লাশের চেহারা বিকৃত হয়ে গেছে। তবে পড়নের পোষাক দেখে নিখোঁজ মুন্নার লাশ বলে পরিবার শনাক্ত করেছে। আমরা লাশটি উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছি। মূল রহস্য উদ্ঘাটনে পুলিশ কাজ করছে।