সুপার্ব! অনবদ্য! অসাধারণ!
এমন আরো অনেক গুণবাচক শব্দমালা আপনি যোগ করতে পারেন জাকের আলি অনিকের ৯১ রানের ইনিংসের পাশে। তার দুর্দান্ত এই হাফসেঞ্চুরির কল্যাণে জ্যামাইকা টেস্ট এখন জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংস শেষ হয় ২৬৮ রানে। ম্যাচ জিততে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট দাড়িয়েছে ২৮৭ রানের। চতুর্থদিন লাঞ্চের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১ উইকেট হারিয়ে ২৩ রান তুলে। তাইজুল তার প্রথম ওভারেই উইকেট পান।তখনো ম্যাচ জয় থেকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৬৪ দূরে। হাতে সময় বাকি দেড়দিনের বেশি।
জ্যামাইকার স্যাবাইনা পার্কের এই মাঠে শেষ ইনিংসে রান তাড়া করে ম্যাচ জয়ের রেকর্ড ২১২ রানের। এই রেকর্ড জানাচ্ছে, জ্যামাইকায় জিততে হলে রান তাড়ার নতুন ইতিহাস গড়তে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। কাজটা নেহাৎ সহজ কিছু নয়। অন্তত এই টেস্টে উভয় দলের ব্যাটিংয়ের অবস্থা সেটাই জানাচ্ছে। প্রথম ইনিংসে এই উইকেটে ওয়েস্ট ইন্ডিজ শেষ হয়ে যায় মাত্র ১৪৬ রানে। নাহিদ রানা সেই ইনিংসে পান ৬১ রানে ৫ উইকেট। সঙ্গী বোলাররাও দারুণ বোলার করেন। প্রথম ইনিংসের সেই বোলিং বীরত্ব আরেকবার দেখাতে পারলে জ্যামাইকায় থেকে জয় নিতে ফিরতে পারবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের ২৬৮ রানের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট হাতে নায়ক মূলত একজনই-জাকের আলি। ১০৬ বলে তার ৯১ রানের ইনিংসের গল্পটা অনেক দিন আলোচনায় থাকবে। ব্যাট হাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের পুরো বোলিংকে সাধারণ মানে পরিণত করেছিলেন তিনি এদিন। পুরোপুরি ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট চালান তিনি। লেজের সারির ব্যাটারদের নিয়ে সাহসিক কায়দায় সামনে বাড়েন জাকের আলি। ৮ বাউন্ডারি ও ৫ ছক্কায় সাজানো ছিল তার এই ইনিংস। টেস্টে টানা তিন ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি হাঁকালেন তিনি। ৮০ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় নিজের হাফসেঞ্চুরি পুরো করেন জাকের। দারুণ এক হুক শটে ছক্কা হাঁকিয়ে হাফসেঞ্চুরির মাইল ফলকে পৌছান। এরপরই ব্যাট হাতে যেন ঝড় তুললেন। পরের ২৬ বলে তার ব্যাটে এলো ৪১ রান। তাতে ছক্কা ছিল ৪টি, বাউন্ডারি ৩টি।
টেস্ট ম্যাচের ব্যাটিংকে ঠিক যেন টি- টোয়েন্টি বানিয়ে দিলেন জাকের আলি! চতুর্থদিনের সকালে বাংলাদেশ নিজেদের আগের দিনের সঞ্চয়ের সঙ্গে যোগ করে ৭৫ রান। যেখানে জাকের আলীর একারই সংগ্রহ ৬২ রান। বাকি ৫ ব্যাটার মিলে করেন ১৩ রান!
এই হিসেবই জানাচ্ছে জাকের আলির একক ব্যাটিং বীরত্বের কাহিনী।