ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে ৮৩ জন নারী উদ্যোক্তার সফলতা উদযাপন করা হয়েছে। অ্যাকাডেমি ফর উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস (এডব্লিউই) প্রোগ্রামের সমাপনী অনুষ্ঠানে নারী উদ্যোক্তাদের এই সফলতা উদযাপন করা হয়।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোলডিন, পাবলিক এনগেজমেন্টের ডিরেক্টর স্কট হার্টম্যান, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ ও রেজিস্ট্রার ডেভিড ডাউল্যান্ড।
অনুষ্ঠানে ব্যবসায়িক ধারণার প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের জন্য ত্রিশ হাজার মার্কিন ডলার অনুদানের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে অ্যাকাডেমি ফর উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস প্রোগ্রামের কোহর্ট ১ এবং কোহর্ট ২ এ অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৬ জন বিজয়ী নারী উদ্যোক্তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ এবং মেগান বোলডিন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রফেসর এবং সেন্টার ফর এন্টারপ্রেনারশিপ (সিইডি) এর অ্যাডভাইজার মতিন সাদ আব্দুল্লাহ, অফিস অব কমিউনিকেশন্স এর ডিরেক্টর খায়রুল বাশার, এবং সিইডি এর জয়েন্ট ডিরেক্টর আফসানা চৌধুরী।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের সহায়তায় অ্যাকাডেমি ফর উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস প্রোগ্রামটি উদ্যোক্তাদের দক্ষতা উন্নয়ন, অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরিতে সহায়তা এবং মেন্টরশিপের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। অংশগ্রহণকারীরা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে ব্যবসায়িক পরিকল্পনা তৈরি করতে শিখেছেন, আইডিয়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং বিশেষজ্ঞদের দিকনির্দেশনা পেয়েছেন।
মার্কিন দূতাবাসের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স মেগান বোলডিন নারীদের এই সফল উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেছেন, আপনারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারী উদ্যোক্তাদের জন্য পথ তৈরি করছেন এবং প্রমাণ করছেন যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এই প্রোগ্রাম কেবল উদ্যোক্তা উন্নয়ন নয়, বরং এটি অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নেরও প্রতীক। যখন নারীরা সফল হয়, তখন তাদের পরিবার, সমাজ এবং অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ তার বক্তব্যে বলেন, আগামীর যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি, উদ্ভাবনে সহায়তা এবং উদ্যোক্তা তৈরি করাই ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির লক্ষ্য। সেই সাথে তিনি নারী নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ উন্নয়নের বিষয়েও গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সুযোগ তৈরি, প্রতিবন্ধকতা দূর করা এবং বিভিন্ন উদ্যোগের ক্ষেত্রে লিঙ্গ সমতা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে আমরা অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং উদ্ভাবনী উদ্যোক্তা পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই এবং টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই। এই অনুষ্ঠানে একটি মেলা ও প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়, যেখানে এই প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীরা তাদের তৈরি পণ্য প্রদর্শন এবং বিক্রয় করেন। এই মেলা ও প্রদর্শনীতে নিজেদের পণ্য প্রদর্শনের মাধ্যমে উদ্যোক্তারা এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞান সবার সামনে তুলে ধরেন।
অ্যাকাডেমি ফর উইমেন এন্ট্রাপ্রেনারস ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর এন্ট্রাপ্রেনারশিপ ডেভেলপমেন্ট এর সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। এই প্রোগ্রামটি দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর নারীদের ক্ষমতায়নে কাজ করছে। এ উদ্যোগ নারীদের বিভিন্ন দক্ষতা প্রদান করছে যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন সহায়তা করছে।
প্রো ভাইস-চ্যান্সেলর বলেন, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের একটি শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি উদ্ভাবন, নেতৃত্ব এবং অন্তর্ভুক্তির ওপর জোর দেয় এবং গবেষণা, দক্ষতা বৃদ্ধির প্রোগ্রাম এবং উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের উন্নয়নকে সমর্থন করে। সেই সাথে উদ্যোক্তা উন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সামাজিক-অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে চলেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। নারী উদ্যোক্তাদের এই সাফল্য বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তাদের অবদানকে আরও বিস্তৃত করার পথ খুলে দিল।