জমকালো আয়োজনে শেষ হলো দেশের সবচেয়ে বড় ভিএলএসআই প্রতিযোগিতা ভিএলএসআইথন ২.০ এর চূড়ান্ত পর্ব।
বৃহস্পতিবার (১২ ডিসেম্বর) রাজধানীর আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিজয়ী ছয় দলকে পুরস্কৃত করা হয়।
দেশের শীর্ষস্থানীয় ২০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৩৫ জন তরুণ প্রতিযোগীদের ৮২টি দল এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। আরটিএল (রেজিস্টার ট্রান্সফার লেভেল) ডিজাইন এবং অ্যানালগ ডিজাইন-এই দুটি ক্যাটাগরিতে ভিএলএসআইথন ২.০ তে অংশগ্রহণ করেন প্রতিযোগীরা। চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রতিটি ক্যাটাগরি থেকে তিনটি টিম চ্যাম্পিয়ন, প্রথম রানার আপ এবং দ্বিতীয় রানার আপ হিসেবে পুরস্কৃত হন।
দেশের শীর্ষস্থানীয় সেমিকন্ডাক্টর প্রতিষ্ঠান উল্কাসেমি আয়োজিত এবং আহছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অফ ইইই (ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং) এবং আইইইই স্টুডেন্ট ব্রাঞ্চের যৌথ প্রযোজনায় অনুষ্টিত হয় ভিএলএসআইথন ২.০। আরটিএল ডিজাইন ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে টিম 'রুয়েট ডিজিটাল ডায়নামস’। প্রথম রানার আপ হয়েছে বুয়েটের টিম 'আসকি’ এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে টিম ‘রুয়েট থ্রিইডিয়টস’।
অপরদিকে অ্যানালগ ডিজাইন ক্যাটাগরিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে টিম ‘হেলিকপ্টার’, প্রথম রানার আপ হয়েছে ‘টিম এক্সপোনেনশলস’ এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছে টিম ‘আসকি’। বিজয়ী দলকে মোট তিন লাখ টাকা মূল্যমানের পুরস্কার প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে উল্কাসেমির সিইও এবং প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এনায়েতুর রহমান বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এ বিষয়ে উলকাসেমির সিইও বলেন, "ভিএলএসআইথন ২.০ তে আমাদের তরুণ প্রকৌশলীরা প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনশীলতার ক্ষেত্রে দারুণ সম্ভাবনা এবং দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। প্রযুক্তি, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), এই সেমিকন্ডাক্টর চিপের ওপর নির্ভরশীল। সক্ষমতার এক নতুন রূপ সেমিকন্ডাক্টর। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির নেতৃত্ব যাদের হাতে থাকবে, সেই দেশগুলোই শাসন করবে পৃথিবী।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টরের বাজার ৫০ হাজার কোটি ডলার। ২০৩০ সালে মধ্যে যা ফুলেফেঁপে দ্বিগুণ আকার নেওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। চীন ৪ হাজার ৭৫০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে চিপ কারখানা নির্মাণের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে এরই মধ্যে। আমাদের সামনে দারুণ সুযোগ। উল্কাসেমি এদেশের সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে আন্তর্জাতিক মানে পৌঁছে দিতে কাজ করে যাচ্ছে। আমাদের বিশ্বাস, ২০৩০ সালের মধ্যে এই শিল্পকে মাল্টি বিলিয়ন ডলারের বাজারে পরিণত করা সম্ভব। সঠিক সরকারি ও বেসরকারি সহায়তা পেলে, এই খাতের আয় ১ বিলিয়ন ডলার থেকে ১৬ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে। এতে আমাদের এই তরুণ প্রকৌশলীদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।‘
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ আশরাফুল হক বলেন, ‘উল্কাসেমি আয়োজিত ভিএলএসআইথন ২.০ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমাদের তরুণ প্রকৌশলীরা অসাধারণ উদ্ভাবনী দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। এই প্রতিযোগিতা শুধু তাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতার স্বীকৃতি নয়, বরং বাংলাদেশের ভবিষ্যত প্রযুক্তির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার প্রথম পদক্ষেপ। আমরা অত্যন্ত গর্বিত যে উল্কাসেমি আমাদের তরুণ প্রজন্মের মাধ্যমে দেশের প্রযুক্তি খাতকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করে যাচ্ছে।‘