অঞ্জনাকে শেষবার দেখে সাবিনা বললেন, ‘আমরা অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু ছিলাম'
কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সদ্য প্রয়াত চিত্রনায়িকা অঞ্জনার বন্ধুত্বের কথা সবারই জানা। বহুবার তাদের দুরন্ত বন্ধুত্বের গল্প গণমাধ্যমে খবর হয়েছে। সর্বশেষ সাবিনা ইয়াসমিন যখন অসুস্থ হয়ে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন ছিলেন, তখন বন্ধুর উদ্দেশে অঞ্জনা লিখেছিলেন এক খোলা চিঠি!
গেল বছরে লেখা সেই খোলা চিঠিতে অঞ্জনা সাবিনা ইয়াসমিনকে সম্বোধন করেছিলেন “প্রাণের বান্ধবী” হিসেবে। লিখেছিলেন দুজনের জীবনের মধুময় স্মৃতির কথা। অঞ্জনা লিখেছিলেন,“আমরা দুটি মানুষ হলেও আমাদের বন্ধুত্বে ছিল একটি প্রাণ।” সর্বোপরি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসার আহ্বান ছিলো অঞ্জনার ওই চিঠিতে!
সুস্থ হয়ে সাবিনা ইয়াসমিন ঠিকই ফিরলেন, কিন্তু চলে গেলেন ‘প্রাণের বান্ধবী’ অঞ্জনা। শুক্রবার দিবাগত রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রয়াত হন তিনি। তার মৃত্যুর খবরে স্বভাবতই ভেঙে পড়েছেন কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন।
আজ (শনিবার) দুপুরে চ্যানেল আই চত্বরে চিত্রনায়িকা অঞ্জনাকে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়। অনুষ্ঠিত হয় নামাজে জানাজাও। যেখানে ‘প্রাণের বান্ধবী’কে শেষ বিদায় জানাতে উপস্থিত হয়েছিলেন কিংবদন্তী শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। অসুস্থতার পর এবারই প্রথম তিনি ক্যামেরার সামনে এলেন, কারণ অঞ্জনা তার এতোটাই আপন ছিলেন।
চ্যানেল আই অনলাইনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে অঞ্জনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাবিনা ইয়াসমিন। সেখানেও তিনি অঞ্জনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, ‘আমরা অভিন্ন হৃদয়ের বন্ধু ছিলাম’।
সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘অঞ্জনা যে এতো তাড়াতাড়ি এভাবে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে, একটুও বুঝতে পারিনি। কখনো কোনোদিন তাকে অসুস্থ দেখিনি, শরীর খারাপ দেখিনি, অসুধ খেতে দেখিনি। হঠাৎ করে কী যে হলো, কিছুই বুঝতে পারছি না।’
এসময় স্মৃতিচারণ করে সাবিনা বলেন, ‘আমরা অনেক ছোটবেলার বান্ধবী। আমাদের বয়স যখন ৬/৭ বছর, তখন থেকেই আমরা একে অপরকে চিনি, জানি। একই ওস্তাদের কাছে আমরা ক্লাসিক্যাল শিখতাম, অঞ্জনাওতো শুরুতে গান শিখতো। পরে নৃত্যকে সে বেছে নেয়। শিশু নৃত্যশিল্পী হিসেবে সে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেত, আমি যেতাম গান করতে। সেই থেকে আমাদের বন্ধুত্ব শুরু।’
সাবিনা আরও বলেন, ‘আমরা বড় হওয়ার পরেও একইভাবে আমি গান করতাম, ও তো তখন নায়িকা। একসঙ্গে অনেক ছবিতেও গান করেছি। অনুষ্ঠানেও যেতাম এক সঙ্গে। দেশে বিদেশের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গেলে আমরা সবার থেকে আলাদা হয়ে যেতাম। একসঙ্গে একই রুমে থাকতাম, একসঙ্গে ঘোরাফেরা করতাম। একদম অভিন্ন হৃদয় ছিলো আমাদের।’