শরিফুলকে সাইফের বাড়িতে নিয়ে পুরো ঘটনা বের করলো পুলিশ

  • বিনোদন ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাইফ আলী খান ও তার ওপর হামলাকারী শরিফুল

সাইফ আলী খান ও তার ওপর হামলাকারী শরিফুল

বলিউড তারকা সাইফ আলী খানের ওপর হামলার রহস্যের জট ক্রমেই খুলছে। এই মামলায় ধরা পড়েছেন ৩০ বছর বয়সী শরিফুল ইসলাম শেহজাদ মুহাম্মদ রোহিলা আমিন ফকির। পুলিশের দাবি, অভিযুক্ত বাংলাদেশের নাগরিক। আজ ভোরবেলায় অভিযুক্তকে সাইফ-কারিনার বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গত বুধবার গভীর রাতে সাইফের ওপর হামলার ঘটনাটি ‘পুনর্নির্মাণ’ করতে শরিফুলকে বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে গিয়েছিল বান্দ্রা পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ কাকভোরে অভিযুক্তকে সাইফ-কারিনার বান্দ্রার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। এক ঘণ্টা পর পুলিশ সেই হামলাকারীকে সঙ্গে নিয়ে এই বলিউড দম্পতির বাসা থেকে বের হয়েছিল। তার আগে হামলার পর যেখানে যেখানে শরিফুল থেমে ছিল, সেখানে তাকে নিয়ে গিয়েছিল মুম্বাই পুলিশ। বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনের পুলিশ এখন শরিফুলকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। বিকেল চারটা নাগাদ অভিযুক্তকে বান্দ্রা পুলিশ স্টেশন থেকে বার করা হয়েছিল তদন্তের জন্য।

বিজ্ঞাপন
সাইফ আলী খান ও কারিনা কাপুর দম্পতি

সাইফের ওপর যে ছুরি হামলা করা হয়েছিল, তার তৃতীয় টুকরা খুঁজে বার করার জন্য পুলিশ স্টেশনের বাইরে আনা হয়েছিল তাকে। পুলিশি তদন্তে সামনে এসেছে, শরিফুল ভারতীয় পরিচয়পত্র বানাতে চেয়েছিল। তাই চুরি করে তাড়াতাড়ি উপার্জন করার রাস্তা বের করেছিল অভিযুক্ত। কিন্তু পরে তার পরিকল্পনা বদলে যায়। এক ডান্স বারে কাজ করত শরিফুল। সেখানে গিয়ে পরিকল্পনা বদলায়। সে ভেবেছিল অনেক টাকা রাতারাতি উপার্জন করে বাংলাদেশে আবার ফিরে যাবে। আর তাই বান্দ্রার অভিজাত এলাকাকে বেছে নিয়েছিল অভিযুক্ত।

শরিফুল পুলিশকে জানিয়েছেন, সে চুরি করার উদ্দেশ্যেই সাইফ-কারিনার অ্যাপার্টমেন্টে গিয়েছিল। অভিযুক্তের দাবি, সে জানতো না এটা কোনো তারকার বাসা। পুলিশি তদন্তে উঠে এসেছে যে সাইফ-কারিনার চার বছরের ছেলে জেহকে পণবন্দী করে এক কোটি টাকা আদায় করাই শরিফুলের মূল উদ্দেশ্য ছিল। কারণ, মোটা অঙ্ক রাতারাতি কামিয়ে তিনি নিজের দেশ বাংলাদেশে ফিরতে চেয়েছিল।

বিজ্ঞাপন
দুই ছেলে জেহ ও তৈমুরকে নিয়ে সাইফ আলী খান ও কারিনা কাপুর দম্পতি

বাংলাদেশে ফেরার জন্য হামলাকারীর বড় অঙ্কের প্রয়োজন ছিল। এই হামলার অন্যতম সাক্ষী সাইফের বাসার ৫৬ বছরের নার্স এলিয়ামা ফিলিপ পুলিশকে জানিয়েছেন, অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি জেহর বিছানার দিকে এগোচ্ছিল। এলিয়ামা জানিয়েছেন, বাধা দিতে গেলে তার ওপর দুষ্কৃতকারী লাঠি ও ব্লেড দিয়ে আক্রমণ করেছিল। আততায়ীর সঙ্গে চিৎকার–চেঁচামেচিতে জেহর ঘুম ভেঙে গিয়েছিল।

জেহ ছুটে ঘর থেকে পালিয়ে গিয়েছিল। সবার হইচই শুনে ছুটে এসেছিলেন সাইফ। এরপর আততায়ীর সঙ্গে সাইফের হাতাহাতি হয়। সাইফ আততায়ীর ছুরিকাঘাতে মারাত্মকভাবে জখম হওয়ার পর সবাই ঘর থেকে বের হয়ে গিয়েছিল। আর হামলাকারীকে ঘরে বন্ধ করে রেখেছিলেন সাইফ। কিন্তু যে পথ ধরে এসেছিল, সেই পথ ধরেই পালিয়ে যায় সে।

সাইফ আলী খান

পুলিশের ভাষ্য অনুসারে, মুহাম্মদ শরিফুল ইসলাম শেহজাদ সাত মাস আগে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিল। মেঘালয়ের ডাউকি নদী পার হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিলো শরিফুল। পশ্চিমবঙ্গের কারও আধার কার্ড ব্যবহার করে সিমকার্ড নিয়েছিল অভিযুক্ত। এরপর মুম্বাইয়ে শরিফুল কাজের খোঁজ করছিল। মুম্বাইয়ে আসার পর শরিফুল নিজের নাম বদলে বিজয় দাস রাখে। অভিযুক্তের ব্যবহার করা সিমকার্ডটি খুকুমণি জাহাঙ্গীর সেখার নামে বলে জানা গেছে। শরিফুল নিজের আধার কার্ড বানানোর চেষ্টা করলেও সফল হয়নি। পুলিশ অভিযুক্তের মুঠোফোন তদন্ত করে জানতে পেরেছে, বাংলাদেশের বেশ কিছু নম্বরে ফোন করেছিলো শরিফুল। তার পরিবারের সঙ্গে মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিল সে।

সাইফ আলী খান

এদিকে পাঁচ দিন ধরে লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইফ। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টার অস্ত্রোপচারের পর প্রথম দিন তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছিল। পরের দিন স্পেশাল বেডে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল সাইফকে। আজ তিনি বিাড়িতে ফিরেছেন।