হংকংয়ে ৪৫ গণতন্ত্রপন্থী কর্মীর কারাদণ্ড
বিতর্কিত জাতীয় নিরাপত্তাসংক্রান্ত মামলায় হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনের প্রভাবশালী নেতাসহ মোট ৪৫ জন অধিকারকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) হংকংয়ের একটি আদালত এ আদেশ দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, হংকংয়ের উচ্চ আদালত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে হওয়া এক বিচারে গণতন্ত্রপন্থী ৪৫ আন্দোলনকারীকে চার থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে।
নাশকতা করার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ২০২১ সালে মোট ৪৭ জন গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে বেইজিং-আরোপিত জাতীয় নিরাপত্তা আইনের অধীনে অভিযোগ গঠন করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে সাবেক আইনজ্ঞ বেনি তাইকে আন্দোলনের ‘সংগঠক’ হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
পশ্চিম কাউলুন হাকিম আদালতে ১১৮ দিন ধরে চলা বিচারের পর মে মাসে ১৪ গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারী দোষী সাব্যস্ত হন। তাদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক গর্ডন এনজি এবং আন্দোলনকারী ওয়েন চাও অন্যতম। বিচারের মুখোমুখি হওয়া ৪৭ আন্দোলনকারীর মধ্যে ৩১ জন দোষ স্বীকার করে নিয়েছিলেন। আর বাকি দুইজনকে অভিযোগ থেকে খালাস দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ৪৫ ব্যক্তির মধ্যে ৬০ বছর বয়সী আইনজ্ঞ বেনি তাইকে সর্বোচ্চ ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তিনি ২০১৪ ও ২০১৯ সালে হংকংয়ের গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভে বিশিষ্ট ভূমিকা পালন করেছিলেন। প্রসিকিউটররা তাকে ২০২০ সালের জুলাই মাসের আন্দোলনের সংগঠক হিসেবে অভিযুক্ত করেন।
২০১৯ সালে বেইজিং জাতীয় নিরাপত্তা আইন চালু করার চেষ্টা করলে হংকংয়ে ব্যাপক গণ-আন্দোলন শুরু হয়। গণতন্ত্রপন্থীদের মতে, এই আইন সেই সব স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করে, যা ১৯৯৭ সালে ব্রিটিশ শাসনামল থেকে মুক্ত হওয়ার সময়ে নিশ্চিত করা হয়েছিল।
এর পরের বছর ২০২০ সালের জুলাই মাসে নির্বাচনের আগে প্রাথমিকভাবে প্রার্থী বাছাইয়ের একটি প্রস্তাবকে ঘিরে বাড়তে থাকে টানাপোড়েন। সরকার পক্ষের মতে, এই প্রস্তাবের সাহায্যে সরকারকে ‘পঙ্গু’ করে দিতে চায় চেয়েছিল আন্দোলনকারীরা। তবে গণতন্ত্রপন্থীদের দাবি, এটি নির্বাচনে সবচেয়ে যোগ্য প্রার্থী বাছাইয়ের সাধারণ প্রচেষ্টা ছিল।
এদিকে ৪৫ গণতন্ত্রপন্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজার দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অস্ট্রেলিয়া। দেশটি বলছে, যেভাবে গণতন্ত্রপন্থী শাস্তি দেওয়া হলো, তাতে তারা খুবই উদ্বিগ্ন। শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক গর্ডন এনজি-ও আছেন।
অস্ট্রেলীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পেনি ওয়াং জানান, যেভাবে এই আইন চালু করা হয়েছে এবং তা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তাতে তাদের প্রবল আপত্তি রয়েছে।