পাকিস্তানের কুররামে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নিহত ২১
পাকিস্তানের খাইবারপাখতুনখাওয়া প্রদেশে কুররাম জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় নতুন করে সংঘর্ষে অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অসংখ্য।
এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় কুররামে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। সেখানে কারফিউ জারি করা হয়েছে এবং মোবাইল সার্ভিস বন্ধ রয়েছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন'র এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশিত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, কুররম জেলায় সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছে। কয়েকদিন আগে একই এলাকায় একটি গাড়ি বহরে ভয়াবহ হামলায় অসংখ্য মানুষ নিহত হওয়ার পর এই ঘটনা ঘটল। এ নিয়ে তিন দিনের সহিংসতায় মৃতের সংখ্যা ৬৪ জনে পৌঁছেছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, শনিবার এই সহিংসতার ঘটনার সময় প্রাদেশিক আইনমন্ত্রী, পুলিশের মহাপরিদর্শক, মুখ্য সচিব এবং খাইবার পাখতুনখাওয়া সরকারের অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তা উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় এই প্রদেশটির অশান্ত ওই জেলায় উপস্থিত ছিলেন।
সংঘাতের সময় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো গুলিবর্ষণ করে, সরকারি বিভিন্ন ভবনে ভাঙচুর করে, মার্কেটে দোকানপাট লুট করে এবং চেকপয়েন্ট, বাড়ি ও দোকানে আগুন লাগিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ জানিয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে। সেখানে সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা রয়েছে।
সবশেষ এই হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৪ জন সুন্নি ও ১৮ জন শিয়া মুসলিম। এ ঘটনায় ৪৭ জন আহত হয়েছেন বলেও জানান ওই কর্মকর্তা।
এর আগে গত শুক্রবার গভীর রাতে পারাচিনার জেলা সদর থেকে সশস্ত্র দলগুলো লোয়ার কুর্রামের বাগান বাজার ও আশপাশের গ্রামে হামলা চালায়। একপর্যায়ে প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ব্যাপক গুলি বিনিময় শুরু হয, যার ফলে ৩০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়।
শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত লোয়ার কুররামের বিভিন্ন স্থানে দুই পক্ষের মধ্যে বিক্ষিপ্ত গোলাগুলি চলতে থাকে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আপার কুররাম থেকেও মাঝেমধ্যে গোলাগুলির খবর পাওয়া গেছে, তবে সেখানকার পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
যুদ্ধরত পক্ষগুলো নারী ও শিশুসহ অনেককে জিম্মি করেছে এবং নিহতদের মরদেহ হস্তান্তর করতে অস্বীকার করছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।
খাইবারপাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রীর তথ্য বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মুহাম্মদ আলী সাইফ বলেন, জিম্মিদের মুক্তি এবং মৃতদেহ ও আহতদের উদ্ধারের জন্য আলোচনা চলছে। হামলার কারণে স্থানীয়রা তাদের বাড়িঘর ছেড়ে থাল ও হাঙ্গুর নিকটবর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।