শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ নিয়ে ‘মন্তব্য নেই’ দিল্লির
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে কূটনৈতিক নোট পাঠিয়েছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেখ হাসিনাকে ফেরত চেয়ে বাংলাদেশ থেকে আমরা একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। তবে এই বিষয়ে কোনা মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
ভারতের ইংরেজি দৈনিক ইন্ডিয়া টুডের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঢাকায় প্রত্যর্পণের বিষয়ে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পেয়েছে ভারত।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। নয়াদিল্লিতে এক ব্রিফিংয়ে জয়সওয়াল বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত করছি যে, আমরা আজ বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছ থেকে প্রত্যর্পণের অনুরোধের বিষয়ে একটি কূটনৈতিক নোট পেয়েছি। তবে এই মুহূর্তে এ বিষয়ে আমাদের কোনও মন্তব্য নেই।’’
এর আগে, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে ফেরত আনতে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ বলে জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
তৌহিদ হোসেন বলেন, ভারতকে আমরা জানিয়েছি ক্লিয়ারলি। আমরা তাকে (শেখ হাসিনা) যে ফেরত চাচ্ছি বিচার ব্যবস্থার জন্য সেটা জানিয়েছি।
ফেরত চাওয়ার প্রক্রিয়াটা কী হতে পারে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভারত সরকারকে নোট ভারবালের (কূটনৈতিক পত্র) মাধ্যমে।
তার আগে, সোমবার পিলখানায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত আনতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, তাকে ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হবে।
গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর থেকে সেখানেই আছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশই এখনও আত্মগোপনে রয়েছেন।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুবনাল গঠন করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। এখন ছাত্র-জনতার আন্দোলনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সরকারের চালানো দমন পীড়নকে ‘গণহত্যা’ বিবেচনা করে এ আদালতে বিচারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সময়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মধ্যে সারা দেশে ‘গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের’ অনেক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা ও প্রসিকিউশন অফিসে জমা পড়েছে।