ইয়েমেনের কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎকেন্দ্রে ইসরায়েলের বিমান হামলা
আন্তর্জাতিক
ইয়েমেনের রাজধানী সানাসহ দেশটির পশ্চিম উপকূলে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এ হামলায় দেশটির কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আলজাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার ইয়েমেনের গুরুত্বপূর্ণ বন্দর নগরী রাস ইসা এবং হোদেইদাহের পশ্চিম বন্দর, রাজধানী সানার কাছে হেজিয়াজ সেন্ট্রাল পাওয়ার স্টেশন এবং আমরান প্রদেশের হারফ সুফিয়ান জেলায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
বিজ্ঞাপন
দেশটির স্থানীয় গণমাধ্যম আল মাসিরাহ জানিয়েছে, শুক্রবারের বিমান হামলায় রাস ঈসা বন্দরের একজন কর্মচারী নিহত এবং ছয়জন আহত হয়েছেন। এছাড়া হেজায় একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রকে লক্ষ্য করে ১৩ বার বিমান হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী। এতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একজন কর্মী নিহত ও তিনজন আহত হয়েছেন। হামলায় বেশ কয়েকটি বাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের দায়ে হুতিরা চড়া মূল্য দিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিজ্ঞাপন
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে হামাস ইসরায়েল সংঘাত শুরুর পর থেকে ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরায়েলিদের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে ইরান সমর্থিত হুতি।
বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতিসহ বেশ কিছু অভিযোগ উঠেছে। এই অবস্থায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে তাকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরানোর দাবি উঠছে। এবার টিউলিপকে মন্ত্রিত্ব থেকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছেন ব্রিটেনের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ।
রোববার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটেনের ক্ষমতাসীন লেবার মন্ত্রিসভার সদস্য এবং তিনি ইকনোমিক সেক্রেটারি টু দি ট্রেজারি অ্যান্ড সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার কাজ যুক্তরাজ্যের অর্থবাজারের ভেতরের দুর্নীতি সামাল দেওয়া। কিন্তু তার জন্মভূমি বাংলাদেশেই এখন তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে, যেখানে তিনি এবং পরিবারের চার সদস্যের বিরুদ্ধে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ কোটি মার্কিন ডলার আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া, শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজনদের উপহারের ফ্ল্যাটে থাকা নিয়ে বিতর্ক চলছে তাকে নিয়ে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কাছে ট্রেজারি মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা কেমি ব্যাডেনোচ। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া পোস্টে কনজারভেটিভ পার্টির এ নেতা বলেছেন: কেয়ার স্টারমারের টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করার সময় এসেছে।
পোস্টে তিনি আরও বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার তার ব্যক্তিগত বন্ধুকে দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ করেছেন এবং তিনি নিজেকেই দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত করেছেন।
ব্যাডেনোচ বলেন, সরকার যে আর্থিক সমস্যাগুলো তৈরি করেছে, তা মোকাবিলায় মনোনিবেশ করা উচিত হলেও টিউলিপ সিদ্দিক সেই কাজে মনোনিবেশের জন্য সমস্যা হয়ে উঠেছেন। আর এখন বাংলাদেশ সরকারও শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে তার যোগসূত্র নিয়েও গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।
এছাড়া সম্প্রতি টোরি এমপিরাও টিউলিপের পদত্যাগ দাবি করেছেন। ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির এমপিরা টিউলিপের উদ্দেশে বলেছেন, ফ্ল্যাট উপহার পাওয়ার বিষয়ে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা দিতে না পারলে তিনি যেন ট্রেজারি মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
টোরি এমপি বব ব্ল্যাকম্যান বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিককে তার সম্পত্তির লেনদেনের বিষয়ে অবস্থান স্পষ্ট করতে হবে এবং ব্যাখ্যা করতে হবে আসলে কী ঘটেছে এবং কেন? যদি তিনি তা না করেন, তবে মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার কাজ চালিয়ে যেতে পারেন না।
টিউলিপ সিদ্দিক অবশ্য কোনও ধরনের দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছেন এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডসের ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার লাউরি ম্যাগনাসের কাছে নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন। স্যার লরি ম্যাগনাসের কাছে লেখা একটি চিঠিতে তিনি দাবি করেছেন, ‘আমি কোনও ভুল করিনি।’
এদিকে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্টারমারও বলেছেন, টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর পূর্ণ আস্থা রেখেছেন তিনি। সেইসঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেছেন, টিউলিপকে তার পদ থেকে সরিয়ে ওই পদে দায়িত্ব পালনের জন্য সম্ভাব্য ব্যক্তিদের সংক্ষিপ্ত তালিকা নিয়ে যে খবর চাউর হয়েছে তা ‘সম্পূর্ণ অসত্য’।
ভয়াভহ দাবানলে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেস কাউন্টি। টানা পাঁচদিন ধরে দাবানলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো ছয়টি দাবানল সক্রিয় রয়েছে।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সবচেয়ে ভয়াবহ দাবানলগুলোর একটি দিক পরিবর্তন করেছে। দিক পরিবর্তন করলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে নতুন হুমকির মুখে পড়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। খবর রয়টার্স
গত মঙ্গলবার লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল ছড়িয়ে পড়ে। এতে এখন পর্যন্ত ১১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পুড়ে গেছে অনেক এলাকা। ধ্বংস হয়েছে প্রায় ১০ হাজার বাড়িঘর। তবে মৃত্যুও বাড়তে পারে।
লস অ্যাঞ্জেলেসে ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ এই দাবানল ছড়িয়ে পড়ার পেছনে প্রধান কারণ হচ্ছে ‘সান্তা অ্যানা’ নামের ঝোড়ো বাতাস। গত শুক্রবার রাত থেকে এই বাতাস অনেকটা কমে এসেছে। তবে শহরের পশ্চিমে জ্বলতে থাকা ‘প্যালেসেইডস’ নামের দাবানলটি নতুন দিকে অগ্রসর হওয়া শুরু করছে।
লস অ্যাঞ্জেলেস ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা এরিক স্কট স্থানীয় টেলিভিশন চ্যানেল কেটিএলএকে বলেছেন, প্যালেসেইডস দাবানলটির পূর্বের অংশে আগুন উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেটি দিক পরিবর্তন করে আরও উত্তর-পূর্ব দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এই দাবানল সবচেয়ে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
এদিকে ক্যালিফোর্নিয়ার আগুন নেভাতে এগিয়ে এসেছে প্রতিবেশী সাতটি অঙ্গরাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। কানাডা থেকেও এসেছে সহায়তা।
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, সপ্তাহান্তে লস অ্যাঞ্জেলেসের দাবানল পরিস্থিতি কিছুটা উন্নতি হতে পারে। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৩২ কিলোমিটার পর্যন্ত নেমে আসছে। এটা আগের চেয়ে কম। ফলে আগুন নেভানোর কাজে ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের সুবিধা হতে পারে। তবে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষ ক্যাল ফায়ার জানিয়েছে, আগামী মঙ্গলবার বাতাসের গতি আবার বাড়তে পারে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রযুক্তি মোঘল মেটার (ফেসবুক) তৃতীয় পক্ষ ফ্যাক্ট চেকিং কার্যক্রম যুক্তরাষ্ট্রে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ‘লজ্জাজনক’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) তিনি এ নিন্দা জানান। ওয়াশিংটন থেকে এএফপি এখবর জানায়।
ফ্যাক্ট চেকিং বাদ দেওয়ার বিষয়ে হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বাইডেন বলেন, ‘আমি মনে করি এটা আসলেই লজ্জাজনক’।
‘একটা অসত্য বিষয় তারা প্রিন্ট হতে দেবে এবং লাখ লাখ মানুষ তা দেখবে ও পড়বে’ উল্লেখ করে প্রসিডেন্ট বাইডেন আরো বলেন, এ ধরনের বিষয় যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যায় না। আমরা সত্য উপস্থাপন করতে চাই।
বুধবার ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা এবং প্রধান নির্বাহী জুকারবার্গ বলেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রে ফেসবুকের থার্ড পার্টি ফ্যাক্ট চেকিং বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
জুকারবার্গ আরো বলেন, ফ্যাক্ট চেকাররা খুব বেশিমাত্রায় রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট। বিকল্প হিসেবে ইলন মাস্কের এক্স এর মত ফেসবুক এবং ইন্সটাগ্রাম কমিউনিটি নোট নেবে।
বার্তা সংস্থা এএফপি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বব্যাপী ২৬টি ফেসবুকের ফ্যাক্টচেকিং প্রোগ্রামের সঙ্গে কাজ করছে।
ইসলামিক বিশ্বের মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বিশ্বব্যাপী এক সম্মেলনে যোগ দিতে নিজ দেশ পাকিস্তানে পৌঁছেছেন নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী মালালা ইউসুফজাই। নিজ দেশে পৌঁছেছে তিনি বলেছেন, "পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, আনন্দিত ও অভিভূত।"
শনিবার (১১ জানুয়ারি) তিনি পাকিস্তানে পৌঁছে এ অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। খবর এপি।
২০১২ সালে তিনি স্কুলে পড়ার সময় পাকিস্তানের তালেবান জঙ্গিরা তার স্কুলবাসের ভেতর তাকে গুলি করেছিলো। গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য তাঁকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর থেকে প্রাণনাশের ভয় থাকায় হাতেগোনা দু-একবার পাকিস্তানে গিয়েছেন।
রাজধানী ইসলামাবাদে সম্মেলনে আসার সময় তিনি বলেন, " পাকিস্তানে ফিরে আসতে পেরে আমি সত্যিই সম্মানিত, আনন্দিত ও অভিভূত।"
ইসলামিক বিশ্বে নারীদের শিক্ষা নিয়ে দুই দিনব্যাপী ওই সম্মেলনে যোগ দিতে মুসলমান–অধ্যুষিত দেশগুলোর প্রতিনিধিরা পাকিস্তানে এসেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ শনিবার সকালে সম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন। স্কুলশিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও ওই সম্মেলনে অংশ নিচ্ছেন।
ইউসুফজাই আগামীকাল রোববার (১২ জানুয়ারি) শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেওয়ার কথা রয়েছে।
শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, "আমি মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার অধিকার রক্ষার বিষয়ে কথা বলব। এবং কেন আফগান নেতারা তাদের দেশে নারী ও মেয়েদের শিক্ষা নিয়ে বাধা দিচ্ছে সে বিষয়েও তালেবানদের জবাবদিহি করতে হবে।"
দেশটির শিক্ষামন্ত্রী খালিদ মকবুল সিদ্দিকী বলেছেন, আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে এই সম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল কিন্তু তারা কোনো উত্তর দেয়নি।
আফগানিস্তান বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে মেয়েদের এবং নারীদের স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ।
২০২১ সালে ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে, তালেবান সরকার দেশটিতে ইসলামিক আইনের কঠোর সংস্করণ আরোপ করেছে যেটিকে জাতিসংঘ "লিঙ্গ বর্ণবৈষম্য" বলে উল্লেখ করেছে।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, পাকিস্তানের ২৬ মিলিয়নেরও বেশি শিশু স্কুলের বাইরে রয়েছে, যা বিশ্বে শিশুদের স্কুলে না যাওয়ার সর্বোচ্চ সংখ্যার মধ্যে একটি। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য।