মাগরিবের নামাজ শেষে আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়েছে এবারের ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা। ভারতের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ান শুরু করেছেন। এই বৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশে দেশের ৪২টি জেলা থেকে আগত মুসল্লিরা অংশ নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, তাবলীগ জামাতের শুরাই-নেজামের সমন্বয়ে আয়োজিত এবারের ইজতেমার প্রথম পর্বে দেশ-বিদেশের লাখো ধর্মপ্রাণ মুসল্লির অংশগ্রহণের প্রত্যাশা করা হচ্ছে। আগামী তিন দিনব্যাপী চলা এ আয়োজনের শেষ দিন রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ শেষ হবে। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে মুসল্লিদের আগমন ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে মুসল্লিরা টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে আসছেন। বিদেশি মেহমানেরাও আসতে শুরু করেছেন।
অপরদিকে, ইজতেমা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। র্যাব, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
গাজীপুর মেট্রোপলিটন টঙ্গী দক্ষিণের ডিসি (অপরাধ) আবু নাসির জানান, ইজতেমা ময়দানসহ আশপাশের পুরো এলাকায় নিরাপত্তার কমতি নেই। দূরদূরান্ত থেকে আগত মুসল্লিরা যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে ধর্মীয় কাজ শেষ করে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারে তার জন্য আমরা প্রস্তুত।
উল্লেখ্য, বিশ্ব ইজতেমা তাবলীগ জামাতের অন্যতম প্রধান বার্ষিক আয়োজন। ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ তীরে এই আয়োজন হয়ে আসছে।
হজ এজেন্সি এবং যাত্রীরা যেভাবে উপকৃত হন, সেভাবেই হাব পরিচালিত হবে
স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
|
হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ, ছবি: বার্তা২৪.কম
ইসলাম
সুষ্ঠু ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনার যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য হজ এজেন্সিসমূহ এবং ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আসন্ন হাব নির্বাচনে ‘হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ’ থেকে নির্বাচন করছেন দি সিটি ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ। বার্তা২৪.কম-এর সঙ্গে কথা বলেছেন হজ এজেন্সি ও হজযাত্রীদের কল্যাণসহ সার্বিক হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে।
‘হজ ব্যবস্থাপনায় হাবের ভূমিকা’ প্রসঙ্গে হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ বলেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর চতুর্থ হজযাত্রী প্রেরণকারী দেশ। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী প্রেরণের দিক থেকে সর্ববৃহৎ দেশ। ২০২৫ সালের হজে মোট নিবন্ধন করেছেন ৮৭ হাজার ১০০ জন যাত্রী। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন। অন্যসব হজযাত্রী বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজে যাবেন। এই যে বিপুল সংখ্যক হজযাত্রী হজপালনে যাচ্ছেন, এ ক্ষেত্রে এজেন্সিগুলোর ভূমিকা অপরিসীম।
পাশাপাশি এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাবের ভূমিকাও অনেক। হাব এখানে এজেন্সি ও সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে হজ ব্যবস্থাপনায় সহায়তা দেয়। পাশাপাশি এজেন্সিগুলোর সুবিধা-অসুবিধাগুলো ধর্ম মন্ত্রণালয়কে অবহিত করে। ন্যায্য দাবিগুলো আদায়ের জন্য কাজ করে। এজেন্সিগুলোকে তাদের দায়দায়িত্ব সম্পর্কে হজযাত্রীদের প্রতি তাদের দায়িত্ব এবং হজযাত্রীদের অধিকারের ব্যাপারে সজাগ করে। এক কথায় একটি ভালো সুষ্ঠু ও সুন্দর হজ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এজেন্সিগুলো এবং সরকার ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাঝামাঝি থেকে হাব একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
‘প্রতিবছরই হজ এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ আসে। এই অনিয়ম বন্ধে হাবের কি কিছু করণীয় নেই’- এমন প্রশ্নের উত্তরে দি সিটি ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা অংশীদার বলেন, দেখুন, হজের সফর কিন্তু অন্য ধরনের। এখানে নির্দিষ্ট দিন মেনে যেতে হয়, দু’টি নিয়ম রাষ্ট্রের নিয়ম মেনে পরিচালনা করতে হয়। নির্দিষ্ট দিনে বাংলাদেশ থেকে রওনা এবং নির্দিষ্ট দিনে মক্কা-মদিনায় মুভমেন্ট, নির্দিষ্ট দিনে মিনা, আরাফাত ও মুজদালিফায় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা। এসব কাজ করতে গেলে কখনো কখনো কারো কোনো কোনো বিষয় মনঃপূত নাও হতে পারে। তবে যৌক্তিক সেবা না পেলে অবশ্যই সেটা দোষের। কিন্তু একটু-আধটু অসুবিধার ক্ষেত্রে অনেক বড় অভিযোগ কাম্য নয়।
‘আপনারা রুট টু মক্কা বাতিলের দাবি করছেন কেন’, এমন প্রশ্নের উত্তরে হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ বলেন, হজপালনে বাংলাদেশ থেকে যারা সৌদি আরব যান, বর্তমানে তাদের ইমিগ্রেশন ঢাকার আশকোনা হজক্যাম্পে হয়। এখান থেকেই হজযাত্রীদের লাগেজ ফ্লাইটে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হজযাত্রীরা যখন সৌদি আরবের জেদ্দা বিমানবন্দরে অবতরণ করেন তখন তাদের কাছে লাগেজ দেওয়া হয় না। হজযাত্রী যে বাসে করে মক্কার হোটেলে যান, সে বাসে লাগেজগুলো পাঠানো হয় না। লাগেজগুলো অন্য বাসে করে একটি হোটেলে নিয়ে রাখা হয়। একটি এজেন্সির সব হজযাত্রীকে রাখতে একাধিক হোটেলের প্রয়োজন হয়। ফলে হজযাত্রী হোটেলে উঠে লাগেজ পান না। অপরিচিত জায়গা হওয়ায় যে হোটেলে লাগেজ রাখা হয় সেটিও তারা চেনেন না। লাগেজ না পেয়ে হজযাত্রীরা চিন্তিত হয়ে পড়েন। লাগেজ পেতে তারা চরম ভোগান্তির শিকার হন। হজযাত্রীদের এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা করতে রুট টু মক্কা বাতিল করতে হবে। হজযাত্রীদের লাগেজ জেদ্দা বিমানবন্দরে বুঝিয়ে দিতে হবে। কিংবা তাদের সেবার মান বাড়াতে হবে, লাগেজ নিয়ে ভোগান্তি চলেব না।
‘বহুল আলোচিত হাব পল্লীর বিষয়টা কী, কেন এই সমস্যার সমাধান হচ্ছে না’, এমন প্রশ্নের উত্তরে হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদের প্রার্থী হাফেজ মাওলানা নূর মোহাম্মদ বলেন, এজেন্সির মালিকদের নির্দিষ্ট এলাকায় বসবাসের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষে সাভারের ভাকুর্তায় জমি কেনা হয়। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করেই জমিটি কেনা হয়েছে। তার পরও এটা নিয়ে নানা কথা হয়েছে, প্রায় ৯ কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ করা হয়েছে। বিগত কয়েকটি নির্বাচনে এই হাব পল্লীর সমস্যা সামনে ঝুলিয়ে রেখে নির্বাচন করা হয়েছে, কিন্তু কেউ এটার সুরাহা করেনি। মাঝে সিদ্ধান্ত হয়, হাবের নামে ক্রয়কৃত জমির সমুদয় অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। কিন্তু কাজটা আর আগায়নি। জমিটা খন্ড খন্ড দাগে, সেগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। কিছু মাটিও ভরাট করা হয়েছে, সেখানে আমরা এবার পিকনিক করেছি। সরেজমিনে সদস্যরা জায়গাটি দেখেছেন। তার পরও নির্বাচনের আগে এটা নিয়ে একটি সন্তোষজনক একটি সমাধানের পরিস্থিতি হয়েছিল, কিন্তু অজানা কারণে তা আর হলো না। আমরা বলেছি, এবার সেই সমস্যার সমাধান করব- ইনশাআল্লাহ।
‘হজপালনে হজযাত্রীদের কোন দিকগুলোর ব্যাপারে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন’- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, হজপালনের যোগ্যতার ক্ষেত্রে বলা হয় অর্থনৈতিক ও শারীরিক যোগ্যতা। সরাসরি এজেন্সির মাধ্যমে লেনদেন করা। দ্বিতীয়ত, অনেক বয়সে আমাদের দেশের লোকজন হজ করে থাকেন। আমি বলব, বেশি বয়সে গেলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করা কঠিন হয়। কারণ এটি শারীরিক ইবাদাত। তাই অর্থনৈতিকভাবে যারা স্বাবলম্বী তখনই তাকে হজে যেতে হবে। আর হজযাত্রার জন্য ধৈর্য থাকতে হবে। কষ্ট করার মতো মানসিকতা নিয়ে যেতে হবে। হজযাত্রা কিন্তু কোনো আনন্দ ভ্রমণ নয়।
‘নির্বাচনে আমাদের হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ’ নির্বাচিত হলে হাবের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার স্বার্থে সব কাজ করব উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের প্যানেল থেকে নির্বাচনী যেসব ওয়াদা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো পূরণে কাজ করব। ২২ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন হবে। আশা করি, হজ এজেন্সি মালিকেরা আমাদের পূর্ণ প্যানেলে বিজয়ী করবেন। আমাদের প্যানেলে অভিজ্ঞ এবং হাব সদস্যদের পরীক্ষিত লোকগুলো একত্র হয়েছে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এজেন্সি মালিকেরা যাতে সম্মানিত হন সেভাবে কাজ করব। এর বাইরে হজযাত্রীদের উড়োজাহাজ ভাড়া কমানো, হাব সদস্যগণ যেস উমরা কার্যক্রম পরিচালনায় অংশগ্রহণ করতে পারে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে ও থার্ড ক্যারিয়ার চালুর বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করব।
এক কথায় হজ এজেন্সি এবং হজযাত্রীরা যেভাবে উপকৃত হন, সেভাবেই আগামী দিনের যাবতীয় কাজ করা হবে। আমরা সবার কাছে দোয়া চাই।
সমাজ সংস্কারে দেশের আলেম সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
|
সমাজ সংস্কারে দেশের আলেমদের এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা
ইসলাম
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, সমাজ সংস্কারে এ দেশের আলেম সমাজকে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এ সরকারের অগ্রাধিকার। সন্ত্রাস দমন ও সামাজিক সমস্যা নিরসনে আলেমরাই জাতিকে সঠিক দিক নির্দেশনা দিতে পারে।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০ টায় বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদ মিলনায়তনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন আয়োজিত ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় আর্থিক অনুদান ও সুদমুক্ত ঋনের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্ট একটি সময়োপযোগী ও জনবান্ধব ট্রাস্ট। আগামী দিনে এই ট্রাস্টের সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হবে। ইমাম মুয়াজ্জিনদের কল্যাণে আমরা মসজিদ ব্যবস্থাপনা নীতিমালা তৈরির কাজ করছি এবং তাদের জন্য একটি পে-স্কেল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্র্রাস্টের আওতায় ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে অসহায় দরিদ্র ৬০০ জন ইমাম মুয়াজ্জিনদের সুদমুক্ত ঋন হিসেবে ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা এবং অনুদান হিসেবে ৪ হাজার ৬২০ জনকে ৫ হাজার টাকা হারে মোট ২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আজ ঢাকা জেলার ২৯৫ জনকে ৫০০০ টাকা হারে ১৪ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়া ঢাকা জেলায় ৭ জন উদ্যোক্তাকে ২০ হাজার টাকা হারে ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, ৭ জন সাধারণ উদ্যোক্তাকে ৩০ হাজার টাকা হারে ২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা এবং ৭ জন বিশেষ উদ্যোক্তাকে ৪০ হাজার টাকা হারে ২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকার সুদমুক্ত ঋন প্রদান করা হয়। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পরিচালক,প্রকল্প পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও আলেম-ওলামাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিনদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে স্বাবলম্বী করে তোলাই ইমাম মুয়াজ্জিন কল্যাণ ট্রাস্টের মূল উদ্দেশ্য। কোন ইমাম বা মুয়াজ্জিন মারাত্মক দুর্ঘটনা, পঙ্গুত্ব, দুরারোগ্য ব্যাধি ইত্যাদি জনিত কোন কারণে অক্ষম হয়ে পড়লে বা আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করলে তাকে আর্থিক সাহায্য ও ঋণ প্রদান, তাদের মেধাবী সন্তানদের শিক্ষার জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান এবং তাদের পরিবারের সার্বিক কল্যাণ সাধন করার লক্ষ্যেই ২০০১ সালে এই ট্রাস্ট গঠিত হয়। বর্তমানে ট্রাস্টের সদস্যভূক্ত ইমাম মুয়াজ্জিনের সংখ্যা প্রায় ৮৪ হাজার জন।
আমার বক্তব্য মিডিয়ায় ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে: গোলাম সরোয়ার
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪. কম
|
ছবি: ভিডিও থেকে নেয়া।
ইসলাম
আসন্ন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নির্বাচনে হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ এর প্যানেল প্রধান সৈয়দ গোলাম সরোয়ার হজযাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করার যে বক্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে সে বিষয়ে মতামত জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ মতামত জানান।
ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি সভায় আমার একটি বক্তব্য মিডিয়ায় ভুলভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে আমি বলতে চেয়েছি যে, কোনো ব্যবসায় যে পরিমাণ পার্সেন্টিজ লাভ করা হয়, সে তুলনায় আমাদের সার্ভিস চার্জ খুবই কম। আমরা নির্বাচিত হলে এজেন্সির মালিকদের স্বার্থে হজ প্যাকেজের সার্ভিস চার্জ ৫% এ উন্নিত করার জন্য সরকারের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। সুতরাং সকল সদস্যকে এই বিষয়ে কোনো রকম অপপ্রচার ও বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।
এর আগে, আসন্ন হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নির্বাচনে হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ এর প্যানেল প্রধান সৈয়দ গোলাম সরোয়ার বলেন, তিনি নির্বাচিত হলে হজযাত্রীদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায় করবেন এবং তা সবাই মিলে ভাগ করে নেবেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় এ ধরনের ঘোষণায় হাব সদস্যদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) হাব নির্বাচনের নির্বাচনী সমাবেশে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘যদি আমি নির্বাচিত হই, তাহলে হজযাত্রী প্রতি ৩০ হাজার টাকা অতিরিক্ত নেব এবং তা আমরা ভাগ করে নেব।’
এই বক্তব্যরের প্রেক্ষিতে হাব সদস্যরা বলেন, এটি শুধু ব্যবসা নয়, আমাদের জন্য একটি পবিত্র দায়িত্ব। আমরা আল্লাহর মেহমানদের সেবা করার কাজে নিয়োজিত। গোলাম সরোয়ার সিন্ডিকেট করে হজযাত্রীদের থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের পরিকল্পনা এই পবিত্র কাজকে কলুষিত করা। সাধারণ হজ এজেন্সির মালিকরা এমন ঘৃণিত কাজ হতে দেব না।
নির্বাচনের আগে প্যানেল প্রধানের এমন বক্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েন হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদের প্রার্থীরা।
প্রার্থীদের কয়েকজন বার্তা২৪.কমকে জানান, যারা হজ এজেন্সি মালিক, আমাদের অনেকেই মধ্যস্বত্বভোগীদের সরবরাহকৃত হজ যাত্রীদের প্রসেসিং করেই ব্যবসায় টিকে আছি। এজেন্সি মালিকরা সব ধরণের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে সব কাজ করে ৫/৭ হাজার টাকা লাভ করে, আর যারা হাজী সরবরাহ করে, তারা ৫০/৬০ হাজার টাকা আয় করে থাকেন। আগে হজ প্যাকেজে কিছু খাত ছিল, যার মাধ্যমে এজেন্সির মালিকদের কিছু অতিরিক্ত আয়ের ব্যবস্থা ছিল। আগামী হাব নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্যানেলও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে মন্ত্রণালয়ের সহযোগীতায় হজ প্যাকেজে ৩০/৪০ হাজার টাকা লাভের খাত সৃষ্টি করার উদ্যোগ নিতে পারে। এটা মন্দ কিছু নয়।
এদিকে, হাবের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন আগামী ২২ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে তিনটি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ (প্যানেল প্রধান সৈয়দ গোলাম সরওয়ার), হাব ঐক্য ফোরাম (প্যানেল প্রধান ফারুক আহমেদ সরদার) ও হাব বৈষম্যবিরোধী গনতান্ত্রিক জোট (প্যানেল প্রধান এম এ রশিদ শাহ্ সম্রাট)।
বোখারি শরিফ মুখস্থ করে নজির গড়লেন মাওলানা মাসউদুর রহমান
ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
|
মাওলানা মাসউদুর রহমান, ছবি: বার্তা২৪.কম
ইসলাম
সম্পূর্ণ বোখারি শরিফ মুখস্ত করে বিরল কৃতিত্ব গড়েছেন হাফেজ মাওলানা মাসউদুর রহমান। মাত্র ৮ মাস ৯ দিনে তিনি বোখারি শরিফ মুখস্থ করেন। পবিত্র কোরআনের পর সবচেয়ে বিশুদ্ধ গ্রন্থ বোখারি শরিফ। বোখারি শরিফের হাদিস সংখ্যা ৭ হাজার ৫৬৩টি, যা ইমাম বোখারি (রহ.) ৬ লাখ হাদিস থেকে বাছাই করেছেন।
হাফেজ মাওলানা মাসউদুর রহমানের বাড়ি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলার তারাটি চরপাড়া গ্রামে। ২০০২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি পবিত্র জুমার দিন সকালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা তাজুল ইসলাম ধার্মিক মানুষ, সন্তানদের সেভাবেই ধর্মীয় শিক্ষায় গড়ে তুলেছেন।
হাফেজ মাওলানা মাসউদুর রহমানের পাড়াশোনার হাতেখড়ি বাবা-মায়ের কাছে। ৬ বছর বয়সে বড় ভাই মুফতি আশরাফুল ইসলামের হাত ধরে ধনবাড়ি নতুন বাজার নুরানি তালিমুল কোরআন মাদরাসায় ভর্তি হন। সেখানে নুরানি ও নাজেরা সম্পন্ন করেন। হিফজ শুরু করেন নিজ গ্রামে হাফেজ রফিকুল ইসলাম প্রতিষ্ঠিত আহমদিয়া হাফিজিয়া মাদরাসায়।
পরে মুফতি হাবিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ইদারাতুল মাআরিফ আশ-শারইয়্যাহতে এক বছর হেফজ পড়েন। ময়মনসিংহের জামিয়া আশরাফিয়া দারুস সালাম, আকুয়া মোড়ল বাড়ি মাদরাসায় হেফজ শেষ করেন। আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত কারি হাফেজ মাওলানা আবু সালেহ মো. মুসা প্রতিষ্ঠিত তাহসিনুল কোরআন ওয়াস সুন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসায় আরও দুই বছর কোরআন শোনান। ২০১৮ সালে জামিয়া আরাবিয়া মিসবাহুল উলুম কেন্দ্রীয় পৌর গোরস্থান মাদরাসায় কিতাব বিভাগের প্রথম ক্লাসে ভর্তি হন। মিজান থেকে কাফিয়া পর্যন্ত ময়মনসিংহের মাদরাসাতুন নুরে পড়শোনা করেন। ফিরে আসেন মুক্তাগাছার পৌর গোরস্থান মাদরাসায়। কয়েক বছর পড়েন এখানে। এরপর রাজধানী বসুন্ধরার ইসলামিক রিসার্চ সেন্টারে মেশকাত ও দাওরায়ে হাদিস সম্পন্ন।
‘এসো খত্তে রুকআ শিখি’ নামে একটি হাতের লেখা শেখার বইও লিখেছেন তিনি। হেফজ বিভাগ থেকে শুরু করে দাওরায়ে হাদিস পর্যন্ত প্রতিটি বোর্ড পরীক্ষায় মুমতাজ (স্টার মার্কস) হয়েছেন। দাওরায়ে হাদিস শেষ করে বড় ভাই মুফতি আশরাফুল ইসলামের পরামর্শে তাসলিমা ইসলামিক সেন্টার বাগমুছা, সোনারগাঁও মাদরাসায় হেফজুল হাদিস বিভাগে ভর্তি হন। মাত্র ৮ মাস ৯ দিনে বোখারি শরিফ মুখস্ত সম্পন্ন করেন।
মুহাম্মদ কেফায়েতুল্লাহ, ছবি: সংগৃহীত
অন্যদিকে একই উপজেলার মনতলার গনেশ্যামপুর গ্রামের আরেক বিস্ময় বালক মাত্র ৬ মাস ৩ দিনে পুরো কোরআন মুখস্ত করে অনন্য নজির গড়েছেন। তার নাম মুহাম্মদ কেফায়েতুল্লাহ। বয়স মাত্র ৮ বছর। কিশোর এই হাফেজের বাবা মাওলানা হারুনুর রশীদ স্থানীয় একটি মাদরাসার পরিচালক। মা মাদরাসার শিক্ষিকা। শিক্ষক মা-বাবার অধীনে ছোট থেকেই ধর্মীয় পরিবেশে বেড়ে উঠেছেন তিনি। কালিকাপুর বেগ মাদরাসায় হাফেজ গিয়াস উদ্দিনের তত্ত্বাবধানে হেফজ সম্পন্ন করেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) তাদের দুজনকে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা জানানো হবে। সংবর্ধনার আয়োজন করেছেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ মুক্তাগাছা উপজেলা শাখা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মাওলানা আবদুল ওয়াহহাব। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- মাওলানা আবদুর রহমান হাফেজ্জি, মাওলানা এমদাদুল হক, মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা আনওয়ারুল হক, মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদি, মুফতি আহমদ আলী, মুফতি মাহবুবুল্লাহ কাসেমি, মাওলানা আমিনুল হক, মাওলানা আবদুল হালিম কাসেমি, হাফেজ আহমদ আলী, মাওলানা জুনাইদ আল হাবিব, মাওলানা মুঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, মুফতি আবদুস সালাম, মাওলানা বাহাউদ্দিন যাকারিয়া, ড. মুফতি গোলাম রব্বানী, মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ, মুফতি রিয়াজ বিন আবু তাহের, মুফতি এনায়েতুল্লাহ, হাফেজ মাওলানা ডাক্তার আবদুল বারী ও মুফতি জাকির হোসাইন প্রমুখ।