দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে দুর্যোগ ভয়াবহ, পদে পদে বৈষম্য

  • জাহিদ রাকিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

দেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয় ও নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। কিন্তু দেশের রন্ধ্রে রন্ধ্রে বৈষম্য ছড়িয়ে রয়েছে। সরকারের দফতরে দফতরে রয়েছে চরম অন্যায্য পরিবেশ। তাবেদার আর চাটুকাররা বছরের পর বছর ধরে গুরুত্বপূর্ণ পদ দখল করে গোটা ব্যবস্থাটিকেই অকেজো করে রেখেছে। এই নিয়ে বার্তা২৪. এর ধারাবাহিক প্রতিবেদন থাকবে। প্রথম পর্বে থাকছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর। সেখানে দুর্যোগ ভয়াবহ। পদে পদে বৈষম্য ও নৈরাজ্য। যা উঠে এসেছে স্টাফ করেসপন্ডেন্ট জাহিদ রাকিব এর প্রতিবেদনে।

এই অধিদফতরে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন চলে আসছে দুই বছর ধরে। যোগ্যরা স্থান পাচ্ছেন না, অথচ স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের আমলে তোষামোদে ব্যস্ত থাকা এক শ্রেণির কর্মকর্তার দৌরাত্মে নাজেহাল ছিলেন বেশিরভাগ কর্মকর্তা। সাথে চলছে যথেচ্ছাচার। অভিযোগ রয়েছে, উচ্চ পদগুলোতে কোনো কোনো কর্মকর্তা একাধিক পদ বাগিয়ে বসে আছেন। এতে অনেক মেধাবী কর্মকর্তা নিয়মিত পদোন্নতি পাচ্ছেন না। অপর দিকে, শূন্য পদে জনবল নিয়োগ না দিয়ে একজনকে দিয়েই করিয়ে নেওয়া হচ্ছে দুই থেকে পাঁচ ধরনের কাজ। এতে দুর্যোগের জরুরি মুহূর্তে কাজ করতে বেগ পেতে হয় তাদের। দেশের ৪৯৫ উপজেলার কার্যক্রম চালাতে একজন কর্মকর্তা ও একজন অফিস সহকারী রাখা হয়েছে। ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় নেই কোনো নিজস্ব যানবাহন।
 
১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত দুর্যোগপ্রবণ বাংলাদেশে দুর্যোগ মোকাবিলার একমাত্র সংস্থাটি জনবলের অভাবে চলছে খুঁড়ে খুঁড়ে। প্রস্তাবিত পদের তুলনায় ৯৫২ পদই খালি।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে দুর্যোগ ভয়াবহ, পদে পদে বৈষম্য

বিদ্যমান জনবল কাঠামোর শূন্য পদে নিয়োগ ও পদোন্নতি ও জনবল বৃদ্ধির দাবিতে বাংলাদেশ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার সমিতি একদফা কর্মবিরতি পালন করে। যৌক্তিক সে দাবি তোলার পর প্রায় দু'বছর কেটে গেলেও মন্ত্রণালয় হতে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেয়া হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বর্তমানেও বিভিন্ন বৈষম্য দূরীকরণ বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে আন্দোলন চলমান রয়েছে।
 
নিয়মিত পদন্নোতি চেয়ে অধিদফতরে গঠিত বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়ক ইসমাইল হোসেন বার্তা২৪ কমকে বলেন, 'দুর্যোগ অধিদফতরে নিয়মিত পদন্নোতি না দিয়ে গত সরকারের মন্ত্রী ও সচিবরা আমাদের বঞ্চিত করেছে। নতুন বাংলাদেশে এখনো সেই ধারাবাহিকতা চলছে। আমরা চাই দ্রুত অধিদফতরের নিয়ম অনুযায়ী দ্রুত পদোন্নতির ব্যবস্থা করতে হবে।' 
 
বন্যার কারণে কিছুদিন আন্দোলন বন্ধ রাখা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, 'মানবিক কারণে আমরা আন্দোলন স্থগিত করেছি। দাবি আদায়ে নতুন সরকার কোন ব্যবস্থা না নিলে শিগগিরই আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করবো।' 
 
এদিকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা-১৯৯৫ অনুযায়ী নিয়োগ ও পদোন্নতি দেওয়ার বিধান থাকলেও কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছেন না কর্তৃপক্ষ। প্রায় দেড় যুগ ধরে অনিয়মই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে এই অধিদফতরে। রক্ষকই যেনো ভক্ষকের ভূমিকা পালন করছে এখানে।

বিজ্ঞাপন

এর বাইরে রয়েছে বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের দৌরাত্ম। সূত্র জানায়, বিদ্যমান সাংগঠনিক কাঠামোতে আটটি পরিচালক পদের সাতটিতেই রয়েছেন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা। অথচ বিধি অনুসারে প্রেষণে (বিসিএস) চারজন ও বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে চারজন নিয়োগ দেওয়ার কথা। এই বৈষম্যের কারণে বিভাগে যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করে অভিজ্ঞতা নিয়ে উচ্চপদে আসীন হতে পারতেন তারা সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
 
কর্মকর্তাদের অভিযোগ, পরিকল্পিত ভাবে বিভাগীয় কর্মকর্তাদের বঞ্চিত করতে পদোন্নতি প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বিধিবহির্ভূত প্রেষণে পদায়িত কর্মকর্তাদের বেতন ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে। ফলে সরকারের পরিচালন খাতেও বাড়ছে বিপুল ব্যয়।
 
অভিযোগ রয়েছে, প্রেষণে পদায়িত করার মাধ্যমে সাবেক মন্ত্রী সচিবরা তাদের নিজেদের পছন্দের লোকদের বসিয়ে টিআর-কাবিখা, এইচবিবি রাস্তা, সেতু ও কার্লভার্ট নির্মাণ প্রকল্প থেকে গত ১৫ বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করেছে।

অধিদফতরে পরিচালক পদের মত উপ-পরিচালক পদেও রয়েছে বৈষম্য। ১৯টি উপপরিচালক পদে বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে ১৫টি এবং প্রেষণে ৪টি পূরণ করার বিধি রয়েছে। কিন্তু সে বিধির তোয়াক্কা না করে প্রেষণে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ৫ জন কর্মকর্তাকে। অপরদিকে বিভাগীয় পদোন্নতির মাধ্যমে যাদের সুযোগ পাওয়ার কথা ছিলো তাদের দিকে নজর নেই অধিদফতরের। মাত্র একজনকের উপ-পরিচালক পদে পদোন্নতি দিয়ে বাকি ১৩টি পদই খালি রাখা হয়েছে। যেমনটা চলছে বছরের পর বছর। এদিকে প্রেষণে পদায়িত কর্মকর্তারা প্রত্যেকেই একাধিক বিভাগের শীর্ষপদ দখল করে নিয়েছেন।

এমন অব্যবস্থাপনায় নিত্যকার দাপ্তরিক কাজের পর প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ পর্যবেক্ষণ হচ্ছে না বলেই চলে। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প মনিটরিংয়ের কাজে এদের কারিগরি দক্ষতাও নেই।
 
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন  কর্মকর্তা বার্তা২৪  কমকে বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরে গত ১৫ বছরে দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রীরা 'হরিলুট' চালিয়েছেন। ত্রাণের নামে স্বৈরাচার সরকারের ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তারা গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। পাশাপাশি প্রেষণে নিয়োগপ্রাপ্তরা একেক জন দু'থেকে তিন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ফলে বিভাগীয় ত্যাগীরা মূল্যায়ন পাননি।
 
সীমাহীন দুর্নীতিতে নিমজ্জিত ছিলো এই অধিদফতর। বিশেষ করে ত্রাণের টাকার দুর্নীতি ছিলো ভয়াবহ। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে কর্মকর্তারা হাতিয়ে নিয়েছে শত শত কোটি টাকা। যার প্রমাণ পাওয়া যায়, শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত ১৬ আগস্ট দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব মো. শাহ কামালের বাসা থেকে নগদ ৩ কোটির বেশি টাকা এবং ১০ লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা উদ্ধার।
 
ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাপ্রবণ দেশে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহায়তার টাকা যারা চুরি করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, এমনটাই মত সংশ্লিষ্টদের। অধিদফতরে জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি দুর্যোগপ্রবণ একটি দেশে কোনো উদ্দেশ্যে কাদের স্বার্থে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ অধিদফতরকে পঙ্গু করে রাখা হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে তারা।
 
অভিযোগ রয়েছে, বিপুল পরিমাণ টাকাসহ আটক সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল বিপুল পরিমাণ আর্থিক সুবিধা নিয়ে পদোন্নতির নিয়মকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে প্রথম শ্রেণীর দু'জন উপজেলা সরকারি প্রকৌশলীকে প্রকল্প সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে পদায়ন করেন। পরবর্তীতে এতে দু'টি নির্বাহী প্রকৌশলী ও দু'টি সহকারী প্রকৌশলী পদ থাকলেও শুধুমাত্র সহকারী প্রকৌশলী পদে একজনকে জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়। শূন্য অন্য একটি পদে পদোন্নতি না দিয়ে দেওয়ান নুরুল হুদাকে পদায়ন করে দীর্ঘ ৯ বছর পদটিকে আটকে রাখে কর্তৃপক্ষ।


ফলে ডিডিএম এর প্রকৌশল শাখা'য় বিধিসম্মত পদোন্নতি ও নিয়োগ না থাকায় প্রকৌশল শাখাটি কার্যত অচল হয়ে পড়ে। যথাসময়ে সহকারী প্রকৌশলী পদে পদোন্নতি না দেয়ায় নির্বাহী প্রকৌশলীর দু'টি শূন্য পদও পূরণ হয়নি। প্রকৌশল শাখায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ রেখে চলমান প্রকল্পসমুহের বিভিন্ন পদে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পছন্দের কর্মকর্তাদের পদায়ন করা হয়েছে।

একজন কর্মকর্তা দু'থেকে পাঁচটি পদে

অধিদফতরের সূত্রে জানা যায়, নিয়মিত পদোন্নতি না দিয়ে একেক কর্তকর্তাকে দু'থেকে পাঁচটি শাখায় দায়িত্ব দিয়ে রাখা হয়েছে। প্রশাসন শাখায় তাসনুভা নাশতারানকে প্রশাসন-২ এর উপপরিচালক পদে থাকলেও অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রশাসন-১ এর উপপরিচালক পদেও রাখা হয়েছে। মোহাম্মদ কামাল হোসেনকে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে অধিদফতরের পরিকল্পনা শাখা, প্রশমন শাখা, কাবিখা-৩ শাখার উপপরিচালক, ভিজিডিশাখা ১ ও ২ শাখার দায়িত্ব রাখা হয়েছে।
 
তাসনুভা ও কামাল হোসেনের মত ঝরনা বেগম কাবিখা-১ শাখার উপপরিচালক অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে কাবিখা-২ শাখার উপপরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন, জাহাঙ্গীর আলী খান ত্রাণ শাখা-১ এর উপপরিচালক পদের পাশাপাশি অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে ত্রাণ-২ শাখার দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। ফজলে ছিদ্দিক মো. ইয়াহিয়া ও তিনটি শাখার উপপরিচালক পদেও দায়িত্ব পালন করছেন। 
 
প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী পদে পদায়ন রয়েছে দেওয়ান নুরুল হুদা। এই নুরুল হুদা তিনকোটি টাকাসহ আটক সাবেক সচিব শাহ আলমের আস্থাবান হিসেবে পরিচিত। প্রকৌশল শাখার সহকারী প্রকৌশলী পদে পদায়নে থাকা দেওয়ান নুরুল হুদা একাধারে বন্যা-আশ্রয় কেন্দ্রের সহকারী প্রকৌশলী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী ও ডিডিএম কর্তৃক গৃহীত সকল প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। নুরুল হুদার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি প্রত্যক্ষ পরোক্ষ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অধিদফতরের প্রকৌশল শাখাকে অকার্যকর করে রেখেছেন।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় দেশের জনগুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্য একটি। এই মন্ত্রণালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতর এর মাধ্যমে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সরকার গৃহীত প্রায় ৭০% প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়। অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি, টিআর-কাবিখা) এইচবিবি রাস্তা, সেতু/কার্লভার্ট নির্মাণ, গৃহহীনদের জন্য গৃহ নির্মাণ কর্মসূচি, ঘুর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও মেরামত,  বন্যা আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অধিদফতরটি। ফলে কর্মকর্তাদের দাবি দ্রুত দেশের সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে অধিদপ্তের কাজে গতিশীল করতে আরো বেশি কার্যক্রর ব্যবস্থা করতে হবে সরকারকে।
 
আদালতের রায় কার্যকর করেনি অধিদফতর

এদিকে নিয়োগ বিধি মোতাবেক নিয়োগ ও পদোন্নতি না হওয়ায় পদোন্নতি বঞ্চিতরা আদালতের দ্বারস্থ হয়। তাদের মধ্যে মুজিব কিল্লা প্রকল্পের একজন সহকারী প্রকৌশলী  বার্তা২৪কমকে বলেন, অধিদফতর কর্তৃক প্রকাশিত জ্যৈষ্ঠ অনুসারে সহকারী পরিচালক পদে পদোন্নতি পাওয়ার কথা থাকলেও তাঁদের পদোন্নতি দেয়া হয়নি।  নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই কর্মকর্তা বলেন, তারা আদালতের প্রশাসনিক আপিলেট ট্রাইব্যুনাল থেকে রায় পেলেও কর্তৃপক্ষ এখনও রায় কার্যকর করছে না। যেখানে কর্তৃপক্ষ নিজ উদ্যোগে শূন্য পদগুলো পূরণ করার কথা সেখানে তাদের নীরবতা অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করছে।

দীর্ঘদিন পদোন্নতি না হওয়া দুর্যোগ অধিদফতরের অনিয়ম নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার বার্তা২৪ কমকে বলেন, সরকারি চাকরিতে কর্মকর্তাদের নিয়মিত পদোন্নতি না দেওয়া নিয়মিত অভিযোগ। পদোন্নতি পেতে হলে তদবীর দলীয় পছন্দের ব্যাক্তিরা এগিয়ে থাকে ফলে মেধাবীরা বঞ্চিত হয়, মত বদিউল আলমের।

এই বিশিষ্ট নাগরিকের মতে, নিয়মিত পদোন্নতি না হলে পদ্গুলোতে নতুন লোক আসছে না; নতুন লোক মানে নতুন আইডিয়া, নতুন কর্ম উদ্দীপনা বা ইনোভেশনের মতো জিনিসগুলো সৃষ্টি হয় না। আর পুরানোরা থাকলে কাজের গতি আনা বা নতুন কর্মপরিকল্পনা এবং উদ্দীপনা থাকে না।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন একই কর্মকর্তা এক জায়গায় থাকলে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ থাকেই। কারণ একজন কর্মকর্তা এক জায়গায় দীর্ঘদিন থাকলে, শেকড় গজিয়ে যায় এবং লোকজনের সাথে এমন সম্পর্ক হয়, যেই সম্পর্ক অপকর্ম করতে সহায়তা করে। নতুন সুযোগ না দিয়ে একজনকে একাধিক পদে কিভাবে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া সেটা আমার বোধগম্যনা।

এই বিষয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক রেজওয়ানুর হোসেন বার্তা২৪ কমকে বলেন, 'আমি দায়িত্বে নতুন এসেছি, বিষয়গুলো খোঁজ নিয়ে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নিবো।' 

অধিদফতরের কর্মকর্তা এবং কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা মানা হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'নিয়োগ বিধিমালা মানার বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। ইতিমধ্যে আমরা আমাদের অর্গ্যানোগ্রামটি সংশোধনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি।' 

নিয়মিত পদোন্নতি না দিয়ে এক ব্যাক্তি কয়েকটি পদে দায়িত্ব পালন নিয়ে এক প্রশ্নে তিনি বলেন, 'সবগুলো বিষয় আমরা খতিয়ে দেখছি।' এরপর 'আমি মিটিং এ যাচ্ছি' বলে ফোন কেটে দেন এই কর্মকর্তা।