জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি: তারেক রহমান

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি/ছবি: সংগৃহীত

দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি/ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জিনিস পত্রের দাম বাড়লেও মানুষের আয় বাড়েনি। অন্তবর্তীকালীন সরকারকে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কমাতে আরও বাস্তব ও কঠোর ভূমিকা নিতে আহব্বান জনিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর রমনা ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউটের হলরুমে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডশনের সুবর্ণ জয়ন্তীতে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, পলাতক স্বৈরাচার সরকারের দুঃসময়ে যারা জীবন বাজি রেখে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের কাজ চালিয়ে গেছেন আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই।

তারেক রহমান বলেন, বছরের পর বছর মাফিয়া সরকারের বাজার সিন্ডিকেটে ভেঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একটু কঠিন হলেও অসম্ভব নয়। প্রয়োজনে উপদেষ্টা পরিষদের আকার বাড়ানো যেতে পারে এই প্রয়োজনে। সরকারকে সতর্ক থাকার দরকার ফ্যাসিস্ট আদর্শকে লালন করা ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় বসিয়ে রেখে উদ্দেশ্য সফল করা সম্ভব না।

মানুষকে আধ পেটে রেখে কোন ভালো কথা শোনানো সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, যেকোন উপায়ে ঘরে বাইরে জনগণের দুর্ভোগ কমাতে না পারে তাহলে পলাতক স্বৈরাচারের দোসররা পরিস্থিতি সুযোগ গ্রহণ করবে।

তারেক রহমান বলেন, মাফিয়া সরকারের প্রধান গণহত্যা চালিয়ে দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর জনগণ তার ব্যক্তি ও বাক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে। মাফিয়া চক্রের দীর্ঘ শাসনকালে মানুষ বিভিন্নভাবে বৈষম্যর শিকার হয়েছে। জনগণ এখন সম্পূর্ণ ভাবে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত হতে চায়। বঞ্চিতরা তাদের হারানো অধিকার ফিরে পেতে চায়। মাফিয়া চক্রের হাত থেকে বাচতে হাজার হাজার ছাত্র জনতা প্রাণ হারিয়েছে।

মাফিয়া চক্র সরকারকে ব্যর্থ করতে চায় উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার সরকারের মাফিয়া চক্র দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য ঘরে বাইরে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠছে। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে। ষড়যন্ত্রের বিষ দাত শুরুতে উপড়ে পেলতে না পারলে তাদের বিষাক্ত দর্শনে হাজারো ছাত্র জনতার রক্ত আবারো বিপন্ন হবে।

তারেক রহমান বলেন, গণহত্যা চালিয়ে স্বৈরাচার সরকারের রেখে যাওয়া জঞ্জাল দূর করে রাষ্ট্রকে জনগণের প্রত্যাশিত গণতন্ত্রে ফেরাতে একটি সরকারের জন্য আড়াই মাস যথেষ্ট নয়। আবার এই সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করতে পারলে অনাকাঙ্ক্ষিত বাধার সম্মুখীন হতে পারে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের বক্তব্য সমন্বয়হীনতা নিয়ে তারেক রহমান বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের কিছু কিছু সমন্বহীনতা ফুটে ওঠতে শুরু করেছে। জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময় নিয়ে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বিভিন্ন বক্তব্য এসেছে। এমন একটি কাঙ্গিত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সম্পর্কে সরকারের বক্তব্যর গড়মিল জনগণের মনে নানা ধরনের সন্দেহ সৃষ্টি করে।

সংস্কার নিয়ে তারেক রহমান বলেন, জনগণ এই সরকারকে দায়িত্বশীল ও জনমুখী কাজে দেখতে চাই। কারণ অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জনগণের সরাসরি ভোটে একটি জনপ্রতিধিত্ব সরকারের কোন বিকল্প নেই। এই লক্ষ্য বর্তমান সরকারকে জনগণ নিস্বার্থে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। জনগণের নিস্বার্থের সমর্থনের সম্মান দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। রাষ্ট্র ও রাজনীতি সঠিক ভিত্তির উপর দাড় করাতে অন্তববর্তীকালীন সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আমিও সংস্কারে বিশ্বাসী।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্য আব্দুল মঈন খান বলেন, যারা যুদ্ধ থেকে পালিয়ে যায় তারা বীর উত্তম পায়না। যারে যুদ্ধের সম্মুখ সারিতে থেকে যুদ্ধ করে বীর উত্তম উপাধি পায়। জিয়াউর রহমান নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে নাই, তিনি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও কোকো রহমানের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছেন।

আব্দুল মঈন খান বলেন, আজকের বাংলাদেশকে বুজতে হলে জিয়াউর রহমানের আদর্শ ও দর্শন বুজতে হবে। জিয়াউর সেইদিন খাল খনন করেছেন বলেই আজকে আমরা বৃহৎ আকারে বন্যা থেকে মুক্তি পেয়েছি। শহীদ প্রেসিডেন্ট বলেছেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। এটি হচ্ছে একটি মালার মত। বড় ফুল হচ্ছে বাঙ্গালী। আরো ফুল রয়েছে চাকমা, বারমা, খাসিয়াসহ সকল উপজাতি ও বাঙ্গালী মিলে জাতীয়তাবাদ।

মঈন খান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট ১৯৭৮ সালে রাষ্ট্রের দায়িত্ব নেয় আমরা দেখেছি তিনি কিভাবে মানুষের কল্যানে কাজ করেছেন। তিনি বলেছেন বাংলাদেশের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। অনেকে বলেন তিনি সৈনিক ছিলেন। কিন্তু তিনি সৈনিক হয়েও কখনো বলে নাই সকল ক্ষমতা বন্ধুকের নলের গোড়ায়। কিন্তু শেখ হাসিনা বলেছেন সকল ক্ষমতা বন্ধুকের নলের গোড়া।

তিনি আরও বলেন, জিয়াউর রহমান বলেছেন ব্যাক্তির চেয়েও দল বড় দলের চেয়েও রাষ্ট্র বড়। পৃথিবীর অনেক দেশের সংবিধান দেখেছি কোথাও এই শব্দ নেই। জিয়াউর রহমান এমন এক ব্যক্তি ছিলেন যারা তার সঙ্গে মতবিরোধ করতেন তাকে আরো বেশি কাছে টেনে নিতেন। রাজনীতি হচ্ছে ঐক্যর রাজনীতি। জিয়াউর রাষ্টের দায়িত্ব নেওয়ার বড় বিশ্ব দরবারের বাংলাদেশ তখন আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন।

মঈন খান বলেন, উন্নয়নের রাজনীতি বলে একটি দল লুট করেছেন। কিন্তু শহীদ প্রেসিডেন্ট বলেছেন দেশ হবে উৎপাদনমুখী। কারণ উৎপাদন ছাড়া কোন দেশ এগিয়ে যেতে পারেনা।

মঈন খান বলেন, আমি জানিনা বিশ্ব নেতার কোন মৃত্যতে লক্ষ লক্ষ মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে। কিন্তু আমরা দেখেছি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুতে লাখ লাখ মানুষ কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছে।

জোবাইদা রহমান বলেন, বিগত ২৫ বছরে এই ফাউন্ডেশন গড়ে ওঠেছে। মানুষের জন্য এই ফাউন্ডেশন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন কখনো করোনায় অক্সিজেন সিলেন্ডার, কখনো বন্যায় মানুষের পাশে দাড়াই। আমি আশা করছি আগামীতে যেকোন দূর্যোগে এই ফাউন্ডেশন কাজ করবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান। স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়েদা রহমান।