বাড়ছে মৌসুমি রোগের প্রভাব, বেশি আক্রান্ত শিশুরা
শীত কড়া নাড়ছে দরজায়। পড়তে শুরু করেছে শীতের আমেজ। তবে শীতের শুষ্ক আবহাওয়া, ধুলাবালির প্রভাব আর গরম থেকে শীতের মাঝামাঝি সময়ে ঠাণ্ডাজনিত অসুখ বেড়ে যায়। বেড়ে যায় ভাইরাসজনিত রোগ। এসব রোগ প্রাপ্তবয়স্কদের পাশাপাশি বেশি প্রভাব ফেলে শিশু ও বয়স্কদের।
শীতের শুরুতেই শিশুদের জ্বর, সর্দি ও কাশি যেন লেগেই থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব রোগের প্রধান কারণ হচ্ছে ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকায় সহজেই আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
সরেজমিনে শিশু হাসপাতালসহ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগ ঘুরে দেখা যায়, ঠাণ্ডাজনিত রোগ, ডাইরিয়াসহ ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩১৪ নং শিশু বিভাগে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শিশুরা বেশিরভাগ নিউমোনিয়াসহ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। চিকিৎসকরা আসন্ন শীতে রোগ প্রতিরোধে সাবধানতা অবলম্বন সাথে সুষম, আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়ার পাশাপাশি ধুলাবালি থেকে মুক্ত এবং এলার্জিজনিত খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন।
সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আখলাক আহমদ শীতকালীন রোগের প্রভাব ও সচেতনতায় পরামর্শ দিয়েছেন বার্তা২৪.কমকে। তিনি বলেন, শীতে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বিশেষ করে সর্দি কাশি জ্বর ডায়রিয়াসহ ভাইরাল ইনফেকশনগুলো বেড়ে যায়, বিশেষ করে ছোট থেকে যাদের এজমা বা হাঁপানি, বা শ্বাসকষ্ট আছে, ঠাণ্ডার প্রকোপে এই রোগগুলো বেড়ে যায়। সিজন চেঞ্জের সঙ্গে বডি এডাপ্টেশন ক্ষমতা অনেকটা কমে যায়। যা বিশেষ করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি হয়। বড়দের ক্ষেত্রে এ রোগগুলো দেখা গেলেও শিশু ও বৃদ্ধের ক্ষেত্রে প্রভাব বেশি।
যারা এজমা বা হাঁপানি রোগী তাদের চেষ্টা করতে হবে ঠাণ্ডার প্রকোপ এড়িয়ে চলতে, সাথে এলার্জিজনিত যে খাবার তা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি। কারণ হাঁপানি রোগ মূলত এলার্জিজনিত কারণে হয়। বেগুন, ইলিশ মাছ, হাঁসের ডিম; এ খাবারগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি। হাঁপানি রোগীর ক্ষেত্রে, সাথে সাথে গরম কাপড় পরিধান করে নাক ও মুখ ঢেকে ঠাণ্ডা প্রতিরোধ করার কথা বলেন। শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধে ধুলাবালি থেকে দূরে থাকার কথাও বলেন এ বিশেষজ্ঞ।
এছাড়া তিনি রোগ প্রতিরোধে সরকারি বেসরকারি পর্যায়ে পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখার পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে ও উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেন। সুষম, সাথে আমিষ জাতীয় খাবার বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেন, যেন দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে ফাস্টফুড, জাঙ্কফুড জাতীয় খাবার পরিহার করে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দেন তিনি।