অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর উদ্বেগ
অন্তর্বর্তী সরকার তিন দফায় ১৬৭ জন সাংবাদিকের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা। এ তালিকায় অনেক পেশাদার ও সক্রিয় সাংবাদিক এবং সম্পাদকের নামও রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই খবর জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম ‘ইন্ডিপেন্ডেন্ট’।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস অন্তর্বর্তী সরকারের এই পদক্ষেপের জন্য এক বিবৃতিতে বলেছে, সাংবাদিকদের অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করা ‘সেলফ সেন্সরশিপকে’ উৎসাহিত করে।
তারা আরাও জানিয়েছে, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক বিভিন্ন মামলা পর্যবেক্ষণের জন্য একটি কমিটি গঠন করা হলেও সেই কমিটি গঠনের এক সপ্তাহের মধ্যে অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করার কারণ তাদের কাছে বোধগম্য নয়।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারনেশনাল বাংলাদেশে (টিআইবি) বিবৃতি উল্লেখ করে বলা হয়েছে, সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে হুমকি ও হামলার বিভিন্ন ঘটনাসহ এই অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিল করার পদেক্ষপ একটি গণবিরোধী কর্তৃত্ববাদী শাসনকে নির্দেশ করে।
এছাড়া বাংলাদেশের সম্পাদক পরিষদের বিবৃতি উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্পাদক পরিষদ মনে করে, অ্যাক্রেডিটেশন কার্ডের কোনো অপব্যবহার হলে তা রিভিউ করার অধিকার তথ্য মন্ত্রণালয় রাখে। তবে এভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও অপরাধের প্রমাণ ছাড়াই ঢালাওভাবে প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড বাতিলের পদক্ষেপ সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য হুমকি ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিতের অন্তরায়।
এর মধ্য দিয়ে গণমাধ্যমে সেন্সরশিপসহ নিয়ন্ত্রণবাদী পরিবেশ তৈরির ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে, যা জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মূল চেতনারও পরিপন্থি। বিষয়টিকে বিগত অতি নিয়ন্ত্রণবাদী কাঠামোর অগণতান্ত্রিক চর্চারই পুনরাবৃত্তি হিসাবে দেখছে সম্পাদক পরিষদ।
উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের তোপে ৫ আগস্ট দেশ ছেড়ে পালিয়েছে শেখ হাসিনা। একই সাথে ভেঙে গেছে দীর্ঘদিনের আওয়ামী শাসন। এরপর ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
দায়িত্ব নেওয়ার পরই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও মুক্ত সংবাদপত্র সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেছিলেন প্রধান উপদেষ্টা। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আপনারা যেমন খুশি লিখুন, সমালোচনা করুন। আপনারা না লিখলে আমরা কী করে বুঝব যে, কী হচ্ছে আর কী হচ্ছে না?